ফ্যাসিস্টের ১০ দোসর খুলনা কেমিস্ট কমিটিতে, বাতিলের দাবিতে আলটিমেটাম

খুলনা ব্যুরো
প্রকাশ : ১৬ আগস্ট ২০২৫, ১৮: ৫৯

বাংলাদেশ কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতি খুলনা জেলা শাখার ১৫ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্র। এদের মধ্যে ১০ জনই পতিত আওয়ামী সরকারের দোসর। নির্বাচনী কমিটির মাধ্যমে তিন মাসের মধ্যে সরাসরি ভোটের দাবি জানিয়েছেন ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা।

শনিবার দুপুরে এ দাবিতে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন বিক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা। দাবি মানা না হলে চার দফা কর্মসূচিরও ঘোষণা দেওয়া হয়। যার মধ্যে রয়েছে স্মারকলিপি প্রদান, গণস্বাক্ষর কর্মসূচি, মানববন্ধন এবং খুলনা জেলাব্যাপী সকল ফার্মেসী বন্ধ রাখা।

বিজ্ঞাপন

ওই ১০ জন বিগত ১২ বছর নির্বাচন ছাড়াই সমিতি দখলে রেখেছিল। তাদের নাম কমিটিতে থাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ ওষুধ ব্যবসায়ীদের মাঝে। তারা অবিলম্বে এই আওয়ামী দোসর কমিটি বাতিল করে নির্বাচনী কমিটির মাধ্যমে তিন মাসের মধ্যে সরাসরি ভোটের দাবি জানিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সমিতির সাবেক দু’বারের সাধারণ সম্পাদক এস এম আজিজুর রহমান বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের ১২ বছর সমিতির কোনো নির্বাচন হয়নি। সদর আসনের পলাতক এমপি ও শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েলের সরাসরি হস্তক্ষেপে ফ্যাসিস্টের দোসর মোজাম্মেল হককে সভাপতি ও মনিরুজ্জামান বাবুকে সাধারণ সম্পাদক করে পকেট কমিটি করা হয়। এর মধ্যে মনিরুজ্জামান বাবু কোনো ওষুধ ব্যবসায়ী নন, তিনি শেখ জুয়েলের ম্যানেজার।

লাভজনক এ সমিতি থেকে অবৈধভাবে অর্থ লুটপাটের জন্য তাকে পরবর্তীতে সভাপতি করেন শেখ জুয়েল। নেতৃত্বের দ্বন্দ্বের কারণে এ সময় ছাত্রলীগ-যুবলীগ সন্ত্রাসীরা দীর্ঘ আট মাস সমিতি ভবন তালা বন্ধ করে রাখে।

সমিতির অন্যতম গুরুত্বপুর্ণ কাজ ফার্মসিস্ট ট্রেনিং কোর্সটিও তারা বন্ধ করে দেয়, যা আজ পর্যন্ত বন্ধ আছে। ২০২৪ সালের নির্বাচনের সময় সমিতি ভবনের নিচতলার একটি দোকান দখল করে নৌকা মার্কার নির্বাচনী কার্যালয়ে পরিণত করে। একটি দোকান ঘর তিন বছরের চুক্তিতে তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা অগ্রিম প্রদানের বিনিময় ভাড়া দিলেও সমিতির ফান্ডে টাকা জমা পড়েনি। পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে মোজাম্মেল হক ও মনিরুজ্জামান বাবু সমিতির ফাণ্ড থেকে প্রায় ১২ লাখ টাকা তছরুপ করেন। পাশাপাশি ছাত্রলীগ-যুবলীগ সন্ত্রাসীদের দিয়ে জোরপুর্বক আমাকে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করতে বাধ্য করে।

তিনি বলেন, ৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের পর তারা গা ঢাকা দেয়। কিন্ত ১৬ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদদের রূহের মাগফেরাত কামনায় দোয়ার নামে পুনরায় সমিতির অফিস প্রবেশের চেষ্টা করলে কেমিস্ট জনতার তীব্র প্রতিবাদের মুখে পালিয়ে যায়। কিছুদিন পরে সমিতির ফাণ্ড থেকে ৫৫ লাখ টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করলে প্রতিরোধের মুখে সে চেষ্টাও ব্যর্থ হয়।

অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে যোগাযোগ করা হলে আহবায়ক কমিটির প্রথম যুগ্ম আহবায়ক ও বিএনপিপন্থী ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত খান সাইফুল ইসলাম বলেন, সব ধরনের সব মতাদর্শের ব্যবসায়ী নিয়ে আহবায়ক কমিটি হয়েছে। এ কমিটি শুধুমাত্র একটি নির্বাচন আয়োজন করবে। এর বাইরে অন্য কোন কাজ তারা করবে না।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত