
রোহান রাজিব

এক সময় দেশের সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকগুলোর কাতারে থাকা পূবালী ব্যাংক এখন শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকগুলোর একটি। দীর্ঘ সংকট উত্তরণের পর প্রতিষ্ঠানটি এখন আর্থিকভাবে অত্যন্ত শক্তিশালী অবস্থানে। বর্তমান সাফল্য, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং সামগ্রিক ব্যাংক খাত নিয়ে আমার দেশ-এর সঙ্গে কথা বলেছেন পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ আলী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন স্টাফ রিপোর্টার রোহান রাজিব
আমার দেশ : পূবালী ব্যাংক একসময় ছিল সমস্যাগ্রস্ত, তবে এখন দেশের শীর্ষ ব্যাংকগুলোর মধ্যে একটি। এই রূপান্তর কীভাবে সম্ভব হলো?
মোহাম্মদ আলী : ১৯৫৯ সালে ইস্টার্ন মার্কেন্টাইল ব্যাংক নামে যাত্রা শুরু করে পূবালী ব্যাংক, যা একটি বেসরকারি ব্যাংক ছিল এবং ভালোই চলছিল। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে এটি রাষ্ট্রায়ত্ত করা হয় এবং নাম দেওয়া হয় পূবালী ব্যাংক। তখন থেকেই রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ শুরু হয় এবং খেলাপি ঋণ ৫৪ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। একপর্যায়ে এটিকে আবার বেসরকারি খাতে হস্তান্তর করা হয়; তারপরও ব্যাংকটি সঙ্গে সঙ্গে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। ১৯৮৪ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত আমরা সমস্যাগ্রস্ত ছিলাম। দীর্ঘ ২১ বছর লেগেছে ঘুরে দাঁড়াতে। ২০০৭ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যবেক্ষক তুলে নেয় এবং পূবালী ব্যাংক স্বাধীনভাবে পরিচালিত হতে শুরু করে।
আমরা তখন লক্ষ্য ঠিক করি, প্রতিবছর অন্তত একটি ব্যাংককে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাব। সে লক্ষ্যে আমরা সফল হই। ২০২৪ সালে এসে দেখা যাচ্ছে, মুনাফার দিক থেকে পূবালী ব্যাংক দেশের অন্যতম শীর্ষে। আমাদের খেলাপি ঋণের হার বাজারে সবচেয়ে কম। এ সাফল্যের মূল কারণ হলো করপোরেট সুশাসন নিশ্চিত করা।
গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ অনেক চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে গেছে; কিন্তু পূবালী ব্যাংক কোনো রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে ঋণ দেয়নি। যেসব ব্যাংক এস আলম গ্রুপ বা সালমান এফ রহমানের মতো গোষ্ঠীকে ঋণ দিতে বাধ্য হয়েছে, তারা ব্যর্থ হয়েছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে যেসব ব্যাংক এই চাপ প্রতিহত করতে পেরেছে, তাদের পুরস্কৃত করা উচিত।
আমার দেশ : খেলাপি ঋণ কমিয়ে রাখার ক্ষেত্রে কী কৌশল অবলম্বন করেছেন?
মোহাম্মদ আলী : প্রতিটি ব্যাংকের নিজস্ব সিআরএম (ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট) গাইডলাইন থাকে। আমরা সেটি কঠোরভাবে অনুসরণ করি এবং করপোরেট সুশাসন প্রতিষ্ঠা করি। এটা শুধু ম্যানেজমেন্ট পর্যায়ের বিষয় নয়, প্রতিটি ডেস্কেও এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করি।
আমরা বলি, আমাদের গাইডলাইন আছে, গ্রাহককে সংশ্লিষ্ট করপোরেট অফিস বা শাখায় যেতে হবে। শাখা হিসাব অনুযায়ী পুনঃতফসিল, খেলাপি বা কোর্টের স্টে অর্ডার থাকলে ঋণ দেওয়া হয় না। বড় ঋণের ক্ষেত্রে আমি নিজেও পরিদর্শনে যাই। সবকিছু যাচাই-বাছাই করে ঋণ অনুমোদন করা হয়। কোনো বেনামি বা ‘ব্রিফকেস কোম্পানিকে’ ঋণ দিই না। এ কারণেই আমাদের খেলাপি ঋণ বাজারে সবচেয়ে কম।
আমার দেশ : সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পূবালী ব্যাংক ভালো মুনাফা করছে। এ বছর লক্ষ্য কেমন?
মোহাম্মদ আলী : গত বছর আমাদের আমানত বেড়েছে ১৪ হাজার কোটি টাকা। ট্রেজারি বিল ও বন্ডে সাত হাজার কোটি এবং বিনিয়োগে আরো সাত হাজার কোটি টাকা বেড়েছে। প্রফিট গ্রোথ ছিল ৫০ শতাংশ। আমদানি-রপ্তানি প্রবৃদ্ধিও ৫০ শতাংশ। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসেই ৭০৫ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা হয়েছে, যা গত বছর ছিল ৫৯২ কোটি। আমরা এবার প্রথম ব্যাংক হিসেবে তিন হাজার কোটি টাকার পরিচালন মুনাফার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি এবং সেটা অর্জন সম্ভব বলেই মনে করছি।
আমার দেশ : পূবালী ব্যাংক কোন খাতে বেশি ঋণ দেয়?
মোহাম্মদ আলী : আমরা শুধু মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে সহায়ক খাতে ঋণ দিই। খাদ্য, বস্ত্র ও সাশ্রয়ী আবাসনের পাশাপাশি স্বাস্থ্য খাতে আমাদের বড় বিনিয়োগ আছে। শিক্ষা খাতেও, যেমন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক প্রতিষ্ঠানে অর্থায়ন করেছি। এই কার্যক্রমগুলোই আমাদের খেলাপি ঋণ কমিয়ে এনেছে। ভবিষ্যতে পূবালী ব্যাংককে একটি বহুজাতিক ব্যাংকে রূপান্তরের প্রচেষ্টা থাকবে। ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করাও আমাদের লক্ষ্য।
আমার দেশ : ডিজিটাল উদ্যোক্তাদের জন্য পূবালী ব্যাংকের ভূমিকা কেমন?
মোহাম্মদ আলী : আমরা বরাবরই ডিজিটাল উদ্যোক্তাদের জন্য বাজেট রাখি। তাদের বেশি বেশি সহায়তা করতে চাই। কারণ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে প্রযুক্তিতে অগ্রসর হতে হবে। এতে সময়, খরচ, পরিশ্রম সবই কমে যায় এবং দেশের সার্বিক অগ্রগতি হয়।
আমার দেশ : দেশের অর্থনীতিতে পূবালী ব্যাংকের অবদান কতটা?
মোহাম্মদ আলী : আমানত, ঋণ ও মুনাফায় আমাদের বাজার শেয়ার তিন দশমিক ২৫ শতাংশ। দেশের ৬১টি ব্যাংকের গড় শেয়ার দেড় শতাংশ। সে তুলনায় আমাদের শেয়ার দ্বিগুণ। দু-তিন বছরের মধ্যে পাঁচ শতাংশে পৌঁছাতে চাই। আমদানি-রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রাও বাড়ানো হয়েছে।
আমার দেশ : রেমিট্যান্স সংগ্রহে পূবালী ব্যাংকের অবস্থা কেমন?
মোহাম্মদ আলী : আমরা রেমিট্যান্স সংগ্রহে সব সময় শীর্ষ কয়েকটি ব্যাংকের মধ্যে থাকি। রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সেবা দিয়ে তাদের পাশে থাকাই আমাদের নীতি। রেমিট্যান্স আসার সঙ্গে সঙ্গেই গ্রাহককে মেসেজ পাঠানো হয়। এই আন্তরিকতার কারণেই আমাদের মাধ্যমে বেশি রেমিট্যান্স আসে। আমি মনে করি, প্রতিটি ব্যাংকের উচিত প্রবাসীদের পরিবারের খোঁজ-খবর নেওয়া এবং ভালোভাবে সেবা দেওয়া।
আমার দেশ : পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মধ্যে হস্তক্ষেপ দেখা যায় কি?
মোহাম্মদ আলী : না। পূবালী ব্যাংকে পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা পৃথকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করে থাকে। পর্ষদ নীতি নির্ধারণ করে, ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়ন করে। প্রতিটি শাখা, অঞ্চল এবং প্রধান কার্যালয়ের নিজস্ব মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। আমাদের ব্যবস্থাপনায় স্বাধীনতা রয়েছে।
আমার দেশ : পূবালী ব্যাংকে গ্রাহকসেবা নিয়ে অভিযোগ তেমন শোনা যায় না। এর পেছনে কী কারণ?
মোহাম্মদ আলী : ২০১১ সালে আমি যখন দুটি বিভাগের দায়িত্ব নিই, তখন স্থির করি পূবালী ব্যাংক একজন গ্রাহকের সারা জীবনের প্রয়োজনীয় সেবা দেবে। কর্মীদের প্রশিক্ষণ, বেতন কাঠামো সংস্কার এবং মানবসম্পদে বিনিয়োগ করেছি। গতবার ১৮ শতাংশ বেতন বাড়ানো হয়েছে। কর্মীদের মধ্যে মুনাফা ভাগ করে দেওয়া হয়। এবার ছয়টি মূল বেতনের সমান বোনাস দেওয়া হয়েছে। আমাদের কর্মীরা ব্যাংক ছাড়েন না, যোগ্য কর্মীদের ধরে রাখার কৌশলেই আমরা এগিয়ে গেছি।
আমার দেশ : ব্যাংক খাত বর্তমানে অস্থির। এই সংকট থেকে উত্তরণে কী করণীয়?
মোহাম্মদ আলী : সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক এই খাতে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে, যা ইতিবাচক। যেসব ব্যাংক দুর্বল, তাদের বোর্ড ও ম্যানেজমেন্টে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এটা একদিনে সমাধান হবে না, সময় লাগবে। তবে ইতোমধ্যে বাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। পূবালী ব্যাংককেও ঘুরে দাঁড়াতে ২১ বছর লেগেছে। আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। আমি আশাবাদী, দেশ ইতিবাচক দিকেই যাচ্ছে।

এক সময় দেশের সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকগুলোর কাতারে থাকা পূবালী ব্যাংক এখন শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকগুলোর একটি। দীর্ঘ সংকট উত্তরণের পর প্রতিষ্ঠানটি এখন আর্থিকভাবে অত্যন্ত শক্তিশালী অবস্থানে। বর্তমান সাফল্য, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং সামগ্রিক ব্যাংক খাত নিয়ে আমার দেশ-এর সঙ্গে কথা বলেছেন পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ আলী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন স্টাফ রিপোর্টার রোহান রাজিব
আমার দেশ : পূবালী ব্যাংক একসময় ছিল সমস্যাগ্রস্ত, তবে এখন দেশের শীর্ষ ব্যাংকগুলোর মধ্যে একটি। এই রূপান্তর কীভাবে সম্ভব হলো?
মোহাম্মদ আলী : ১৯৫৯ সালে ইস্টার্ন মার্কেন্টাইল ব্যাংক নামে যাত্রা শুরু করে পূবালী ব্যাংক, যা একটি বেসরকারি ব্যাংক ছিল এবং ভালোই চলছিল। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে এটি রাষ্ট্রায়ত্ত করা হয় এবং নাম দেওয়া হয় পূবালী ব্যাংক। তখন থেকেই রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ শুরু হয় এবং খেলাপি ঋণ ৫৪ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। একপর্যায়ে এটিকে আবার বেসরকারি খাতে হস্তান্তর করা হয়; তারপরও ব্যাংকটি সঙ্গে সঙ্গে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। ১৯৮৪ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত আমরা সমস্যাগ্রস্ত ছিলাম। দীর্ঘ ২১ বছর লেগেছে ঘুরে দাঁড়াতে। ২০০৭ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যবেক্ষক তুলে নেয় এবং পূবালী ব্যাংক স্বাধীনভাবে পরিচালিত হতে শুরু করে।
আমরা তখন লক্ষ্য ঠিক করি, প্রতিবছর অন্তত একটি ব্যাংককে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাব। সে লক্ষ্যে আমরা সফল হই। ২০২৪ সালে এসে দেখা যাচ্ছে, মুনাফার দিক থেকে পূবালী ব্যাংক দেশের অন্যতম শীর্ষে। আমাদের খেলাপি ঋণের হার বাজারে সবচেয়ে কম। এ সাফল্যের মূল কারণ হলো করপোরেট সুশাসন নিশ্চিত করা।
গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ অনেক চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে গেছে; কিন্তু পূবালী ব্যাংক কোনো রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে ঋণ দেয়নি। যেসব ব্যাংক এস আলম গ্রুপ বা সালমান এফ রহমানের মতো গোষ্ঠীকে ঋণ দিতে বাধ্য হয়েছে, তারা ব্যর্থ হয়েছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে যেসব ব্যাংক এই চাপ প্রতিহত করতে পেরেছে, তাদের পুরস্কৃত করা উচিত।
আমার দেশ : খেলাপি ঋণ কমিয়ে রাখার ক্ষেত্রে কী কৌশল অবলম্বন করেছেন?
