একই ব্যক্তি তিনটির বেশি ব্যাংকের সুপারভাইজরি বোর্ডে থাকতে পারবে না

এখন থেকে কোনো ব্যক্তি তিনটির বেশি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শরিয়াহ সুপারভাইজরি কমিটিতে থাকতে পারবে না। এছাড়া শরিয়াহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য হতে হলে দেশের স্বীকৃত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কামিল, দাওরা-ই-হাদিস (তাকমিল), ফিক্হ, ইসলামি স্টাডিজ, আরবি, ইসলামি অর্থনীতি, ইসলামি ফাইন্যান্স, ইসলামি ব্যাংকিং অথবা ইসলামি আইনশাস্ত্র বিষয়ে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রিসহ ফিক্হ বা উসুল আল-ফিক্হ, বিশেষ করে ফিক্হ-আল-মুয়ামালাতে (ইসলামি বাণিজ্যিক আইনশাস্ত্র) উচ্চতর ডিগ্রি থাকতে হবে। শিক্ষাজীবনের কোনো পর্যায়ে তৃতীয় বিভাগ থাকতে পারবে না।

ইসলামি ধারার ব্যাংকে শরিয়াহ সুপারভাইজরি কমিটি গঠন, সদস্য নিয়োগ-অপসারণ ও দায়িত্ব-কর্তব্য নিয়ে নতুন এ বিধিবিধান করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রোববার এই নীতিমালা জারি করা হয়।

নতুন বিধানে বলা হয়েছে, সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য যে কোনো স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়/বোর্ডের দারুল-ইফতা বা দাওরা-ই-হাদিস (তাকমিল), ইসলামি স্টাডিজ, আরবি, ইসলামি অর্থনীতি, ইসলামি ফাইন্যান্স, ইসলামি ব্যাংকিং, ইসলামি আইন বা যে কোনো শরিয়াহ বিভাগের শিক্ষক বা মুফতি হিসেবে কমপক্ষে দুই বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। একই সঙ্গে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ফতোয়া বোর্ড বা শরিয়াহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য হিসেবে কমপক্ষে দুই বছরের অভিজ্ঞতা লাগবে। এছাড়া কোনো স্বনামধন্য ও স্বীকৃত জার্নালে অধ্যয়নের ওপর দুটি নিবন্ধ প্রকাশ করা বা ইসলামি ফাইন্যান্স ও ইসলামি ব্যাংকিং/অর্থনীতি বা ইসলামি আইনশাস্ত্রের ওপর দুটি স্বলিখিত বই বা প্রকাশনা থাকতে হবে।

এতে আরো বলা হয়েছে, শরিয়াহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য নিয়োগ ও অপসারণের ক্ষমতা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের হাতেই থাকবে। তবে পরিচালনা পর্ষদ এজিএম/ইজিএমে শেয়ারহোল্ডারদের অবহিত করতে হবে। দেশের প্রচলিত আইনকানুন, বিধিবিধান অনুসরণ করতে হবে। সদস্য নিয়োগের আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের ইসলামি ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। সদস্য সংখ্যা হবে তিন অথবা পাঁচজন। তবে প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবসা, অর্থনীতি, আইন, হিসাববিজ্ঞান, তথ্যপ্রযুক্তি ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত গ্রহণ করতে পারবে ব্যাংক।

এছাড়া বলা হয়েছে, একজন ব্যক্তি তিনটির বেশি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সদস্য হতে পারবেন না। সদস্যরা সাধারণভাবে তিন বছর মেয়াদের জন্য নিযুক্ত হবেন। মেয়াদ শেষে তাদের কর্মদক্ষতা ও অন্যান্য গুণাবলি পর্যালোচনা করে পর্ষদ পরবর্তী মেয়াদে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে এক বা একাধিক সদস্য পুনর্নিয়োগ করতে পারবে। তবে কোনো ব্যক্তি টানা ছয় বছর সদস্য পদে থাকলে দুই বছর বিরতি দিয়ে আবার সদস্য হতে পারবেন। সদস্যরা প্রতি মাসে ২৫ হাজার টাকা সম্মানী পাবেন। প্রতিটি সভায় উপস্থিতির জন্য আট হাজার টাকা সম্মানী পাবেন। সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখপূর্বক পরিচালনা পর্ষদ সংশ্লিষ্ট সদস্য বা সদস্যদের বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে অপসারণ করতে পারবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, সদস্যদের মধ্যে পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক একজনকে সর্বোচ্চ তিন বছরের জন্য চেয়ারম্যান নির্বাচিত করতে হবে। ব্যাংকের শরিয়াহ সচিবালয়ের প্রধান কমিটির সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তবে তার কোনো ভোটিং ক্ষমতা থাকবে না। এছাড়া বিদ্যমান সদস্যদের পুনর্নিয়োগের ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান পদটি সর্বদাই আবর্তিত হবে। চেয়ারম্যান কোনো সভায় উপস্থিত হতে না পারলে, উপস্থিত সদস্যদের মধ্য থেকে একজন সভাপতিত্ব করবেন।