৪ বছরে বেক্সিমকোর ৯৭ মিলিয়ন ডলার পাচার

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২০: ৩৬

১৭টি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে গত ৪ বছরে বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে ৯৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিভিন্ন দেশে পাচারের ঘটনা ঘটেছে।

এই অর্থ পাচারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান এএসএফ রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান ও আহমেদ শাহরিয়ার রহমানসহ মোট ২৮ জন ব্যক্তি।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া জড়িত মোট ১৯টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডি জানিয়েছে, ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে সালমান এফ রহমানসহ অভিযুক্ত ২৮ ব্যক্তি ও ১৯টি প্রতিষ্ঠান অর্থ পাচারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মর্মে দায়ের করা মামলার তদন্তে নিশ্চিত হয় সিআইডি। রপ্তানির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দুবাইয়ের আর আর গ্লোবাল ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে চলে যেত সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইউকে, ইউএসএ, আয়ারল্যান্ড ও পৃথিবীর অন্যান্য দেশে। আর আর গ্লোবাল ট্রেডিংয়ের মালিক মূলত সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান এবং এএসএফ রহমান এর ছেলে আহমেদ শাহরিয়ার রহমান। তাদের নামেই নিবন্ধিত আর আর গ্লোবাল ট্রেডিং।

রোববার বিকেল ৪ টার দিকে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিআইডি প্রধান পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহ।

তিনি জানান, বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে প্রায় ৯৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্যের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের অনুমোদন পেয়েছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট। বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান এএসএফ রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান এবং অন্যান্য সহযোগীরা মোট ১৭টি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে এই অর্থ পাচারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

তিনি আরও জানান, প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- অ্যাডভেঞ্চার গার্মেন্টস, অ্যাপোলো অ্যাপারেল, অটাম লুপ অ্যাপারেলস, বেক্সটেক্স গার্মেন্টস, কসমোপলিটন অ্যাপারেলস, কজি অ্যাপারেলস, এসেস ফ্যাশন, ইন্টারন্যশনাল নিটওয়্যার অ্যান্ড কজি অ্যাপারেলস, কাঁচপুর কজি অ্যাপারেলস, মিডওয়েস্ট অ্যাপারেলস, পালেস গার্মেন্টস, পিঙ্ক মেকার অ্যাপারেলস, প্লাটিনাম গার্মেন্টস, স্কাইনেট অ্যাপারেলস, স্প্রিং ফুল অ্যাপারেলস, আরবান ফ্যাশন এবং উইন্টার স্ট্রিন্ট গার্মেন্টস লি.।

তারা এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জনতা ব্যাংক পিএলসি, মতিঝিল শাখা, ঢাকা থেকে এলসি বা বিক্রয় চুক্তির ব্যবস্থা করেছিল। তবে রপ্তানির বিপরীতে অর্জিত অর্থ দেশে ফেরত নিয়ে আসেনি। এভাবে রপ্তানির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দুবাইয়ের আর আর গ্লোবাল ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে চলে যেত সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইউকে, ইউএসএ, আয়ারল্যান্ড ও পৃথিবীর অন্যান্য দেশে।

আর আর গ্লোবাল ট্রেডিংয়ের মালিকানা সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান এবং এএসএফ রহমান এর ছেলে আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের নামে নিবন্ধিত। এই প্রক্রিয়ায় ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে মোট বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১২শ কোটি টাকা রপ্তানি দেখানো হয়েছে। কিন্তু রপ্তানির বিপরীতে অর্জিত অর্থ দেশে ফেরত আনা হয়নি; অর্থাৎ রপ্তানিমূল্য প্রত্যাবাসন না করে বিদেশে অর্থপাচার করা হয়েছে।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত