ফরিদপুরের মধুখালীতে ১২ বছর ধরে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছে কিশোর অভিজিৎ মণ্ডল (১৬)। প্রতিবন্ধী অভিজিৎ ছাড়া পেলেই নিজের শরীর নিজেই কামড়িয়ে ক্ষতবিক্ষত করে ফেলে এবং সবকিছু ভেঙে তছনছ করে। এ জন্য তাকে ১২ বছর ধরে হাত-পা বেঁধে রাখা হয়েছে। অভিজিৎ উপজেলার কামারখালী ইউনিয়নের গন্ধখালি গ্রামের সত্যজিৎ মণ্ডলের ছেলে। অভিজিতের ছোট ভাই ১১ বছর বয়সের সন্দিপ মণ্ডলও অটিজমে আক্রান্ত।
তারা কামারখালি ডাকবাংলোর পাশেই ভাড়া থাকে। জানা যায়, স্বাভাবিকভাবেই জন্ম নেয় অভিজিৎ মণ্ডল। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রকাশ পায় অটিজম। চার বছর বয়স থেকেই সে নিজের শরীর কামড়িয়ে ক্ষতবিক্ষত করে ফেলে। তাছাড়া বাড়ির সবকিছু ভেঙে নষ্ট করে ফেলে। এরপরই তাকে হাত-পা বেঁধে বিছানায় রাখা হয়। এভাবেই চলছে ১২ বছর। বর্তমানে তার বয়স ১৬ বছর। তবে সে কিছুটা স্বাভাবিক। দুজনেরই চিকিৎসা চলছে। অভিজিতের বড় বোন সম্মান তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। সে স্বাভাবিক। অভিজিৎ ও সন্দিপের কাঠমিস্ত্রী বাবা সত্যজিৎ মণ্ডল জানান, প্রতিবন্ধী দুই ছেলে ও অনার্স পড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে তাদের সংসার।
অর্থের অভাবে অভিজিৎ ও সন্দীপ মণ্ডলের চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে না। সেই সঙ্গে বড় মেয়ের লেখাপড়ার খরচ ও সংসারের খরচ জোগাতে খুব কষ্ট হয়। প্রতিবন্ধী কিছু ভাতা পেলেও তা দিয়ে তেমন কিছুই হয় না। ডাক্তার বলেছে চিকিৎসা করালে অভিজিৎ ও সন্দিপ ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তার জন্য অনেক টাকা দরকার।
বিষয়টি নিয়ে মধুখালী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কল্লোল সাহা বলেন, সমাজসেবা অফিসের পক্ষ থেকে ভাতা করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ইতোপূর্বে হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করেছি, বাচ্চা দুটির অস্বাভাবিক আচরণের কারণে তারা হুইল চেয়ার ব্যবহার করতে পারে না। তাদেরকে হাত-পা বেঁধে রাখা হয়। তিনি বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে ঐপরিবারের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। মধুখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রওশনা জাহান বলেছেন, আমি সবেমাত্র যোগদান করেছি, বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে সহযোগিতা করা হবে।

