রেলের জমি জবরদখল আ.লীগ নেতাদের, অভিযোগ পেয়েও নির্বিকার প্রশাসন

দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৬: ৫৯
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২৫, ২১: ৪৭

দিনাজপুর পার্বতীপুরের মধ্যপাড়া রেলওয়ে স্টেশনসংলগ্ন রেলওয়ের লিজকৃত জমি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দা সাজ্জাদ হোসেন।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই ২০২৫) দুপুরে মধ্যপাড়া রেলস্টেশন এলাকায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ২০০৯ সালে তিনি রেলওয়ের নিকট থেকে বৈধভাবে ৩ একর ২৩ শতক পরিত্যক্ত জমি লিজ নিয়ে সেখানে আম, কাঁঠালসহ বিভিন্ন ফলদ গাছ রোপণ করেন। গত ১৫ বছর ধরে নিজ খরচে জমিটি পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছেন তিনি।

তিনি অভিযোগ করেন, ‘গত চার বছর ধরে একটি প্রভাবশালী মহল, বিশেষ করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী, অবৈধভাবে লিজ নেয়া জমি দখলের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আমি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ করলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’

সাজ্জাদ হোসেন আরো বলেন, ‘২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর স্থানীয় প্রশাসন ও সাধারণ জনগণের সহযোগিতায় আমি জমির নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাই। তবে বর্তমানে রেলওয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তা, বিশেষ করে কানুনগো এবং কাগজপত্র বিভাগে কর্মরত ব্যক্তিরা আবারও জমিটি অন্য কাউকে বরাদ্দ দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন।’

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘এই জমির উন্নয়নে আমার বছরের পর বছর পরিশ্রম ও অর্থ বিনিয়োগ রয়েছে। দুর্নীতিগ্রস্ত কিছু কর্মকর্তার স্বার্থে যদি এই জমি হাতছাড়া হয়, তবে আমার সবকিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে।’

সংবাদ সম্মেলনে তিনি চার দফা দাবি উত্থাপন করেন: পূর্বের বৈধ লিজ বহাল রাখা, রেলওয়ের অসাধু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ, জমি অন্য কাউকে বরাদ্দ না দেওয়া এবং শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদভাবে ভোগদখলের নিশ্চয়তা দেওয়া।

তিনি বলেন, ‘আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে ন্যায়বিচার এবং আমার স্বপ্নের নিরাপত্তা চাই।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত স্থানীয় বাসিন্দা আসাদুল হক বলেন, ‘প্রায় ১২ বছর ধরে সাজ্জাদ ভাইয়ের জমিতে কাজ করছি। এখান থেকে আমাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। আমরা সরকারের কাছে আবেদন জানাই, যথাযথ প্রক্রিয়ায় তাকে পুনরায় লিজ দেয়া হোক।’

আরেকজন স্থানীয় বাসিন্দা মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এই পরিত্যক্ত জমিতে সাজ্জাদ হোসেন আমবাগান গড়ে তুলেছেন। গাছগুলো এখন ১০-১২ বছরের হয়েছে। ফল আসতে শুরু করেছে। সরকার যেন এই লিজ পুনরায় তার নামে বহাল রাখে, এটাই আমাদের দাবি।’

এ বিষয়ে মন্তব্য নেয়ার জন্য পাবনার পাকশী রেলওয়ের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ অফিসার আরিফুল ইসলামের ফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত