ধারণ ক্ষমতার কয়েকগুণ বেশি বৃষ্টি, জলাবদ্ধতায় চরম ভোগান্তিতে নগরবাসী

বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৫, ১০: ৪৩
আপডেট : ৩০ মে ২০২৫, ১১: ৩৪

দিনব্যাপী বৃষ্টির কারণে বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় এবং জনদুর্ভোগ বেড়ে যায়। নিউমার্কেট, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, ধূপখোলা, গেণ্ডারিয়া সহ বিভিন্ন সড়কে পানি জমে যায়। এর ফলে সড়কে গাড়ির চাপ বৃদ্ধি পায়। অনেক স্থানে বৃষ্টির পানিতে সড়ক ডুবে থাকতে দেখা যায়। মূল সড়ক ও বিভিন্ন অলিগলিতে পানি জমে থাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। জলাবদ্ধতার কারণে বিপাকে পড়েন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী মানুষ।

বিজ্ঞাপন

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা আজ সকাল সাড়ে ৯টায় আমার দেশকে বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি বৃহস্পতিবার রাতেই স্থলভাগে উঠে আসায় ধীরে ধীরে দুর্বল হতে থাকে। এরপরও এর প্রভাব আজ শুক্রবার সারাদিন ধরেই থাকতে পারে।

গভীর নিম্নচাপটি এখনো স্থল গভীর নিম্নচাপ রূপে আছে। এটি ধীরে ধীরে আরো দুর্বল হয়ে উত্তর থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে যেতে পারে। এর প্রভাবে আজ ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আজ শুক্রবার সকাল থেকেই রাজধানীর আকাশ মেঘলা এবং বৃষ্টি হচ্ছে। রাজধানীতেও আজ সারা দিন এভাবে বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া স্থল গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে আজ শুক্রবার দেশের পাঁচ বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। আগামীকাল শনিবারও রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অনেক জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। গভীর নিম্নচাপের পরবর্তী সময়ে সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এই বৃষ্টি হতে পারে।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ধারণ ক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বৃষ্টি হওয়ায় গোটা রাজধানীতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। প্রধান সড়কসহ অলিগলিতে পানিতে থৈ থৈ করছে। এতে বিভিন্ন এলাকায় ঘরবাড়িতেও পানি উঠে গেছে। মিরপুর ও কাজীপাড়া এলাকায় প্রধান সড়কেও পানি থৈ থৈ করছে।

ঢাকা সিটি করপোরেশন কর্মকর্তারা বলছেন, ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তা দ্রুত সময়ে নিষ্কাশনের সক্ষমতা তাদের রয়েছে। এর বেশি বৃষ্টি হলে তারা নিরুপায়। আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে ১৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া দেশের নোয়াখালীতে সর্বোচ্চ ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

নিম্নচাপের প্রভাবে ব্যাপক বৃষ্টির মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় অতি বর্ষণের কারণে।

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় ভারী বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। উঁচু জোয়ারে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ভোলা-পটুয়াখালীসহ কয়েকটি এলাকায় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। টানা বৃষ্টিতে অনেক এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন উপকূলের বাসিন্দারা। উত্তরাঞ্চলেও নদনদীর পানি বেড়েছে। অনেক এলাকার মানুষ বাড়িঘরে আটকা পড়েছেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত