পিএসসি সংস্কারে বাধা দিলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি : বাগছাসের

পিএসসি (বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন) সংস্কারে বাধা দেওয়া হলে আবারও আন্দোলনে নামতে বাধ্য হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার।

শুক্রবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শহীদ সাজিদ অ্যাকাডেমিক ভবনের নিচে আয়োজিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্নিসন্তান ও সাহসী সাংবাদিকদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘আমরা শুনেছি ২০০১ থেকে ২০০৭ সালে বগুড়ার আজিজুল হক কলেজে ভর্তি হলেই চাকরি পাওয়া যেত। আমরা সেই সব কিছু আর ফেরত চাই না। পিএসসি সংস্কারে বাধা দেওয়া হলে আবার আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।’

তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৫ জুলাই জগন্নাথের বিশাল মিছিল আমাদের আন্দোলনকে আরও সুসংবদ্ধ করেছিল।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিন। বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম।

তিনি বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিশাল মিছিল বের হতো, যেখানে সামনে থাকতো নারীরা আর পেছনে ছেলেরা ঢাল হয়ে থাকতো। কেন বারবার শিক্ষার্থীদের বুকের তাজা রক্ত দিতে হবে? কেন শুধু ছাত্রদেরই প্রস্তুত থাকতে হবে দেশের ক্রান্তিলগ্নে? এই সরকার ছাত্রদের ত্যাগের ওপর দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু তাদের কথা শোনে না, তাদের কাছে আসে না। তারপরও আপনাদের কৃতজ্ঞতা জানাই—কারণ দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে আপনারা রাজপথে ছিলেন এবং আশা করি ভবিষ্যতেও থাকবেন।’

বাগছাসের কেন্দ্রীয় মুখ্য সংগঠক তাহমিদ আল মুদাসসীর বলেন, ‘কেন আমাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে বারবার আন্দোলন করতে হবে? কেন আমরা পড়ার টেবিলে ফিরে যেতে পারছি না? রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য জুলাই সনদ প্রয়োজন নয়, বরং নিরাপত্তা প্রয়োজন রাষ্ট্রের জন্য। বিপ্লবীরা কখনও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা চায় না, বরং রাষ্ট্রকেই শৃঙ্খলিত করে।’

বাগছাস জবি শাখার মুখপাত্র ফেরদৌস শেখ বলেন, ‘জুলাই বিপ্লব আমাদের ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের গৌরবময় অধ্যায়। দল-মত ভুলে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলাম। সেই ভ্রাতৃত্ব ও সহমর্মিতার শক্তি আজকের আয়োজনেও প্রতিফলিত হয়েছে। আন্দোলনের প্রকৃত শক্তি আসে ঐক্য থেকে, যা অধিকার আদায়ের পথে আমাদের এগিয়ে নেবে।’

বাগছাস জবি শাখার সেক্রেটারি মো. শাহীন মিয়া বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী ছাত্র সংগঠন হিসেবে আহত এবং সম্মুখসারিতে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া সাহসী সাংবাদিকদের স্বীকৃতি ও সম্মাননা জানাতে আমরা এই আয়োজন করেছি। একত্রিত হওয়ার সেই তাড়না থেকেই আজকের এই কর্মসূচি।’

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ থেকে জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় শিক্ষার্থী, সাংবাদিক সংগঠন প্রেসক্লাব, সাংবাদিক সমিতি ও রিপোর্টার্স ইউনিটির সদস্যদের সম্মাননা ক্রেস্ট ও জাতীয় পতাকা প্রদান করা হয়।