মোহাম্মদ আলী : প্রতিটি ব্যাংকের নিজস্ব সিআরএম (ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট) গাইডলাইন থাকে। আমরা সেটি কঠোরভাবে অনুসরণ করি এবং করপোরেট সুশাসন প্রতিষ্ঠা করি। এটা শুধু ম্যানেজমেন্ট পর্যায়ের বিষয় নয়, প্রতিটি ডেস্কেও এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করি।
আমরা বলি, আমাদের গাইডলাইন আছে, গ্রাহককে সংশ্লিষ্ট করপোরেট অফিস বা শাখায় যেতে হবে। শাখা হিসাব অনুযায়ী পুনঃতফসিল, খেলাপি বা কোর্টের স্টে অর্ডার থাকলে ঋণ দেওয়া হয় না। বড় ঋণের ক্ষেত্রে আমি নিজেও পরিদর্শনে যাই। সবকিছু যাচাই-বাছাই করে ঋণ অনুমোদন করা হয়। কোনো বেনামি বা ‘ব্রিফকেস কোম্পানিকে’ ঋণ দিই না। এ কারণেই আমাদের খেলাপি ঋণ বাজারে সবচেয়ে কম।
আমার দেশ : সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পূবালী ব্যাংক ভালো মুনাফা করছে। এ বছর লক্ষ্য কেমন?
মোহাম্মদ আলী : গত বছর আমাদের আমানত বেড়েছে ১৪ হাজার কোটি টাকা। ট্রেজারি বিল ও বন্ডে সাত হাজার কোটি এবং বিনিয়োগে আরো সাত হাজার কোটি টাকা বেড়েছে। প্রফিট গ্রোথ ছিল ৫০ শতাংশ। আমদানি-রপ্তানি প্রবৃদ্ধিও ৫০ শতাংশ। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসেই ৭০৫ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা হয়েছে, যা গত বছর ছিল ৫৯২ কোটি। আমরা এবার প্রথম ব্যাংক হিসেবে তিন হাজার কোটি টাকার পরিচালন মুনাফার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি এবং সেটা অর্জন সম্ভব বলেই মনে করছি।
আমার দেশ : পূবালী ব্যাংক কোন খাতে বেশি ঋণ দেয়?
মোহাম্মদ আলী : আমরা শুধু মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে সহায়ক খাতে ঋণ দিই। খাদ্য, বস্ত্র ও সাশ্রয়ী আবাসনের পাশাপাশি স্বাস্থ্য খাতে আমাদের বড় বিনিয়োগ আছে। শিক্ষা খাতেও, যেমন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক প্রতিষ্ঠানে অর্থায়ন করেছি। এই কার্যক্রমগুলোই আমাদের খেলাপি ঋণ কমিয়ে এনেছে। ভবিষ্যতে পূবালী ব্যাংককে একটি বহুজাতিক ব্যাংকে রূপান্তরের প্রচেষ্টা থাকবে। ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করাও আমাদের লক্ষ্য।
আমার দেশ : ডিজিটাল উদ্যোক্তাদের জন্য পূবালী ব্যাংকের ভূমিকা কেমন?
মোহাম্মদ আলী : আমরা বরাবরই ডিজিটাল উদ্যোক্তাদের জন্য বাজেট রাখি। তাদের বেশি বেশি সহায়তা করতে চাই। কারণ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে প্রযুক্তিতে অগ্রসর হতে হবে। এতে সময়, খরচ, পরিশ্রম সবই কমে যায় এবং দেশের সার্বিক অগ্রগতি হয়।
আমার দেশ : দেশের অর্থনীতিতে পূবালী ব্যাংকের অবদান কতটা?
মোহাম্মদ আলী : আমানত, ঋণ ও মুনাফায় আমাদের বাজার শেয়ার তিন দশমিক ২৫ শতাংশ। দেশের ৬১টি ব্যাংকের গড় শেয়ার দেড় শতাংশ। সে তুলনায় আমাদের শেয়ার দ্বিগুণ। দু-তিন বছরের মধ্যে পাঁচ শতাংশে পৌঁছাতে চাই। আমদানি-রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রাও বাড়ানো হয়েছে।
আমার দেশ : রেমিট্যান্স সংগ্রহে পূবালী ব্যাংকের অবস্থা কেমন?
মোহাম্মদ আলী : আমরা রেমিট্যান্স সংগ্রহে সব সময় শীর্ষ কয়েকটি ব্যাংকের মধ্যে থাকি। রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সেবা দিয়ে তাদের পাশে থাকাই আমাদের নীতি। রেমিট্যান্স আসার সঙ্গে সঙ্গেই গ্রাহককে মেসেজ পাঠানো হয়। এই আন্তরিকতার কারণেই আমাদের মাধ্যমে বেশি রেমিট্যান্স আসে। আমি মনে করি, প্রতিটি ব্যাংকের উচিত প্রবাসীদের পরিবারের খোঁজ-খবর নেওয়া এবং ভালোভাবে সেবা দেওয়া।
আমার দেশ : পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মধ্যে হস্তক্ষেপ দেখা যায় কি?
মোহাম্মদ আলী : না। পূবালী ব্যাংকে পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা পৃথকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করে থাকে। পর্ষদ নীতি নির্ধারণ করে, ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়ন করে। প্রতিটি শাখা, অঞ্চল এবং প্রধান কার্যালয়ের নিজস্ব মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। আমাদের ব্যবস্থাপনায় স্বাধীনতা রয়েছে।
আমার দেশ : পূবালী ব্যাংকে গ্রাহকসেবা নিয়ে অভিযোগ তেমন শোনা যায় না। এর পেছনে কী কারণ?
মোহাম্মদ আলী : ২০১১ সালে আমি যখন দুটি বিভাগের দায়িত্ব নিই, তখন স্থির করি পূবালী ব্যাংক একজন গ্রাহকের সারা জীবনের প্রয়োজনীয় সেবা দেবে। কর্মীদের প্রশিক্ষণ, বেতন কাঠামো সংস্কার এবং মানবসম্পদে বিনিয়োগ করেছি। গতবার ১৮ শতাংশ বেতন বাড়ানো হয়েছে। কর্মীদের মধ্যে মুনাফা ভাগ করে দেওয়া হয়। এবার ছয়টি মূল বেতনের সমান বোনাস দেওয়া হয়েছে। আমাদের কর্মীরা ব্যাংক ছাড়েন না, যোগ্য কর্মীদের ধরে রাখার কৌশলেই আমরা এগিয়ে গেছি।
আমার দেশ : ব্যাংক খাত বর্তমানে অস্থির। এই সংকট থেকে উত্তরণে কী করণীয়?
মোহাম্মদ আলী : সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক এই খাতে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে, যা ইতিবাচক। যেসব ব্যাংক দুর্বল, তাদের বোর্ড ও ম্যানেজমেন্টে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এটা একদিনে সমাধান হবে না, সময় লাগবে। তবে ইতোমধ্যে বাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। পূবালী ব্যাংককেও ঘুরে দাঁড়াতে ২১ বছর লেগেছে। আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। আমি আশাবাদী, দেশ ইতিবাচক দিকেই যাচ্ছে।

আর আমদানির ওপর নির্ভরতা নয়— এখন থেকে দেশেই উৎপাদিত হবে সকল ধরনের বালাইনাশক ও কীটনাশক। এতে শুধু বিদেশনির্ভরতা কমবে না, নতুন করে রপ্তানির পথও খুলে যাবে বলে আশা করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
৯ মিনিট আগে
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী বর্তমান রিজার্ভের পরিমাণ ২৭ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার।
৪ ঘণ্টা আগে
ফের বড় ধরনের তারল্য সংকটে পড়েছে দেশের শেয়ারবাজার। বুধবার দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হয়েছে মাত্র ৩৫৫ কোটি টাকা, যা গত চার মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে গত ২৩ জুন ডিএসইতে সর্বনিম্ন ২৭৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল।
৫ ঘণ্টা আগে
দাবা বিশ্বকাপে বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিনিধিত্বকারী মনন রেজা নীড়ের বিশ্বজয়ের যাত্রার অংশীদার হতে পেরে গর্বিত বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ।
৭ ঘণ্টা আগে