চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে চাল, বেড়েছে সবজির দাম

সরদার আনিছ
প্রকাশ : ২০ জুলাই ২০২৫, ০৬: ১৬
ছবি: সংগৃহীত

সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে কোনো খাদ্যপণ্যের দাম কমেনি। চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল। কাঁচাবাজারে সব ধরনের সবজি বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। টানা বৃষ্টির কারণে গত দেড় সপ্তাহ ধরে কাঁচা মরিচের দাম সবচেয়ে বেশি বেড়ে কেজিপ্রতি ৩২০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। কিন্তু গত দুদিনে বৃষ্টি থেমে এখন কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে। তবে অন্য বাজারের তুলনায় কারওয়ান বাজারে দাম কিছুটা কম। এখানে ১০০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ বিক্রি হতে দেখা গেছে।

গতকাল রাজধানীর শান্তিনগর কাঁচাবাজারে সরেজমিন ঘুরে কথা হয় কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে। দোকানি আশরাফুল জানান, কয়েকদিন ধরেই সবজির বাজার চড়া। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। তার মতে, টানা বৃষ্টির আগে কাঁচা মরিচের দাম ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি, গত কয়েকদিন বেড়ে তা ৩২০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। গত দুদিন ধরে বৃষ্টি থেমে যাওয়ায় কাঁচা মরিচের দামও কিছুটা কমেছে। এখন তা ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

পাশের দোকানদার আব্দুর রহিম বলেন, টানা বৃষ্টিতে কাঁচা মরিচের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় পাইকারি বাজার থেকেই আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এ ছাড়া সব ধরনের সবজির দাম তো পাইকারি বাজারেই বেশি।

বেলাল নামের এক ক্রেতা সবজি কিনতে এসে বলেন, সব ধরনের সবজিই তো বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে চালের দাম। ফলে আমাদের মতো খেটে খাওয়া মানুষের সংসারের খরচ বাড়লেও ইনকাম তো বাড়েনি। তাহলে বুঝতেই পারছেন আমরা কেমন আছি।

শনিবার এ বাজারের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায়, বেশির ভাগ সবজি কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৮০ টাকার ওপর। এর মধ্যে প্রতি কেজি করলা, ঢ্যাঁড়শ, লাউ, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, ধুন্দল, কচুরলতি, বরবটি ও কাঁকরোল ৬০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হতো। কিছুদিন আগেও এসব সবজির দাম কম ছিল। বেগুনের দাম বেড়ে কেজিপ্রতি ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৫০ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে পেঁপে, মিষ্টিকুমড়া, পটোলসহ কয়েকটি সবজি। সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়ে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে কাঠিলাল আলু ৪০ টাকা, বগুড়ার লাল আলু ৩৫ টাকা এবং ডায়মন্ড আলু ৩০ টাকা। তবে (টিসিবি) গতকাল শনিবার বাজার দরের তথ্য বলছে, রাজধানীর কয়েকটি কাঁচাবাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়।

তবে টমেটো, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি ও ধনেপাতার মতো অমৌসুমি সবজির দাম বেশি। প্রতি কেজি টমেটো ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা, শিম ২২০-২৫০ টাকা, ধনেপাতা ৩০০-৩৫০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।

মোকাম থেকে পাইকারি বাজারে সবজির সরবরাহ কম থাকায় এর প্রভাব পড়েছে মাছ ও মুরগির বাজারে। আগের সপ্তাহ থেকে কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা বেড়ে চাষের রুই আকারভেদে ৩৮০ থেকে ৪৫০, তেলাপিয়া ২৫০ থেকে ২৮০, পাঙাশ ২০০ থেকে ২৫০, কই ২৮০ থেকে ৩০০, পাবদা ও শিং ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়।

গত সপ্তাহে মুরগির দাম কিছুটা বেড়েছিল, সে বাড়তি দামেই ব্রয়লার মুরগির কেজি এখন ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। সোনালি মুরগি ২৮০ থেকে ৩১০ টাকায়। প্রতি ডজন মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। তবে গরু ও খাসির মাংসের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭০০-৭৫০ টাকা ও খাসির মাংস ১১০০ টাকা।

পেঁয়াজ, রসুন, আদা আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬৫, রসুন ১৪০ থেকে ২০০, আদা ১৪০ থেকে ২২০ বিক্রি হচ্ছে। আর কয়েক সপ্তাহ আগে মিনিকেটের দাম যেভাবে বেড়েছিল, সে বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। তীর, ডায়মন্ড, সাগর, মঞ্জুর, রশিদ ইত্যাদি ব্র্যান্ডের প্রতি কেজি মিনিকেট চাল এখন ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোজাম্মেল মিনিকেটের দাম প্রতি কেজি ৯০ টাকা। এ ছাড়া প্রতি কেজি স্বর্ণা (মোটা চাল) ৫৫-৫৮ টাকা, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ (মাঝারি চাল) জাতের চাল ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অবশ্য শান্তিনগরের আশপাশের কয়েকটি বাজারে সব পণ্যের দাম একটু বেশি লক্ষ করা গেছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত