বগুড়ার শেরপুরে কৃষি অফিসের পরামর্শে নতুন জাতের ধান (ব্রি ধান-১০৩) চাষ করে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষক রুহুল আমিন।
উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের ছোট ফুলবাড়ী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে তিনি ৪৯ জাতের ধানের পরিবর্তে ১০৩ জাত রোপণ করেছিলেন। কিন্তু ধান পাকা শুরুর আগেই ধানগাছ মাটিতে পড়ে যাওয়ায় হতাশায় ভেঙে পড়েছেন তিনি ও তার পরিবার।
ভুক্তভোগী কৃষক রুহুল আমিন বলেন, আমি প্রতি বছর ব্রি ধান-৪৯ চাষ করি। এবার কৃষি অফিসে পরামর্শ নিতে গেলে কর্মকর্তা বলেন ১০৩ ধান নতুন, ফলনও বেশি হবে। আমি জানতে চেয়েছিলাম, এই ধান কি পড়ে যাবে? তারা বলেছিলেন, না, এই ধান শক্ত থাকবে। কিন্তু এখন ফলন হওয়ার আগেই গাছ পড়ে গেছে।
তিনি জানান, এক বিঘা জমিতে এই ধান রোপণ করতে খরচ হয়েছে অনেক, কিন্তু ফলন ঘরে তোলা দুরূহ হয়ে পড়েছে। রুহুল আমিনের বাবা ওসমান গনি বলেন, আমি আগের মতো ৪৯ ধান লাগিয়েছি, আমার ধানে কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু ছেলে কৃষি অফিসের কথা শুনে এখন ক্ষতির মুখে। আমরা লাভের আশায় গিয়েছিলাম, এখন মনে হচ্ছে ভুল করেছি।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সালাম স্বীকার করেছেন যে তিনিই রুহুল আমিনকে ১০৩ ধান চাষে উৎসাহিত করেছিলেন। তিনি বলেন, ধান পড়ে যাওয়ার সুনির্দিষ্ট কারণ বলতে পারছি না। তবে জমিতে ইউরিয়া সার বেশি ব্যবহার করা হলে কিংবা মাটির উর্বরতা বেশি হলে এমন হতে পারে।
এদিকে স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, নতুন জাতের ধান বাজারজাতের আগে মাঠপর্যায়ে যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করেই কৃষকদের এমন পরামর্শ দেওয়া ঠিক হয়নি। এতে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এবং কৃষি বিভাগের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন বলেও মন্তব্য করেন তারা।
কৃষকেরা দাবি করেছেন পরীক্ষিত না হওয়া জাতের ধান চাষে নিরুৎসাহিত করতে হবে, নইলে কৃষির ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়বে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা খাতুন জানান, জমিতে গিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে হবে কেন ধান পড়ে গেছে। যদি প্রকৃতই কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হন, তবে প্রণোদনার আওতায় আনার বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া হবে।


শেরপুরে কৃষকের ৫টি গরু চুরি