আমদানির প্রভাব নেই চালে, বাড়তি দামেই বিক্রি সবজিসহ নিত্যপণ্য

সরদার আনিছ
প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৫, ২০: ৫৭
আপডেট : ২৩ আগস্ট ২০২৫, ১৫: ৫০

আমদানির খবরে পেঁয়াজের দাম কমলেও চালের বাজারে প্রভাব নেই। কারওয়ান বাজারের পাইকারি বিক্রেতা বাবুল মিয়া বলেন, চলতি সপ্তাহে ভারত থেকে আমদানির খবরে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত কমে পাইকারি ৭০টাকা আর খুচরাবাজারে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেইসঙ্গে বাজারে চাহিদাও কমেছে। এতে পেঁয়াজের দাম আরো কমতে পারে বলে জানান তিনি।

তবে চালের বাজারে আমদানির কোনো প্রভাব পড়েনি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বৃহস্পতিবার বিকালে চাঁদপুর রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী বাচ্চু মিয়া আমার দেশকে বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় সব ধরনের মিনিকেট চালের দাম বস্তাপ্রতি ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছে কোম্পানিগুলো। আমরাও সেহারে কিছু বাড়তি দামেই বিক্রি করছি।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরো বলেন, চালের দাম কমার কোনো লক্ষণ দেখছিনা। মিলমালিকরা উঁৎপেতে বসে আছেন আমদানির অনুমতি বন্ধ হলেই তারা চালের দাম আবারো বাড়ানোর জন্য। তার মতে, কর্পোরেট কোম্পানিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে আমদানি বাড়িয়েও চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে না। এ জন্য সরকারের উচিত বেশি আমদানির পাশাপাশি পাইকারি পর্যায়ে কঠোরভাবে বাজার মনিটরিং করা।

একই এলাকার খুচরা বিক্রেতা ইমাম উদ্দিন বাবলু আমার দেশকে বলেন, আগের বাড়তি দামেই চাল বিক্রি হচ্ছে; চালের দাম কমেনি। কমারও কোনো সম্ভাবনা দেখছি না।

মসুর ডালের দাম কেজিপ্রতি ২০টাকা বেড়ে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোটা মসুর ডালের দাম কেজিপ্রতি ৫ টাকা বেড়ে ১০০টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে টানা বৃষ্টির অজুহাতে সব ধরনের সবজি আগের সপ্তাহের মতো বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। সবজি বিক্রেতারা বলছেন, একদিকে টানা বৃষ্টি অন্যদিকে মৌসুমের শেষ- এই দুই কারণে সরবরাহ কমে সবজির চাহিদা বেড়েছে।

এতে করে সবজি কিনতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন সাধারণ ক্রেতারা। সবজির বাজারে আলু আর পেঁপের দামই একটু কম, অন্য সব সবজি নিম্ন ও মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। পেঁপে আলু ছাড়া ৮০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই বললেই চলে।

সবজির অতিরিক্ত দামের কারণ জানিয়ে কারওয়ানবাজারে সবজি বিক্রেতা জাকিয়া আমার দেশকে বলেন, পাইকারি বাজারে আমাদের অতিরিক্ত দামে সব সবজি কিনতে হচ্ছে। বেশিরভাগ সবজির মৌসুম এখন শেষ, নতুন করে সবজি বাজারে ওঠার আগ পর্যন্ত এ অবস্থা চলতে পারে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর শান্তিনগর, নয়াবাজার ও কারওয়ানবাজারে সবজির বাজারে এমন বাড়তি দামের চিত্রই লক্ষ করা গেছে। বৃহস্পতিবার বিকালে কারওয়ান বাজারের মসজিদের সামনে থেকে ২৫০ গ্রাম কাঁচা মরিচ ৬০টাকায় কিনেন রাজাবাজার এলাকার রঙ মিস্ত্রী সালাউদ্দিন। তিনি বলেন, সপ্তাহ দুয়েক আগেও এই কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১২০টাকায়। শুধু কাঁচা মরিচ নয়, সব ধরনের সবজির অতিরিক্ত দাম।

বৃহস্পতিবার বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি পেঁপে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়, আলু ২০ থেকে ২২টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা, পটল ৮০ টাকা, ধুন্দুল ৮০ টাকা, টমেটো ১৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৬০ টাকা, মুলা ৮০ টাকা, করোলা ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া, প্রতি কেজি ঢেঁড়স ৮০ টাকা, শসা ৭০-৮০ টাকা, বেগুন (গুল) ১৬০টাকা, বেগুন (লম্বা) ৮০-৯০ টাকা, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ২৪০ থেকে ২৮০টাকা, কঁচু প্রতি কেজি ৬০ টাকা এবং গাজর প্রতি কেজি ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আগের সপ্তাহের বাড়তি দামেই ডিম ডজনে ১৩০ থেকে ১৪০টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে পাড়া মহল্লার দোকানের ১৫০টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৮০টাকা, সোনালি মুরগি ২৮০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তবে গরু ও খাসির মাংসের দাম স্থিতিশীল, প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭০০-৭৫০ টাকা ও খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ টাকা থেকে ১ এক হাজার ২০০টাকা।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত