সিলেটের প্রখ্যাত বুজুর্গ, বর্ষীয়ান আলেমে দ্বীন ও রামপুর সিলসিলার অন্যতম খলিফা মাওলানা কাজী রফিক আহমদ আর নেই।
২৮ নভেম্বর শুক্রবার বিকাল ৩টায় তাজপুর মঙ্গলচণ্ডী সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তার নামাজে জানাজা আয়োজন করা হয়। আগেই মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় মুসল্লিতে। দেশ–বিদেশের শায়খুল হাদিস, আলেম সমাজের প্রতিনিধিরা, রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, ছাত্র-শিক্ষক, চিকিৎসক, কৃষক, শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার কয়েক হাজার মানুষ তার জানাজায় অংশ নেন। জানাজা ময়দানজুড়ে দেখা যায় মানুষের ঢল।
এর আগে বৃহস্পতিবার ২৭ নভেম্বর সকাল সোয়া ১১টার দিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় নেয়ার প্রস্তুতিকালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মাওলানা কাজী রফিক আহমদ ওসমানীনগর উপজেলার উসমানপুর ইউনিয়নের চক ইছামতি গ্রামের প্রয়াত আলেমে দ্বীন ওলীয়ে কামিল মাওলানা শফিক আহমদ ছাহেবের ছেলে।
তার ৩ ছেলে, ৬ মেয়ে, স্ত্রী এবং অসংখ্য মুরিদ-মুহিব্বীন, ভক্ত-অনুরাগী ও গুণগ্রাহী আছেন। দেশবরেণ্য এই দ্বীনি ব্যক্তিত্বের মৃত্যুতে সিলেটসহ সারাদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সর্বত্র শুরু হয় শোক ও স্মরণ।
মাওলানা কাজী রফিক আহমদ ছিলেন সিলেটের সুপরিচিত শিক্ষাব্রতী, নিবেদিতপ্রাণ দাঈ এবং সমাজসেবী। তিনি জীবদ্দশায় একাধিক মাদরাসা, হাফিজিয়া ও মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন এবং মৃত্যুর পূর্বদিন পর্যন্ত এসব প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাজপুর বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব হিসেবে তিনি প্রায় ৪০ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া ১৯৮২ সাল থেকে নিকাহ রেজিস্ট্রার ও কাজী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে তিনি ২০১৯ সালে অবসর গ্রহণ করেন। দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছিলেন তিনি।
জানাজা শেষে তার মরদেহ নেওয়া হয় নিজ পৈতৃক নিবাস চক ইছামতি গ্রামে। সেখানে পারিবারিক কবরস্থানে তার বাবার পাশে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
ধর্মীয় অঙ্গন, শিক্ষা পরিবার এবং সাধারণ মানুষের মনে তিনি রেখে গেলেন অমলিন স্মৃতি, ভালোবাসা ও দোয়া ভরা হৃদয়।

