প্রাথমিক বাজেট প্রতিক্রিয়া

বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা-ফিকির

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
প্রকাশ : ০২ জুন ২০২৫, ২১: ১৬
আপডেট : ০৩ জুন ২০২৫, ০১: ১৮

ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির -এফআইসিসিআই (ফিকি) তাৎক্ষণিক বাজেট প্রতিক্রিয়ায় অর্থ অধ্যাদেশ ২০২৫-এর কিছু ইতিবাচক দিক চিহ্নিত করে বলা হয়েছে, কয়েকটি বিষয়ে সংস্থাটির উদ্বেগ রয়েছে। এসব বিষয় ব্যবসায়িক সম্প্রসারণকে প্রতিকূলভাবে প্রভাবিত করতে পারে এবং অনুগত করদাতাদের উপর অতিরিক্ত কর আরোপ করতে পারে। ফিকি’র নির্বাহী পরিচালক টি.আই.এম নুরুল কবির স্বাক্ষরিত বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এ তথ্য জানানো হয়।

নুরুল কবির বলেন, ইতিবাচক দিক হিসেবে, অর্থ অধ্যাদেশ ২০২৫ নির্দিষ্ট খাতের উপর চাপ কমানো এবং আরও নির্ভরযোগ্য কর ব্যবস্থা তৈরির প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করে। নির্মাণ কোম্পানি এবং অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের উপর উৎস কর হ্রাস করা একটি বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ, যা গুরুত্বপূর্ণ শিল্পগুলোর জন্য স্বস্তি প্রদান করবে। এছাড়া, যৌথ উদ্যোগ থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশের উপর উৎস কর আরোপ না করা আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী কোম্পানিগুলোর জন্য একটি সুসংবাদ, যা জয়েন্ট ভেঞ্চার পর্যায়ে ইতোমধ্যে কর আরোপিত লাভের উপর দ্বৈত কর প্রতিরোধ করে। আমরা আন্তর্জাতিক কর ব্যবস্থার সাথে সামঞ্জস্য রেখে দ্বৈতকর পরিহার চুক্তিকে আয়কর আইন ২০২৩-এর উপর প্রাধান্য দেয়ার উদ্যোগ সাধুবাদ জানাই।

বিজ্ঞাপন

কিছু বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে তিনি বলেন, তবে অর্থ অধ্যাদেশ ২০২৫-এর বেশ কিছু বিতর্কিত বিষয়ও রয়েছে। পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানিগুলোর জন্য, যাদের শেয়ারের ১০% এর কম আইপিওর মাধ্যমে ইস্যু করা হয়েছে, তাদের জন্য অতিরিক্ত ৭.৫% কর আরোপের প্রস্তাব উদ্বেগজনক। বর্ধিত হারে এই করের প্রভাব বৈষম্যমূলক বলে মনে হয়।

এছাড়া, ব্যাংকিং মাধ্যমে লেনদেন নিশ্চিত করার জন্য যে হ্রাসকৃত করহার লাভ করার সুবিধা ছিল তাও বাদ দেয়া হয়েছে। এরফলে, করের হার ২৭.৫%-এ উন্নীত করার প্রস্তাব আনুষ্ঠানিক অর্থনীতি গড়ে তোলার জাতীয় প্রচেষ্টার বিপরীত এবং ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ার মতো অর্থনীতির তুলনায় বাংলাদেশকে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে দেবে। আরেকটি হতাশাজনক দিক হলো বেতনভোগী করদাতাদের উপর প্রভাব। যদিও, প্রাথমিক স্তরে করমুক্ত আয়ের সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে, কিন্তু, সামগ্রীক পরিবর্তন বিবেচনায় প্রবর্তিত পরিবর্তন মধ্য আয়ের করদাতাদের উপরে অতিরিক্ত করের বোঝা সৃষ্টি করবে।

বাণিজ্যিক আমদানিকারকদের জন্য নতুন ৭.৫% অগ্রিম কর (এটি) প্রবর্তন, স্থানীয় মূল্য সংযোজন ৫০ শতাংশের নিচে হলে আর কোনো ভ্যাট প্রদানের প্রয়োজন নেই -যা কিনা বাণিজ্যিক আমদানিকারকদের জন্য ভ্যাট প্রদান সহজ করবে কিন্তু এটি খরচ বাড়াতে পারে যদি মূল্য সংযোজন কম হয়। কর রেয়াত ও ফেরতের সময়সীমা চার মাস থেকে ছয় মাসে বাড়ানোর ফলে চলতি মূলধন সংকটে থাকা ব্যবসায়ীদের জন্য উপকার হবে।

অনলাইন বিক্রয়ের উপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করায় দেশের অনলাইন ব্যবসায়ের প্রতিষ্ঠানগুলোকে হুমকির মুখে ফেলবে এবং ব্যবসা সম্প্রসারণে বাধা সৃষ্টি করবে বলে মনে করে সংস্থাটি।

কাস্টমস আইন, ২০২৩ আরো আধুনিক ও কার্যকর করতে কিছু সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে। শুল্ক কাঠামো বাণিজ্য লক্ষ্যমাত্রা এবং শুল্ক পুনর্গঠনের সঙ্গে সামঞ্জস্য করা হয়েছে। পণ্য শ্রেণীবিভাগ সহজতর করতে অসংখ্য এইচএস কোড সংশোধন, একত্রীকরণ বা নতুনভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে। পণ্য ট্র্যাকিং উন্নত করার জন্য নতুন এইচএস কোড চালু করা হয়েছে, যা বাণিজ্য ব্যবস্থাপনাকে আরও দক্ষ ও স্বচ্ছ করবে।

আমদানি নিয়ন্ত্রন সম্পর্কিত বিধি লঙ্ঘন ও কার্গো ঘোষণায় ত্রুটির জরিমানা কমানো হয়েছে, যা আমদানি প্রক্রিয়া সহজ করবে বলে মত দিয়েছে তারা।

এমএস

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত