হাদির ওপর গুলি বর্ষণের ঘটনায় জড়িত হামলাকারীরা ময়মনসিংহ সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়েছে এমন তথ্য এখনো নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। তবে সম্ভাব্য সব দিক বিবেচনায় নিয়ে সীমান্তজুড়ে তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।
সোমবার সকালে ময়মনসিংহ নগরীর খাগডহরে অবস্থিত বিজিবি ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিজিবির ময়মনসিংহ সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, হামলাকারীরা পালিয়েছে কি না এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে বিজিবি ও পুলিশ যৌথভাবে মাঠপর্যায়ে কাজ করছে।
তিনি জানান, বিজিবি সদর দপ্তরের নির্দেশনায় শুক্রবার রাত ৯টার মধ্যে সম্ভাব্য পাচার রুটগুলো চিহ্নিত করে সীমান্তের অধিকাংশ স্থানে টহল ও চেকপোস্ট বসানো হয়। পরদিন শনিবার পুলিশ ও বিজিবির সমন্বয়ে যৌথ অভিযানের পরিকল্পনা করা হয়। এ সময় ঢাকা থেকে আগত পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে দুইটি স্থানে একযোগে অপারেশন পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর অংশ হিসেবে শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে অবস্থানরত সন্দেহভাজন ফিলিপ স্নালকে আটকের পরিকল্পনা করা হয়। একই সময়ে হালুয়াঘাট এলাকায় পুলিশের একটি দল অপারেশন চালায়, যেখানে বিজিবি সোর্স ও অন্যান্য তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করে। নালিতাবাড়ীর বারোমারি এলাকায় বিজিবির নেতৃত্বে ঢাকা থেকে আগত পুলিশ ও হালুয়াঘাট থানার পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ে অভিযান পরিচালিত হলেও ফিলিপ স্নালকে পাওয়া যায়নি। তবে তার স্ত্রী ডেলটা চিরান, শ্বশুড় ইয়ারসন রংদি এবং মানবপাচারকারী লুইস লেংমিঞ্জাকে আটক করা হয়। তাদের বাড়ি থেকে একটি মোটরসাইকেলও উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে রোববার রাতে বারোমারি এলাকা থেকে আরও এক মানবপাচারকারী বেঞ্জামিন চিরানকে আটক করেছে বিজিবি। তাকে ক্যাম্পে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত বিজিবি চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানান সেক্টর কমান্ডার।
কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা এখনো নিশ্চিত করে বলতে পারছি না যে হামলাকারী ময়মনসিংহ সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়েছে কি না। আমরা দুই সম্ভাবনাকেই সামনে রেখে কাজ করছি। যদি পালিয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে কে বা কারা তাকে সহায়তা করেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর যদি না পালিয়ে থাকে, তাহলে সে কোথায় আছে, কার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে সেসব বিষয়েও অনুসন্ধান চলছে।
তিনি আরো বলেন, ফিলিপ স্নালকে গ্রেপ্তার করা গেলে গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য পাওয়া যাবে। যদি কোনো পাচারের ঘটনা ঘটে থাকে, তা স্পষ্ট হবে। আবার যদি না ঘটে থাকে, তাহলে বারবার তার নাম আসার কারণও জানা সহজ হবে।
সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা প্রশ্ন ও আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশ বা বিজিবি কেউই এখনো নিশ্চিত নয়। আমরা সারাবছর সীমান্ত পাহারা দিই, তবু এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি।
বিজিবি জানিয়েছে, সন্দেহভাজন হামলাকারী ফয়সালের ছবি সীমান্তবর্তী গ্রামের মানুষের মাঝে দেখানো হচ্ছে। ওই ধরনের কাউকে সন্দেহজনকভাবে দেখা গেলে তাকে আটক করে বিজিবিকে জানানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় বিজিবির একাধিক টিম মোতায়েন থেকে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

