গোপালগঞ্জে কারফিউ বাড়ল

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৯ জুলাই ২০২৫, ২১: ১৮

গোপালগঞ্জে কারফিউর সময় বাড়িয়ে শনিবার রাত ৮টা থেকে রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত জারি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে শনিবার বিকাল পৌনে ৫টায় পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গোপালগঞ্জের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান কারফিউ জারির ঘোষণা দেন।

বিজ্ঞাপন

শনিবার সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকলেও শহরের মানুষের চলাচল ছিল কম।

গত বুধবার ১৬ জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে এনসিপির সমাবেশ ঘিরে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কর্মীদের হামলা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গোপালগঞ্জ।

টানা ৫ ঘণ্টার ওই সংঘাতে নিহত হয় চারজন। পরে আহতদের মধ্যে একজন বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে ২টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।

সংঘাতের সময় পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আটকা পড়া এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা সেদিন সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানে করে গোপালগঞ্জ ত্যাগ করেন।

এ সহিংসতার প্রেক্ষাপটে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করেন। পরে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করে। সেই সময় শেষে কারফিউ না তুলে তা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত জানায় সরকার।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টার বিরতি দিয়ে কারফিউ চলমান রাখার সিদ্ধান্ত হয়।

এরপর শুক্রবার বিকালে কারফিউয়ের মেয়াদ শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বাড়ানোর কথা এবং সর্বশেষ রাত ১১টার দিকে শনিবার সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকার কথা জানায় গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন।

কারফিউ শিথিল থাকলেও লোকজনের উপস্থিতি কম দেখা যায়। গোপালগঞ্জে শনিবার সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১৪ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল থাকলেও শহরে লোকজনের উপস্থিতি কম। যানবাহন চলাচলও তেমন নেই। কিছু দোকানপাট খোলা থাকলেও বেচাকেনার অবস্থা ভালো নয়।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার এখানকার মার্কেট-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর সাপ্তাহিক ছুটির দিন। এ কারণে স্বাভাবিক সময়েও এদিন শহরে লোকজনের উপস্থিতি কম থাকে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বুধবারের (১৬ জুলাই) হামলা-সংঘর্ষের পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কারফিউ জারি করা হয়। এলাকায় গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছে।

ইজিবাইক চালক উজ্জ্বল হোসেন বলেন, রাস্তায় নামছি, কিন্তু যাত্রী নেই। এমনিতেই শনিবার লোক কম থাকে, কারণ এদিন অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ থাকে। অনেক গ্রাম থেকে তেমন কোনো লোকজন শহরে আসে না।

ব্যবসায়ী কাজী জিহাদ হোসেন বলেন, আমরা রাজনীতি করি না, ব্যবসা-বাণিজ্য করি। তিন দিন পর আজ আড়ত খানা খুলেছি। আড়তের আলু, পিয়াঁজ, মরিচ, রসুন হলুদসহ বিভিন্ন মালামাল বিক্রি করি। তিনদিন পর আজ সকালে কিছু মালামাল বিক্রি করেছি। তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় খুবই কম বেচাকেনা হয়েছে।

বুধবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-সংঘর্ষের পর রাত ৮টা থেকে গোপালগঞ্জে চলছে কারফিউ।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানায়, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ওই হামলা চালায়। এতে সেদিন গুলিবিদ্ধ হয়ে চারজনের মৃত্যু হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে রমজান মুন্সি নামে আরেকজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়। চলমান কারফিউ আজ সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত শিথিল করা হয়েছে।

পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে কারফিউ জারি রাখা বা না রাখার বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। এদিকে কারফিউ শিথিল থাকলেও শহরে টহল দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

শহরের বড় বাজারের চাউল ব্যবসায়ী পঙ্কজ সাহা (৫৬) বলেন, “তিন দিন পর দোকান খুলেছি। সকালের দিকে কিছু কেনা-বেচা হয়েছে। দুপুরের আগেই বাজার ফাঁকা হয়ে গেছে।

একই বাজারের সবজি ব্যবসায়ী আব্দুল আলিম (৪৬) বলেন, সকালের দিকে বাজারে অনেকের আনাগোনা ছিল। দুপুর হওয়ার পর বাজার থেকে লোকজন কমতে শুরু করে। তারপর বাজার ফাঁকা হয়ে যায়। স্বল্প সময়ের মধ্যে সব শাক-সবজি বিক্রি করেছি। পুনরায় কারফিউ বাড়ানোর কথা শুনে ক্রেতারা রাত আটটার মধ্যেই সকলে চলে যায়।

কক্সবাজার থেকে ইয়াবা এনে ঢাকায় বিক্রি, ৩ নারী গ্রেপ্তার

সাব-জেলে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তারা, সরকারের কাছে যে আহ্বান জানালেন ব্যারিস্টার আরমান

অসদাচারণের দায়ে টঙ্গী পাইলট স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে শোকজ

জরুরি অবস্থা জারি করলেন পেরুর প্রেসিডেন্ট

গুম-খুনে জড়িত ১৫ সেনা কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত। ট্রাইব্যুনালে হাজির। সাবজেলে প্রেরণ

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত