তুলা আমদানিতে অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহার দাবি বিটিএমএ’র

বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ জুলাই ২০২৫, ২১: ৫৬

অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে তুলা আমদানিতে আরোপিত ২ ভাগ অগ্রিম আয়কর (এআইটি) প্রত্যাহার, ১৫% কর্পোরেট ট্যাক্স পুনর্বহাল এবং দেশীয় টেক্সটাইল মিলে উৎপাদিত কটন সুতা ও কৃত্রিম আঁশের সংমিশ্রণে তৈরি সুতার ওপর কেজিপ্রতি ৫ টাকা সুনির্দিষ্ট কর অব্যাহতির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)।

বিজ্ঞাপন

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সোমবার অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রহমান খান এবং এনবিআরের অন্যান্য কর্মকর্তারা।

বৈঠকে বিটিএমএ প্রতিনিধিদল প্রতিবেশী দেশ ভারতের টেক্সটাইল খাত কীভাবে সরকারি প্রণোদনার সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশে তুলা ও সুতা রপ্তানি বাড়াচ্ছে এবং এর ফলে দেশীয় শিল্প কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে—তা তুলে ধরে। প্রতিনিধিরা বলেন, ২% এআইটি বসানো হলে তা শুধু টেক্সটাইল শিল্পের ওপর চাপ নয়, বরং কর সমন্বয়ের প্রক্রিয়ায় প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি করে ব্যবসায়ীদের হয়রানি করবে।

তারা আরও জানান, তুলার ওপর AIT থাকলে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সুতার তুলনায় আমদানি করা সুতাই বেশি লাভজনক হয়ে উঠবে। ফলে দেশীয় টেক্সটাইল শিল্প বিপর্যস্ত হবে এবং সরকার রাজস্ব হারাবে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে বিপুল পরিমাণ তুলা খালাসের অপেক্ষায় আছে বলে বৈঠকে জানানো হয়।

বৈঠকে বিটিএমএ প্রতিনিধি দল সরকারকে অনুরোধ জানায়, অবিলম্বে এআইটি প্রত্যাহার ও ইতোমধ্যে জমাকৃত তুলা খালাসে সৃষ্ট ডেমারেজ চার্জ মওকুফ করতে। তাঁরা অভিযোগ করেন, তুলার আমদানি মূল্য ভুলভাবে বেশি করে মূল্যায়ন করা হচ্ছে, যার ফলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এবং বিদেশি সুতা আমদানিতে উৎসাহিত হচ্ছেন।

এছাড়া স্থানীয় শিল্পের সুরক্ষায় টেক্সটাইল খাতের জন্য পূর্বে বলবৎ ১৫% কর্পোরেট ট্যাক্সের মেয়াদ বাড়ানো এবং এটি ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত আরএমজি খাতের ন্যায় কার্যকর রাখার দাবি জানানো হয়।

বিটিএমএ জানায়, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত কটন ও কৃত্রিম সুতার কাপড় দেশের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ ব্যবহার করে। সুতার মূল্য বাড়লে কাপড়ের দাম বাড়বে এবং এতে তারা দেশীয় পণ্যের ব্যবহার থেকে সরে যাবে, যার ফলশ্রুতিতে শিল্প রুগ্ণ হয়ে পড়বে এবং ব্যাংক ও আর্থিক খাতও ঝুঁকির মুখে পড়বে।

বৈঠকে বিটিএমএ’র প্রেসিডেন্ট শওকত আজিজ রাসেলসহ সাবেক প্রেসিডেন্ট মতিন চৌধুরী ও তপন চৌধুরী, বিসিআই প্রেসিডেন্ট আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ, বিভিন্ন কারখানার শীর্ষ কর্মকর্তাসহ বিটিএমএ-এর একাধিক পরিচালক উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত