বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের অন্যতম ভিত্তি কটন স্পিনিং সেক্টর বর্তমানে সংকটের মুখে। উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি, আমদানিভিত্তিক কাঁচামালের চাপ, বৈষম্যমূলক নীতি, এবং বৈদেশিক বাজারের প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ায় একের পর এক মিল উৎপাদন বন্ধ করে দিচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য জরুরি সরকারি হস্তক্ষেপ ও নীতিগত সমন্বয়ের দাবি জানান স্পিনিং মিলের শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তারা।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দেশের শীর্ষস্থানীয় স্পিনিং মিলগুলোর প্রতিনিধিরা এই দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ইঞ্জিনিয়ার আজহার আলী, সিওও, সালমা গ্রুপ, ইঞ্জিনিয়ার এবিএম সিরাজুল ইসলাম, পরিচালক, যমুনা গ্রুপ, ইঞ্জিনিয়ার শাহিনুল হক, পরিচালক (অপারেশন), মোশারফ কম্পোজিট, ইঞ্জিনিয়ার শান্তিময় দত্ত, অ্যাডভাইজার, আহমেদ গ্রুপ, ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম আজাদ, পরিচালক, আরমাডা গ্রুপ, মো. রুহুল আমিন, নির্বাহী পরিচালক, গ্রীনটেক্স স্পিনিং।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা জানান, দেশের সুতাকেন্দ্রিক ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্প যে সংকটে পড়েছে, তা শুধু স্পিনিং মিল নয়—পুরো পোশাক রপ্তানি খাতকেই হুমকিতে ফেলছে। কটন স্পিনিং সেক্টর দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের ব্যাকবোন। কিন্তু গ্যাস–বিদ্যুৎ খরচের লাগামহীন বৃদ্ধি, ভ্যাট–শুল্ক বৈষম্য, আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য প্রতিযোগিতা এবং কাঁচামাল আমদানিতে বাধাসহ বিভিন্ন কারণে শিল্পটি টিকে থাকার লড়াই চালাচ্ছে।
মিল প্রতিনিধিরা স্পিনিং শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, ৪০ শতাংশ স্পিনিং মিল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে এতে এক লাখেরও বেশি শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা বাস্তবিক অর্থেই কাজহীন অবস্থায় পড়েছেন। যে মিলগুলো চালু আছে, সেগুলোও অর্ধেক ক্ষমতায় চলছে, ফলে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্প ধ্বংসের মুখে।
তারা আরো বলেন, এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে দেশের রপ্তানি আয়ের অন্যতম প্রধান খাত চরম ক্ষতির মুখে পড়বে।
মিল প্রতিনিধিদের বক্তব্য— ‘বাংলাদেশের পোশাক শিল্প রক্ষায় স্পিনিং সেক্টরকে স্থিতিশীল রাখতে হবে। সরকার আন্তরিক হলে এই সংকট কাটিয়ে উঠা সম্ভব। দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপই শিল্পকে টেকসই পথে ফিরিয়ে আনতে পারে।’
তারা আশা প্রকাশ করেন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং নীতিনির্ধারকরা দ্রুত উদ্যোগ নেবেন এবং দেশের অন্যতম বৃহৎ রপ্তানিমুখী শিল্পকে রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

