ভারতে আত্রাই নদীর বাঁধে ভাঙন, দুশ্চিন্তায় কৃষক

উপজেলা প্রতিনিধি, ধামইরহাট (নওগাঁ)
প্রকাশ : ২১ মে ২০২৫, ১৪: ২৯

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট এলাকায় আত্রাই নদীর বাঁধ ভাঙনের ঘটনা ঘটেছে। যে কারণে বাংলাদেশের আত্রাই নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। দ্রুত বাঁধ নিয়ন্ত্রণ করা না হলে ধামইরহাট উপজেলায় সীমান্তবর্তী বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে ফসল ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন ওই অঞ্চলের কৃষক।

জানা গেছে, মাত্র চার মাস আগে বন্যা মোকাবিলায় বালুরঘাটে আত্রাই নদীতে ৩০ কোটি রুপি ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে স্বল্প উচ্চতার বাঁধ। গত মঙ্গলবার পানির চাপে বাঁধটির কিছু অংশ ভেঙে যায়। যার ফলে আতঙ্কে রয়েছে নদী পাড়ের স্থানীয় বাসিন্দারা। এর আগেও গত ফেব্রুয়ারিতে পানির তোড়ে বাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় বেশ চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল এলাকায়। মেরামত হওয়া অংশ ফের ভেঙে গেছে। বাঁধটি ভাঙনের কারণে ভারতের বালুরঘাটের ডাঙ্গি, গুপিনগর এবং জলঘর বিএসএফ ক্যাম্পসহ পার্শ্ববর্তী খিদিরপুর, ভাতচালা, মায়া মারি, ফতাপুর সীমান্ত এলাকা এবং বাংলাদেশের আত্রাই নদীর পাশের গ্রাম মনোহরপুর, রামচন্দ্রপুর, দক্ষিণখন্ডা, রসপুর, উদয়শ্রী, বেড়িতলা, চৌঘাট, সিলিমপুর, বলরামপুর ও চানকুড়িসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম নদীর পানিতে প্লাবিত হতে পারে। পাশাপাশি নীচু সীমান্তবর্তী এলাকার ফসলের মাঠগুলো নদীর পানিতে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে কৃষকের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার শিমুলতলী বিজিবি ক্যাম্পের সামনে দিয়ে ভারত সীমান্ত থেকে আসা আত্রাই নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় বাড়তে শুরু করেছে। পানির স্রোতের সাথে প্রচুর পরিমাণে কচুরিপানা ভারত সীমান্ত দিয়ে নদী দিয়ে ভেসে যাচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলার মনোহরপুর এলাকার কৃষক খলিলুর রহমান জানান, আত্রাই নদীর বাঁধের উপরে আমার ৩৭ শতাংশ জমিতে বোরো ধান রয়েছে। আর ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে ধানগুলো কেটে বাড়িতে আনা হবে। ভারতের বাঁধ ভাঙনের প্রভাব যদি বাংলাদেশে পড়ে, তাহলে আমার ফসল বাড়িতে আনা ভাগ্যের বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।

একই এলাকার কৃষক আব্দুল মান্নান জানান, শিমুলতলী মৌজা এবং মনোহরপুর মৌজায় আমার প্রায় ৫ বিঘা বড় মাপে জমিতে বোরো ধান লাগানো রয়েছে। বাংলাদেশে পানি বাড়লে আমিসহ স্থানীয়দের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌফিক আল জুবায়ের বলেন, আত্রাই নদীর পানি ২১.০১ মিটার পর্যন্ত বিপৎসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আশেপাশে পানি বাড়লেও খুব বেশি ক্ষতি হবে না। পাশাপাশি নীচু এলাকার মাঠের ফসলের কিছু অংশ ঘরে তুলেছেন কৃষকরা।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বিভাগের উপবিভাগের প্রকৌশলী প্রবীর কুমার পাল জানান, বর্তমানে আত্রাই নদীর পানি বিপৎসীমার অনেকাংশে নিচে রয়েছে। উজানে বৃষ্টি না হলে দুই একদিনে পানি কমে যাবে বলেও তিনি জানান।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত