
রোহান রাজিব

একসময়ের লাভজনক ইসলামী ব্যাংক ২০১৭ সালে নিয়ন্ত্রণ নেয় পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। ব্যাংকটির মালিকানা নেওয়ার পর থেকে নামে-বেনামে অন্তত ৭৯ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে এই ব্যবসায়ী গ্রুপ। ফলে ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ইসলামী ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ মুক্ত করা হয়। ব্যাংকের বোর্ড পরিবর্তন করে বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন বোর্ড গঠন করে দেয়। সেই বোর্ডের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। পরিবর্তন আসে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদেও। এ পদে আসেন ওমর ফারুক খান। নতুন বোর্ড গঠনের পর ব্যাংকের বিভিন্ন আর্থিক সূচকে অগ্রগতি হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে ব্যাংকটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে নগদ জমা সংরক্ষণ অনুপাত (সিআরআর) ঘাটতি থাকলেও এখন তা আট হাজার কোটি টাকা ইতিবাচক অবস্থায় রয়েছে।
ব্যাংকের ঘুরে দাঁড়ানো, বর্তমান পরিস্থিতি ও আগামী দিনের পরিকল্পনা নিয়ে গতকাল বুধবার আমার দেশের সঙ্গে কথা বলেছেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওমর ফারুক খান।
আমার দেশ : ১০ মাস হলো আপনি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। এ সময় ব্যাংকের কী কী পরিবর্তন করেছেন?
ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ : বাংলাদেশ ব্যাংক আমাকে দায়িত্ব দেওয়ার পর বোর্ডের সবাইকে নিয়ে বসে প্রথম মিটিংয়ে এস আলম গ্রুপের সঙ্গে অনৈতিক কাজে জড়িত শীর্ষ পর্যায়ের সাতজন কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করেছি। এরপর এস আলম এ ব্যাংকের কতটা ক্ষতি করে গেছে, তা বের করতে চারটি আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিয়েছি, যা অন্য কোনো ব্যাংক করেনি। এসব প্রতিষ্ঠান গত ১০ মাস কাজ করে সবকিছু বের করে ফেলেছে। এসব অডিট রিপোর্টের ভিত্তিতে এস আলমের বিরুদ্ধে দুই ধরনের মামলা করেছি। কারণ তার লেনদেনের মধ্যে সিভিল ও ক্রিমিনাল দুটো পার্ট ছিল। সীমার মধ্যে যেসব ঋণ নিয়েছে, তার জন্য সিভিল মামলা করেছি। আর ম্যানিপুলেট করে যেসব ঋণ নেওয়া হয়েছে তার জন্য ক্রিমিনাল মামলা করা হয়। এস আলম শুধু ঋণ নিয়ে ক্ষতি করেনি, সে বিদেশি করেসপন্ড ব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করেছে। ইসলামী ব্যাংক এখনো রেমিট্যান্সে প্রথম। সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার কারণে ব্যাংকের পর্যাপ্ত ডলার থাকা সত্ত্বেও এলসি খুলতে পারছি না। তাই এসব ডলার অন্য ব্যাংকে বিক্রি করে দিতে হচ্ছে। আরেকটি খারাপ করে গেছে সে অধিকাংশ শাখার ঋণ বন্ধ করে দিয়েছে। এসব শাখা ঋণ বিতরণ করতে না পেরেও ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। সেসব ঋণের অর্থ এক জায়গায় করে নিয়ে গেছে। গত ১০ মাসে ৩০টির মতো মিটিং করে এক হাজার ২০০ ফাইল ডিসক্লোস করেছি। এই ব্যাংক সচল আছে মরে যায়নি। এখন ইসলামী ব্যাংক একদম ঝুঁকিমুক্ত অবস্থায় রয়েছে।
আমার দেশ : গত ১০ মাসে ইসলামী ব্যাংকের আর্থিক সূচক কতটা উন্নতি করতে পেরেছেন?
ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ : ইসলামী ব্যাংক আমানত সংগ্রহ, ঋণ বিতরণ ও রেমিট্যান্স আহরণ করেছে। যতটুকু পারছি, ততটুকু এলসি খুলে যাচ্ছি। গত ১০ মাসে ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার আমানত বেড়েছে। বর্তমানে মোট আমানত দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা, যা ব্যাংকিং খাতে সর্বোচ্চ। এ সময় নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে ২৪ লাখ ৩০ হাজার ৬০০টি। এসব ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আমানত হয়েছে ৩২ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে ব্যাংকটি নগদ জমা সংরক্ষণ অনুপাত (সিআরআর) ঘাটতি থাকলেও এখন তা আট হাজার কোটি টাকা ইতিবাচক রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে চলতি হিসাবের ঘাটতি দুই হাজার ৩০৮ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে এক হাজার ৫০০ কোটি টাকায় নিয়ে এসেছি। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে আমরা কোনো ধারও নিচ্ছি না। ১০ মাসে এটা অনেক বড় সফলতা। আগামী ছয় মাসের মধ্যে আরো পরিবর্তন দেখা যাবে, সেভাবে পরিকল্পনা নিয়েছি। আশাকরি ২০২৬ সাল শেষে মোট আমানত দুই লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
আমার দেশ : ইসলামী ব্যাংকের ঋণ বা বিনিয়োগ বিতরণ কার্যক্রম সম্পর্কে যদি বলতেন?
ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ : আমাদের ঋণ বিতরণ সীমা ছিল পাঁচ কোটি টাকা। তবে আমাদের অগ্রগতি ভালো দেখে বাংলাদেশ ব্যাংক তা বাড়িয়ে ২০ কোটি টাকা করে দিয়েছে। মূলত আমানত বৃদ্ধির কারণে বিনিয়োগের সীমা বাড়ানো হয়েছে। আমরা এখন এসএমইকে প্রাধান্য দিয়ে বিনিয়োগ করছি। নানা প্রতিকূলতা থাকার পরও আমরা ঋণ বিতরণ করে ব্যবসা করছি। এ ছাড়া ইসলামী ব্যাংক সারা দেশে ৩৪ হাজার ৯০০ গ্রামে উদ্যোক্তা সৃষ্টির মাধ্যমে যুগান্তকারী আর্থসামাজিক রূপান্তর ঘটাতে সক্ষম হয়েছে। এ প্রকল্প শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করেছে, যে বিনিয়োগের ৯৭.৩৮ শতাংশই ফেরত এসেছে। বর্তমানে সারা দেশে এ প্রকল্পের আওতায় আট লাখ ৪৬ হাজার উদ্যোক্তার মধ্যে ছয় হাজার ৬০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকের মোট বিনিয়োগ রয়েছে এক লাখ ৮৩ হাজার কোটি টাকা।
আমার দেশ : এস আলম ও অন্যান্য গ্রাহকদের ঋণ আদায় পরিস্থিতি কেমন?
ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ : আমরা ঋণ আদায়ে নিয়মিত গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। এখন পর্যন্ত এস আলম থেকে চার হাজার ৮০০ কোটি টাকা আদায় করেছি। যদিও সে ১০ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার কথা ছিল। আর অন্যান্য গ্রাহক থেকে আদায় হয়েছে তিন হাজার ১৫৭ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে আমরা বিভিন্ন ব্যাংকের দেনা প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি টাকা পরিশোধ করেছি। এস আলম থেকে অর্থ আদায় করতে ইতোমধ্যে ৩০ থেকে ৪০টি মামলা করা হয়েছে।
আমার দেশ : রেমিট্যান্স ও রপ্তানিতে ইসলামী ব্যাংকের বর্তমান অবস্থা কী?
ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ : ইসলামী ব্যাংক রেমিট্যান্সে এখনো শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। গত ১০ মাসে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করেছে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। এ সময় রপ্তানি থেকে আয় ২ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার। আমদানি বাবদ ৪ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। এরপরও ২ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত ছিল, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। রিজার্ভ বাড়াতেও ইসলামী ব্যাংক ভূমিকা রাখছে। আমাদের এলসি সমস্যা যেটা হচ্ছে, সেটা কাটিয়ে উঠতে পারলে বেশি আকারে এলসি খোলা হবে। এই ব্যাংকের মাধ্যমে এলসি খোলার জন্য ব্যবসায়ীরা অপেক্ষা করছেন।
আমার দেশ : ইসলামী ব্যাংককে ভবিষ্যতে কোন অবস্থায় দেখতে চান?
ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ : ইসলামী ব্যাংক আগে যে অবস্থায় ছিল, ভবিষ্যতে সে অবস্থায় দেখতে চাই। এশিয়ার মধ্যে সেরা ব্যাংক ছিল, সে জায়গায় আবার নিয়ে যেতে চাই। আশা করি, সে জায়গায় চলে যাবে। আমরা সেভাবে কাজ করছি। এমডিসহ শীর্ষ পর্যায়ের অন্যান্য কর্মকর্তাদের সেভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আগের অবস্থানে ফিরে যাব।
একসময়ের লাভজনক ইসলামী ব্যাংক ২০১৭ সালে নিয়ন্ত্রণ নেয় পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। ব্যাংকটির মালিকানা নেওয়ার পর থেকে নামে-বেনামে অন্তত ৭৯ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে এই ব্যবসায়ী গ্রুপ। ফলে ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ইসলামী ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ মুক্ত করা হয়। ব্যাংকের বোর্ড পরিবর্তন করে বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন বোর্ড গঠন করে দেয়। সেই বোর্ডের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। পরিবর্তন আসে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদেও। এ পদে আসেন ওমর ফারুক খান। নতুন বোর্ড গঠনের পর ব্যাংকের বিভিন্ন আর্থিক সূচকে অগ্রগতি হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে ব্যাংকটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে নগদ জমা সংরক্ষণ অনুপাত (সিআরআর) ঘাটতি থাকলেও এখন তা আট হাজার কোটি টাকা ইতিবাচক অবস্থায় রয়েছে।
ব্যাংকের ঘুরে দাঁড়ানো, বর্তমান পরিস্থিতি ও আগামী দিনের পরিকল্পনা নিয়ে গতকাল বুধবার আমার দেশের সঙ্গে কথা বলেছেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওমর ফারুক খান।
আমার দেশ : ১০ মাস হলো আপনি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। এ সময় ব্যাংকের কী কী পরিবর্তন করেছেন?
ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ : বাংলাদেশ ব্যাংক আমাকে দায়িত্ব দেওয়ার পর বোর্ডের সবাইকে নিয়ে বসে প্রথম মিটিংয়ে এস আলম গ্রুপের সঙ্গে অনৈতিক কাজে জড়িত শীর্ষ পর্যায়ের সাতজন কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করেছি। এরপর এস আলম এ ব্যাংকের কতটা ক্ষতি করে গেছে, তা বের করতে চারটি আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিয়েছি, যা অন্য কোনো ব্যাংক করেনি। এসব প্রতিষ্ঠান গত ১০ মাস কাজ করে সবকিছু বের করে ফেলেছে। এসব অডিট রিপোর্টের ভিত্তিতে এস আলমের বিরুদ্ধে দুই ধরনের মামলা করেছি। কারণ তার লেনদেনের মধ্যে সিভিল ও ক্রিমিনাল দুটো পার্ট ছিল। সীমার মধ্যে যেসব ঋণ নিয়েছে, তার জন্য সিভিল মামলা করেছি। আর ম্যানিপুলেট করে যেসব ঋণ নেওয়া হয়েছে তার জন্য ক্রিমিনাল মামলা করা হয়। এস আলম শুধু ঋণ নিয়ে ক্ষতি করেনি, সে বিদেশি করেসপন্ড ব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করেছে। ইসলামী ব্যাংক এখনো রেমিট্যান্সে প্রথম। সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার কারণে ব্যাংকের পর্যাপ্ত ডলার থাকা সত্ত্বেও এলসি খুলতে পারছি না। তাই এসব ডলার অন্য ব্যাংকে বিক্রি করে দিতে হচ্ছে। আরেকটি খারাপ করে গেছে সে অধিকাংশ শাখার ঋণ বন্ধ করে দিয়েছে। এসব শাখা ঋণ বিতরণ করতে না পেরেও ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। সেসব ঋণের অর্থ এক জায়গায় করে নিয়ে গেছে। গত ১০ মাসে ৩০টির মতো মিটিং করে এক হাজার ২০০ ফাইল ডিসক্লোস করেছি। এই ব্যাংক সচল আছে মরে যায়নি। এখন ইসলামী ব্যাংক একদম ঝুঁকিমুক্ত অবস্থায় রয়েছে।
আমার দেশ : গত ১০ মাসে ইসলামী ব্যাংকের আর্থিক সূচক কতটা উন্নতি করতে পেরেছেন?
ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ : ইসলামী ব্যাংক আমানত সংগ্রহ, ঋণ বিতরণ ও রেমিট্যান্স আহরণ করেছে। যতটুকু পারছি, ততটুকু এলসি খুলে যাচ্ছি। গত ১০ মাসে ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার আমানত বেড়েছে। বর্তমানে মোট আমানত দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা, যা ব্যাংকিং খাতে সর্বোচ্চ। এ সময় নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে ২৪ লাখ ৩০ হাজার ৬০০টি। এসব ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আমানত হয়েছে ৩২ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে ব্যাংকটি নগদ জমা সংরক্ষণ অনুপাত (সিআরআর) ঘাটতি থাকলেও এখন তা আট হাজার কোটি টাকা ইতিবাচক রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে চলতি হিসাবের ঘাটতি দুই হাজার ৩০৮ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে এক হাজার ৫০০ কোটি টাকায় নিয়ে এসেছি। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে আমরা কোনো ধারও নিচ্ছি না। ১০ মাসে এটা অনেক বড় সফলতা। আগামী ছয় মাসের মধ্যে আরো পরিবর্তন দেখা যাবে, সেভাবে পরিকল্পনা নিয়েছি। আশাকরি ২০২৬ সাল শেষে মোট আমানত দুই লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
আমার দেশ : ইসলামী ব্যাংকের ঋণ বা বিনিয়োগ বিতরণ কার্যক্রম সম্পর্কে যদি বলতেন?
ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ : আমাদের ঋণ বিতরণ সীমা ছিল পাঁচ কোটি টাকা। তবে আমাদের অগ্রগতি ভালো দেখে বাংলাদেশ ব্যাংক তা বাড়িয়ে ২০ কোটি টাকা করে দিয়েছে। মূলত আমানত বৃদ্ধির কারণে বিনিয়োগের সীমা বাড়ানো হয়েছে। আমরা এখন এসএমইকে প্রাধান্য দিয়ে বিনিয়োগ করছি। নানা প্রতিকূলতা থাকার পরও আমরা ঋণ বিতরণ করে ব্যবসা করছি। এ ছাড়া ইসলামী ব্যাংক সারা দেশে ৩৪ হাজার ৯০০ গ্রামে উদ্যোক্তা সৃষ্টির মাধ্যমে যুগান্তকারী আর্থসামাজিক রূপান্তর ঘটাতে সক্ষম হয়েছে। এ প্রকল্প শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করেছে, যে বিনিয়োগের ৯৭.৩৮ শতাংশই ফেরত এসেছে। বর্তমানে সারা দেশে এ প্রকল্পের আওতায় আট লাখ ৪৬ হাজার উদ্যোক্তার মধ্যে ছয় হাজার ৬০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকের মোট বিনিয়োগ রয়েছে এক লাখ ৮৩ হাজার কোটি টাকা।
আমার দেশ : এস আলম ও অন্যান্য গ্রাহকদের ঋণ আদায় পরিস্থিতি কেমন?
ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ : আমরা ঋণ আদায়ে নিয়মিত গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। এখন পর্যন্ত এস আলম থেকে চার হাজার ৮০০ কোটি টাকা আদায় করেছি। যদিও সে ১০ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার কথা ছিল। আর অন্যান্য গ্রাহক থেকে আদায় হয়েছে তিন হাজার ১৫৭ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে আমরা বিভিন্ন ব্যাংকের দেনা প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি টাকা পরিশোধ করেছি। এস আলম থেকে অর্থ আদায় করতে ইতোমধ্যে ৩০ থেকে ৪০টি মামলা করা হয়েছে।
আমার দেশ : রেমিট্যান্স ও রপ্তানিতে ইসলামী ব্যাংকের বর্তমান অবস্থা কী?
ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ : ইসলামী ব্যাংক রেমিট্যান্সে এখনো শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। গত ১০ মাসে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করেছে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। এ সময় রপ্তানি থেকে আয় ২ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার। আমদানি বাবদ ৪ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। এরপরও ২ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত ছিল, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। রিজার্ভ বাড়াতেও ইসলামী ব্যাংক ভূমিকা রাখছে। আমাদের এলসি সমস্যা যেটা হচ্ছে, সেটা কাটিয়ে উঠতে পারলে বেশি আকারে এলসি খোলা হবে। এই ব্যাংকের মাধ্যমে এলসি খোলার জন্য ব্যবসায়ীরা অপেক্ষা করছেন।
আমার দেশ : ইসলামী ব্যাংককে ভবিষ্যতে কোন অবস্থায় দেখতে চান?
ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ : ইসলামী ব্যাংক আগে যে অবস্থায় ছিল, ভবিষ্যতে সে অবস্থায় দেখতে চাই। এশিয়ার মধ্যে সেরা ব্যাংক ছিল, সে জায়গায় আবার নিয়ে যেতে চাই। আশা করি, সে জায়গায় চলে যাবে। আমরা সেভাবে কাজ করছি। এমডিসহ শীর্ষ পর্যায়ের অন্যান্য কর্মকর্তাদের সেভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আগের অবস্থানে ফিরে যাব।

আর আমদানির ওপর নির্ভরতা নয়— এখন থেকে দেশেই উৎপাদিত হবে সকল ধরনের বালাইনাশক ও কীটনাশক। এতে শুধু বিদেশনির্ভরতা কমবে না, নতুন করে রপ্তানির পথও খুলে যাবে বলে আশা করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
৩ মিনিট আগে
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী বর্তমান রিজার্ভের পরিমাণ ২৭ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার।
৪ ঘণ্টা আগে
ফের বড় ধরনের তারল্য সংকটে পড়েছে দেশের শেয়ারবাজার। বুধবার দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হয়েছে মাত্র ৩৫৫ কোটি টাকা, যা গত চার মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে গত ২৩ জুন ডিএসইতে সর্বনিম্ন ২৭৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল।
৫ ঘণ্টা আগে
দাবা বিশ্বকাপে বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিনিধিত্বকারী মনন রেজা নীড়ের বিশ্বজয়ের যাত্রার অংশীদার হতে পেরে গর্বিত বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ।
৭ ঘণ্টা আগে