শরীয়তপুরের তিন আসন
মো. আল-আমিন, শরীয়তপুর
পদ্মা-মেঘনার মোহনায় নতুন উদ্যমে বইছে শরীয়তপুরের রাজনীতির হাওয়া। যুগের পর যুগ এখানে রাজত্ব করেছে আওয়ামী লীগ। দলটির দুর্গ হিসেবে পরিচিত এই জেলার মাটি। তাদের দাপটের কারণে এখানে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী অন্য কোনো দল নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারেনি।
১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারির ভোটে একটি আসনে ধানের শীষ প্রতীকের জয় দেখেছিলেন জাতীয়তাবাদীরা। এরপর আর রাজপথেই দাঁড়াতে পারেননি অন্য মতাদর্শের রাজনীতিবিদরা।
সবচেয়ে বেশি মামলা-হামলা, অত্যাচার ও নিপীড়নের শিকার হয়েছে জামায়াত। ফ্যাসিবাদের দেড় দশকেও এই দলের নেতাকর্মীরা সংগঠিত হতে পারেননি, প্রকাশ্যে পালন হয়নি কোনো কর্মসূচি। জুলাই বিপ্লবের পর আমূল বদলে গেছে সেই চিত্র। এখন অবাধ রাজনৈতিক পরিবেশ ফিরে পাওয়ায় মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন জামায়াত নেতাকর্মীসহ অন্য ইসলামপন্থিরাও।
আওয়ামী জমানায় পরিচয় দিতে না পারলেও দলটির পরোক্ষ তৎপরতা কম ছিল না। এ সময়ে জনশক্তি বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। ইতোমধ্যে দলটি সবার আগে সব আসনে প্রার্থীও ঘোষণা করেছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে আয়োজন করা হচ্ছে বড় মিছিল-সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি।
শরীয়তপুরে ছয় উপজেলা নিয়ে তিনটি সংসদীয় আসন গঠিত। এসব আসনে এখন বিরাজ করছে ভোটের আমেজ। সবচেয়ে বেশি সরব জুলাই বিপ্লবের পর রাজনীতির মাঠে একক আধিপত্য পাওয়া বিএনপি নেতাকর্মীরা। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে কমিটি না থাকা, গ্রুপিং ও দখল-চাঁদাবাজি নিয়ে নেতাকর্মীদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল দলটির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে। সব আসনেই একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী ব্যাপক সক্রিয়, তাদের শক্ত অবস্থান তৃণমূলে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে।
শরীয়তপুর-১ (সদর ও জাজিরা)
১৯৮৪ সালে আসনটি সৃষ্টির পর থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী দুবার এবং একবার জাতীয় পার্টি ছাড়া আওয়ামী লীগ প্রায় সব নির্বাচনেই জয়ী হয়েছে। বিএনপি দলীয় প্রতীকে কখনো বিজয়ী হতে পারেনি। কিন্তু এবারের নির্বাচনি প্রেক্ষাপট একেবারেই আলাদা। জুলাই বিপ্লবের পর আওয়ামী লীগের সব বড় নেতা পলাতক থাকায় সরব উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে বিএনপি ও জামায়াত নেতাকর্মীদের মধ্যে। প্রতিদিন মিছিল, গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণসহ নানা কর্মসূচিতে মুখর থাকছে পুরো এলাকা।
ধানের শীষের টিকিট চাইছেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি সরদার নাসির উদ্দিন কালু। তিনি দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা, তৃণমূলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং সাহসী নেতৃত্বের জন্য বেশ পরিচিত। তার পাশাপাশি প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে আছেন জেলা বিএনপির সাবেক অর্থ সম্পাদক মজিবুর রহমান।
ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি এবং ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের শিক্ষা ও গবেষণাবিষয়ক সদস্য ড. মোশারফ হোসেন মাসুদকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াত। তিনি একসময়ের ছাত্ররাজনীতির অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নীরবে কার্যকর প্রচার চালাচ্ছেন।
জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির কেএম মকবুল হোসাইন বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর আমরা স্বাধীনভাবে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালানোর সুযোগ পেয়েছি। ভোটারদের কাছে যাচ্ছি, চাওয়া-পাওয়ার বিষয়ে জানছি। তারা অধির আগ্রহে আমাদের প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষায় আছেন। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জামায়াতের দাঁড়িপাল্লার বিজয় নিশ্চিত।’
শরীয়তপুর-২ (নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জ)
১৯৯৬ সালের পর থেকে বিএনপি এখানে জয় পায়নি। তবে এবারের পরিস্থিতি তাদের জন্য অনেক অনুকূল; কারণ আওয়ামী লীগ প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেই। ফলে স্থানীয় নেতাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। তবে বিএনপির শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হবেন জামায়াত প্রার্থী। বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে আছেন জেলা বিএনপি সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান কিরন, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এসএম ফয়সাল ও বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য মহিউদ্দিন ঝিন্টু।
শফিকুর রহমান বলেন, ‘১৭ বছর ধরে আমরা নানা দমন-নিপীড়ন সহ্য করেছি; তবুও সংগঠন ধরে রেখেছি। এবার জনগণ আমাদের সুযোগ দেবে এটাই আমাদের বিশ্বাস।’
জামায়াত এখানে জাতীয় ডক্টরস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ডা. মাহমুদ হোসেন বকাউলকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। চিকিৎসা পেশায় তার পরিচিতি এবং জনসেবার অভিজ্ঞতা ভোটের মাঠে বাড়তি সুবিধা দিচ্ছে বলে নেতাকর্মীরা দাবি করছেন।
শরীয়তপুর-৩ (গোসাইরহাট ও ডামুড্যা)
গত সাত জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগই এখানে জয়ী হয়েছে। এবার পরিস্থিতি বদলে গেছে, বিএনপি ও জামায়াত উভয়ই সমানতালে সক্রিয়। বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এপিএস মিয়া নুরুদ্দিন অপু এবং জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ আহমেদ আসলাম।
জামায়াত এ আসনে দলটির সহযোগী সংগঠন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কোষাধ্যক্ষ আজহারুল ইসলামকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। তিনি শ্রমিক অধিকার ও ন্যায্য মজুরি ইস্যুতে প্রচার চালাচ্ছেন বলে নেতাকর্মীরা জানান।
তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গত জুলাইয়ে জেলা কমিটি ঘোষণা করলেও এখনো তেমন নির্বাচনি তৎপরতা নেই। অন্য ছোট দলও কার্যত নিষ্ক্রিয়।
জেলা এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়কারী সবুজ তালুকদার বলেন, ‘দল থেকে এখনো কাউকে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। কেন্দ্র থেকে যাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, তার পক্ষে সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করবেন নেতাকর্মীরা। ইতোমধ্যে মাঠ গোছানোর কাজ শুরু হয়েছে। আমরা ঐক্যবদ্ধ, সংগঠিত এবং বিজয়ের জন্য প্রস্তুত।’
মুদি দোকানি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এতদিন আমরা শুধু আশার বাণী শুনেছি; কিন্তু বাস্তবে কিছুই দেখিনি। শরীয়পুরকে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি বলা হলেও তাদের কাছেও বঞ্চিত এলাকাবাসী। জেলার প্রধান সড়কসহ বড় কোনো উন্নয়নমূলক কার্যক্রম হয়নি দেড় দশকে। এমনকি পদ্মা সেতু আমাদের জেলায় হলেও এর সুফল পাচ্ছি না। জুলাই বিপ্লবে সুদিন ফিরবে বলে সবাই স্বপ্ন দেখেছিলাম, কিন্তু উল্টো এলাকায় চাঁদাবাজি, দুর্নীতি আর বালুখেকোদের দাপট বেড়েছে। তাই এবার আমরা প্রার্থী চাই, যিনি সত্যি সত্যি উন্নয়ন করবেন। রাস্তা, শিক্ষা, চিকিৎসা, কর্মসংস্থান নিয়ে কাজ করবেন। চাঁদাবাজ-দুর্নীতিবাজদের প্রশ্রয় দেবেন না।’
চাকরিজীবী আসিফ মির বলেন,‘আমি সাধারণ মানুষ। কাজ করি, ভাত খাই, রাজনীতির মারপ্যাঁচ বুঝি না। কিন্তু এবার আমরা চাই, শরীয়তপুরে ভালো মানুষ নির্বাচিত হোক। যিনি এলাকার উন্নয়ন করবেন, মানুষের পাশে থাকবেন। একইসঙ্গে নড়িয়ায় পদ্মার বালুখেকোদের যিনি রুখবেন। এই বালু লুটকারীরা যেন প্রার্থী হতে না পারেন, সে বিষয়ে সব দলকে খেয়াল রাখতে হবে। তাদের কারণে পদ্মার ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার পরিবার।’
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট রাশিদুল হাসান মাছুম বলেন, ‘আমরা সব সময় চাই সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক। কিন্তু শুধু নির্বাচন কমিশন দিয়ে সুষ্ঠু ভোট সম্ভব নয়, এখানে পুলিশ প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভোটারদের নিরাপদে ভোটকেন্দ্রে যাওয়া নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু এখন যে পরিস্থিতি, পুলিশ ও প্রশাসনের দলীয়করণ, সারা দেশে খুন, চাঁদাবাজি ও অত্যাচারের মাত্রা দেখে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা কঠিন।’
পদ্মা-মেঘনার মোহনায় নতুন উদ্যমে বইছে শরীয়তপুরের রাজনীতির হাওয়া। যুগের পর যুগ এখানে রাজত্ব করেছে আওয়ামী লীগ। দলটির দুর্গ হিসেবে পরিচিত এই জেলার মাটি। তাদের দাপটের কারণে এখানে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী অন্য কোনো দল নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারেনি।
১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারির ভোটে একটি আসনে ধানের শীষ প্রতীকের জয় দেখেছিলেন জাতীয়তাবাদীরা। এরপর আর রাজপথেই দাঁড়াতে পারেননি অন্য মতাদর্শের রাজনীতিবিদরা।
সবচেয়ে বেশি মামলা-হামলা, অত্যাচার ও নিপীড়নের শিকার হয়েছে জামায়াত। ফ্যাসিবাদের দেড় দশকেও এই দলের নেতাকর্মীরা সংগঠিত হতে পারেননি, প্রকাশ্যে পালন হয়নি কোনো কর্মসূচি। জুলাই বিপ্লবের পর আমূল বদলে গেছে সেই চিত্র। এখন অবাধ রাজনৈতিক পরিবেশ ফিরে পাওয়ায় মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন জামায়াত নেতাকর্মীসহ অন্য ইসলামপন্থিরাও।
আওয়ামী জমানায় পরিচয় দিতে না পারলেও দলটির পরোক্ষ তৎপরতা কম ছিল না। এ সময়ে জনশক্তি বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। ইতোমধ্যে দলটি সবার আগে সব আসনে প্রার্থীও ঘোষণা করেছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে আয়োজন করা হচ্ছে বড় মিছিল-সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি।
শরীয়তপুরে ছয় উপজেলা নিয়ে তিনটি সংসদীয় আসন গঠিত। এসব আসনে এখন বিরাজ করছে ভোটের আমেজ। সবচেয়ে বেশি সরব জুলাই বিপ্লবের পর রাজনীতির মাঠে একক আধিপত্য পাওয়া বিএনপি নেতাকর্মীরা। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে কমিটি না থাকা, গ্রুপিং ও দখল-চাঁদাবাজি নিয়ে নেতাকর্মীদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল দলটির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে। সব আসনেই একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী ব্যাপক সক্রিয়, তাদের শক্ত অবস্থান তৃণমূলে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে।
শরীয়তপুর-১ (সদর ও জাজিরা)
১৯৮৪ সালে আসনটি সৃষ্টির পর থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী দুবার এবং একবার জাতীয় পার্টি ছাড়া আওয়ামী লীগ প্রায় সব নির্বাচনেই জয়ী হয়েছে। বিএনপি দলীয় প্রতীকে কখনো বিজয়ী হতে পারেনি। কিন্তু এবারের নির্বাচনি প্রেক্ষাপট একেবারেই আলাদা। জুলাই বিপ্লবের পর আওয়ামী লীগের সব বড় নেতা পলাতক থাকায় সরব উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে বিএনপি ও জামায়াত নেতাকর্মীদের মধ্যে। প্রতিদিন মিছিল, গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণসহ নানা কর্মসূচিতে মুখর থাকছে পুরো এলাকা।
ধানের শীষের টিকিট চাইছেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি সরদার নাসির উদ্দিন কালু। তিনি দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা, তৃণমূলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং সাহসী নেতৃত্বের জন্য বেশ পরিচিত। তার পাশাপাশি প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে আছেন জেলা বিএনপির সাবেক অর্থ সম্পাদক মজিবুর রহমান।
ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি এবং ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের শিক্ষা ও গবেষণাবিষয়ক সদস্য ড. মোশারফ হোসেন মাসুদকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াত। তিনি একসময়ের ছাত্ররাজনীতির অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নীরবে কার্যকর প্রচার চালাচ্ছেন।
জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির কেএম মকবুল হোসাইন বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর আমরা স্বাধীনভাবে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালানোর সুযোগ পেয়েছি। ভোটারদের কাছে যাচ্ছি, চাওয়া-পাওয়ার বিষয়ে জানছি। তারা অধির আগ্রহে আমাদের প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষায় আছেন। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জামায়াতের দাঁড়িপাল্লার বিজয় নিশ্চিত।’
শরীয়তপুর-২ (নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জ)
১৯৯৬ সালের পর থেকে বিএনপি এখানে জয় পায়নি। তবে এবারের পরিস্থিতি তাদের জন্য অনেক অনুকূল; কারণ আওয়ামী লীগ প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেই। ফলে স্থানীয় নেতাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। তবে বিএনপির শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হবেন জামায়াত প্রার্থী। বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে আছেন জেলা বিএনপি সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান কিরন, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এসএম ফয়সাল ও বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য মহিউদ্দিন ঝিন্টু।
শফিকুর রহমান বলেন, ‘১৭ বছর ধরে আমরা নানা দমন-নিপীড়ন সহ্য করেছি; তবুও সংগঠন ধরে রেখেছি। এবার জনগণ আমাদের সুযোগ দেবে এটাই আমাদের বিশ্বাস।’
জামায়াত এখানে জাতীয় ডক্টরস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ডা. মাহমুদ হোসেন বকাউলকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। চিকিৎসা পেশায় তার পরিচিতি এবং জনসেবার অভিজ্ঞতা ভোটের মাঠে বাড়তি সুবিধা দিচ্ছে বলে নেতাকর্মীরা দাবি করছেন।
শরীয়তপুর-৩ (গোসাইরহাট ও ডামুড্যা)
গত সাত জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগই এখানে জয়ী হয়েছে। এবার পরিস্থিতি বদলে গেছে, বিএনপি ও জামায়াত উভয়ই সমানতালে সক্রিয়। বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এপিএস মিয়া নুরুদ্দিন অপু এবং জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ আহমেদ আসলাম।
জামায়াত এ আসনে দলটির সহযোগী সংগঠন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কোষাধ্যক্ষ আজহারুল ইসলামকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। তিনি শ্রমিক অধিকার ও ন্যায্য মজুরি ইস্যুতে প্রচার চালাচ্ছেন বলে নেতাকর্মীরা জানান।
তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গত জুলাইয়ে জেলা কমিটি ঘোষণা করলেও এখনো তেমন নির্বাচনি তৎপরতা নেই। অন্য ছোট দলও কার্যত নিষ্ক্রিয়।
জেলা এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়কারী সবুজ তালুকদার বলেন, ‘দল থেকে এখনো কাউকে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। কেন্দ্র থেকে যাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, তার পক্ষে সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করবেন নেতাকর্মীরা। ইতোমধ্যে মাঠ গোছানোর কাজ শুরু হয়েছে। আমরা ঐক্যবদ্ধ, সংগঠিত এবং বিজয়ের জন্য প্রস্তুত।’
মুদি দোকানি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এতদিন আমরা শুধু আশার বাণী শুনেছি; কিন্তু বাস্তবে কিছুই দেখিনি। শরীয়পুরকে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি বলা হলেও তাদের কাছেও বঞ্চিত এলাকাবাসী। জেলার প্রধান সড়কসহ বড় কোনো উন্নয়নমূলক কার্যক্রম হয়নি দেড় দশকে। এমনকি পদ্মা সেতু আমাদের জেলায় হলেও এর সুফল পাচ্ছি না। জুলাই বিপ্লবে সুদিন ফিরবে বলে সবাই স্বপ্ন দেখেছিলাম, কিন্তু উল্টো এলাকায় চাঁদাবাজি, দুর্নীতি আর বালুখেকোদের দাপট বেড়েছে। তাই এবার আমরা প্রার্থী চাই, যিনি সত্যি সত্যি উন্নয়ন করবেন। রাস্তা, শিক্ষা, চিকিৎসা, কর্মসংস্থান নিয়ে কাজ করবেন। চাঁদাবাজ-দুর্নীতিবাজদের প্রশ্রয় দেবেন না।’
চাকরিজীবী আসিফ মির বলেন,‘আমি সাধারণ মানুষ। কাজ করি, ভাত খাই, রাজনীতির মারপ্যাঁচ বুঝি না। কিন্তু এবার আমরা চাই, শরীয়তপুরে ভালো মানুষ নির্বাচিত হোক। যিনি এলাকার উন্নয়ন করবেন, মানুষের পাশে থাকবেন। একইসঙ্গে নড়িয়ায় পদ্মার বালুখেকোদের যিনি রুখবেন। এই বালু লুটকারীরা যেন প্রার্থী হতে না পারেন, সে বিষয়ে সব দলকে খেয়াল রাখতে হবে। তাদের কারণে পদ্মার ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার পরিবার।’
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট রাশিদুল হাসান মাছুম বলেন, ‘আমরা সব সময় চাই সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক। কিন্তু শুধু নির্বাচন কমিশন দিয়ে সুষ্ঠু ভোট সম্ভব নয়, এখানে পুলিশ প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভোটারদের নিরাপদে ভোটকেন্দ্রে যাওয়া নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু এখন যে পরিস্থিতি, পুলিশ ও প্রশাসনের দলীয়করণ, সারা দেশে খুন, চাঁদাবাজি ও অত্যাচারের মাত্রা দেখে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা কঠিন।’
চলতি বছরের ডিসেম্বরে নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা হলে বর্তমান সরকার আর কোনো প্রকল্পের উদ্বোধন করতে পারবে না। সে কারণে দ্রুত পিডি নিয়োগ করে নভেম্বরেই কাজ শুরু করতে হবে। সেটি করা না হলে সারা দেশে এই আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে চীন টাকা না দিলেও নিজের টাকা দিয়ে কাজ শুরুর দাবি জানান তারা।
১ ঘণ্টা আগেময়মনসিংহের গৌরীপুরে জহিরুল ইসলাম মিঠু হত্যা মামলায় পলাতক দুই ভাইকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
২ ঘণ্টা আগেপরিবারের পক্ষ থেকে জানা গেছে, ১১ বছর বয়সে ১৯৩৫ সালে শামসুদ্দিন ব্রিটিশ-ইন্ডিয়ান আর্মিতে যোগ দিয়েছিলেন। তার সৈনিক নম্বর ছিল ৬৪১৪৬০। ১৯৩৯ থেকে শুরু করে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত পুরো ছয় বছর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ময়দানে ছিলেন এ যোদ্ধা।
২ ঘণ্টা আগেচট্টগ্রামের হাটহাজারী থানার ভেতরে পুলিশের ওপর চড়াও হয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের এক সাবেক নেতা। ঘটনার পর তাকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার দুপুর ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আটক মো. রায়হান হাটহাজারি কলেজ শিবিরের সাবেক সভাপতি।
২ ঘণ্টা আগে