চুয়াডাঙ্গায় মাটি খুঁড়তেই মিললো কলসভর্তি রুপার মুদ্রা

উপজেলা প্রতিনিধি, দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা)
প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২: ১৫

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার সীমান্তঘেঁষা কার্পাসডাঙ্গা গ্রামে দোকানঘর নির্মাণের জন্য মাটি কাটতে গিয়ে এক ঐতিহাসিক আবিষ্কার ঘটেছে। শনিবার সকাল ৯টার দিকে স্থানীয়রা একটি পিতলের কলস ভর্তি প্রায় ২২ কেজি ওজনের রুপার মুদ্রা উদ্ধার করে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কার্পাসডাঙ্গা গ্রামের মৃত দিলু মণ্ডলের ছেলে সহিদুল ইসলাম বাজারের সাইকেল হাটসংলগ্ন জমিতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটি কাটছিলেন। খননের এক পর্যায়ে মেশিনের সাথে উঠে আসে একটি ভারী কলস। সেটি খোলা হলে দেখা যায় কলস ভর্তি ঝকঝকে রুপার কয়েন। উপস্থিত লোকজন বিস্মিত হয়ে যান। স্থানীয়দের অনেকে একে ‘গুপ্তধন’ বলেও অভিহিত করেন।

বিজ্ঞাপন

প্রাথমিকভাবে গুনে দেখা যায়, কলসটিতে মোট ১ হাজার ৮৭৬টি মুদ্রা রয়েছে। স্থানীয় স্বর্ণকারদের মতে, প্রতিটি মুদ্রার রুপার দাম বর্তমান বাজারে ১,৫০০ থেকে ১,৮০০ টাকা হতে পারে। তবে এগুলো শুধু ধাতব মূল্যেই সীমাবদ্ধ নয়; ঐতিহাসিক মূল্য বিবেচনায় এর দাম আরও কয়েকগুণ বেশি। উদ্ধার হওয়া মুদ্রাগুলো ১৮৬৫ থেকে ১৯১০ সালের মধ্যে ব্রিটিশ আমলের ভারতীয় রুপি বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় কৌতূহলী মানুষের ভিড় জমে যায়। পরে কার্পাসডাঙ্গা ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কলস ও মুদ্রাগুলো জব্দ করে থানায় নিয়ে আসে। স্থানীয় সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে মুদ্রাগুলোর ওজন করা হলে দেখা যায় সেগুলোর মোট ওজন দাঁড়ায় প্রায় ২১ কেজি ৯০০ গ্রাম।

স্থানীয় সহিদুল ইসলামের ছেলে মেহেদি হাসান মানিক বলেন“আমরা নিজেদের জমিতে দোকানঘর নির্মাণের জন্য ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটি কাটছিলাম। সকাল ৯টার দিকে প্রায় চার ফুট গভীর থেকে মেশিনের সাথে একটি পিতলের কলস উঠে আসে। সেটিতে কয়েন দেখতে পেয়ে আমরা কার্পাসডাঙ্গা ফাঁড়ি পুলিশকে খবর দিই। পরে পুলিশ এসে কলসটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।”

দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির জানান,“মাটি খুঁড়তে গিয়ে রুপার মুদ্রা পাওয়া গেছে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে স্থানীয়দের সামনে কলসটি খোলা হয় এবং মুদ্রাগুলোর ওজন করা হয়। এগুলো বর্তমানে থানায় সংরক্ষিত আছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এগুলো ব্রিটিশ আমলের ভারতীয় রুপি। তবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।”

এই ঘটনার খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা ঘটনাটিকে ইতিহাসের এক অমূল্য সম্পদ হিসেবে দেখছেন। অনেকের মতে, এটি শুধু একটি গুপ্তধন নয়, বরং অঞ্চলের অতীত ঐতিহ্য ও ঐতিহাসিক সম্পদের প্রতীক।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত