আমার দেশ সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমানকে কুষ্টিয়ার আদালত চত্বরে হত্যাচেষ্টা মামলার আরো এক আসামি নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা মো. সাদ্দাম হোসেনকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি ওই মামলার ৩২ নম্বর আসামি। গ্রেপ্তার সাদ্দাম কুষ্টিয়ার মিরপুর থানার কাটদহচর গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে।
বুধবার বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের হাসপাতাল মোড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আমার দেশকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন। তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমানকে হত্যাচেষ্টা মামলায় সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২২ জুলাই আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কুমারখালী উপজেলার বানিয়াপাড়া গ্রামের মৃত জামিল হোসেন বাচ্চুর ছেলে ইয়াসির আরাফাত তুষারের দায়ের করা একটি মানহানি মামলার বিবাদী হিসেবে কুষ্টিয়ার আদালতে হাজিরা দিতে আসেন। এ সময় এজাহার নামীয়দের নির্দেশে বাদীকে দিনভর আদালত ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আদালত চত্বরেই তার (আমার দেশ সম্পাদক) ওপর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা করে এবং ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত জখম করে গুরুতর আহত করে।
এ ঘটনার ছয় বছর পর (ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর) গত বছর ১০ অক্টোবর মজলুম সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান বাদী হয়ে ভারতে পলাতক প্রধানমন্ত্রী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুল আলম হানিফ, ফাসিস্টের সহযোগী সাবেক তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, তৎকালীন পুলিশের মহাপরিদর্শক জাবেদ পাটোয়ারী, কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মেহেদী হাসান ও কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি নাসির উদ্দিনসহ ৪৭ জনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ২০-৩০ জনের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি হত্যা চেষ্টার অভিযোগ দেন।
এজাহারে আরো বলা হয়েছে, কুষ্টিয়া আদালতের দায়িত্বরত কোর্ট ইন্সপেক্টর মনিরুজ্জামান বাদীকে পুলিশী প্রটেকশন দেওয়ার আশ্বাস দেন এবং যশোর বিমান-বন্দরে পৌছাইয়া দেওয়ার জন্য একটি প্রাইভেটকার ভাড়া করার কথা জানান।
তার আশ্বাসের প্রেক্ষিতে বাদী (আমার দেশ সম্পাদক) আদালত এজলাস কক্ষ হতে বের হয়ে, তার দুই সফর সঙ্গীসহ একটি সাদা রঙের প্রাইভেট কারে বসেন। গাড়িতে বসার ২/১ মিনিটের মধ্যেই ১১ হইতে ৪৭ নং আসামিসহ আরো ১৫/২০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি মারাত্মক অস্ত্র, রড, লাঠি-সোটা ও ইট-পাথর দিয়া উক্ত গাড়ির সকল কাঁচ ভেঙে ফেলে এবং লাঠি ও পাথর দিয়া আমার দেশ সম্পদককে উপর্যুপরি আঘাত করে। রক্তাক্ত জখম করে। হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দেয়া এজাহারটি কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়। শুরুতে মামলাটির তদন্তভার দেয়া হয় কুষ্টিয়া মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু তাহেরকে। পরে কুষ্টিয়া মডেল থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক সাইমুম হাসানকে।

