পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার চরগড়াগড়ি এলাকায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের পর বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও এলাকাজুড়ে বিরাজ করছে চাপা উত্তেজনা। ঘটনার পর রাতেই ঈশ্বরদী শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জামায়াত, আর শুক্রবার বিকেলে মিছিল করেছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার পাবনা-৪ আসনের জামায়াতসমর্থিত প্রার্থী ও দলটির জেলা আমির অধ্যাপক আবু তালেব মণ্ডলের প্রচারে একাধিকবার হামলার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। হামলায় জামায়াতসমর্থিত প্রার্থী অধ্যাপক তালেব, উপজেলা জামায়াত সেক্রেটারি সাইদুল ইসলামসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তালেব মণ্ডলের গাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি শতাধিক মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
চব্বিশের ৫ আগস্টের পর থেকেই রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে আলোচনায় ছিল চরগড়গড়ি। বছরজুড়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট, জমি দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগে রাজনৈতিক উত্তাপ ছিল তীব্র। এরই ধারাবাহিকতায় এবার বিরোধে জড়িয়েছে বিএনপি ও জামায়াত।
অন্যদিকে পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘জামায়াত নেতাকর্মীরাই আমাদের ওপর হামলা করেছে এবং গুলি চালিয়েছে। এতে আমাদের ৪-৫ জন কর্মী আহত হয়েছেন।’
রাতে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক আবু তালেব মণ্ডল দাবি করেন, ‘পরাজয় নিশ্চিত জেনে বিএনপি আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়েছে। থানার ওসি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছেন। তার অপসারণ দাবি করছি।’
ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রনব কুমার সরকার জানান, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্তে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে সংঘর্ষের সময় পিস্তল হাতে গুলি করা এক যুবকের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় নতুন করে সৃষ্টি হয়েছে ধোঁয়াশা। বিএনপির কেন্দ্রীয় মিডিয়া সেলসহ দলীয় নেতাদের দাবি—যুবকটি জামায়াতের কর্মী। তবে পুলিশ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করছে না।
অভিযোগ অস্বীকার করে ঈশ্বরদী উপজেলা জামায়াতের আমির ড. নুরুজ্জামান প্রামাণিক বলেন, ‘ওই যুবক আমাদের কোনো কর্মী বা সমর্থক নন। সংগঠনের সঙ্গে তার কোনো ন্যূনতম সম্পর্ক নেই।’
চরগড়াগড়িতে আপাতত পরিস্থিতি শান্ত হলেও ভেতরে ভেতরে উত্তেজনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

