মৌলভীবাজারে সড়কে চার্জার রিকশা নিষিদ্ধ, স্বস্তিতে সাধারণ মানুষ

জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার
প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১৪: ৫৫

আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে মৌলভীবাজার শহরের প্রধান সড়কে ব্যাটারিচালিত চার্জার রিকশা চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে জেলা পুলিশ। যানজট ও দুর্ঘটনা কমাতে পুলিশের নেওয়া এই পদক্ষেপে খুশি হয়েছেন শহরের সাধারণ মানুষ। অনেকেই বলছেন, এটি তাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল।

মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার এম. কে. এইচ. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, শহরকে যানজটমুক্ত ও নিরাপদ রাখতে ট্রাফিক আইন মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি। এ কারণেই শহরের প্রধান সড়কে চার্জার রিকশা চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, ধাপে ধাপে জেলার সব উপজেলার প্রধান সড়কেও এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে।

বিজ্ঞাপন

পুলিশ সুপার আরও বলেন, আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে জেলাজুড়ে বিশেষ অভিযান পরিচালিত হবে। এই অভিযানে রেজিস্ট্রেশনবিহীন 'ON TEST' লেখা সিএনজি, মোটরসাইকেল এবং অন্যান্য অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চার্জার রিকশার চালকরা সাধারণত অপ্রশিক্ষিত হওয়ায় দ্রুত গতিতে এবং বেপরোয়াভাবে রিকশা চালান, যা প্রায়শই দুর্ঘটনার কারণ হয়। মৌলভীবাজার, শ্রীমঙ্গলসহ জেলার বিভিন্ন শহরে চার্জার রিকশার কারণে বহু যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছেন বা অঙ্গহানি হয়েছে। বিশেষ করে স্কুলগামী শিশু এবং নারীরা এসব রিকশায় যাতায়াতের সময় ঝুঁকির মধ্যে থাকেন।

এই সিদ্ধান্তে শহরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।

সংবাদকর্মী মাহবুবুর রহমান রাহেল বলেন, “চার্জার রিকশার কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছিল। বিশেষ করে স্কুলগামী শিশু ও নারী যাত্রীরা ঝুঁকিতে ছিলেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে শহরে নিরাপত্তা বাড়বে।”

স্কুলছাত্রী মরিয়ম আক্তার জানায়, “আমাদের স্কুলের সামনে চার্জার রিকশার কারণে রাস্তা পার হওয়া কঠিন ছিল। এখন মনে হচ্ছে আমরা একটু স্বস্তি পাবো।”

ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, “রাস্তা জ্যাম থাকার কারণে দোকানে মাল আনতে সমস্যা হতো। পুলিশের এই উদ্যোগ আমাদের মতো ব্যবসায়ীদের জন্য খুবই ভালো।”

গৃহিণী রহিমা খাতুন বলেন, “ভাড়া কম হওয়ায় আমরা চার্জার রিকশা ব্যবহার করতাম, কিন্তু সবসময় দুর্ঘটনার ভয় কাজ করত। তাই আমি এই সিদ্ধান্তে খুশি।”

তবে, এক স্কুলছাত্রী নোহা বলেন, “প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত ভালো হয়েছে। তবে এসব রিকশা এখন গ্রামে আসুক। কারণ গ্রামের রাস্তায় চলার জন্য একটা রিকশাও খুঁজে পাওয়া যায় না।”

শহরের সাধারণ মানুষ আশা করছেন, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রধান সড়কগুলো আরও নিরাপদ ও চলাচলযোগ্য হয়ে উঠবে। একই সাথে, যদি বিকল্প পরিবহনের ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে তাদের ভোগান্তিও অনেকটাই কমে আসবে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত