লতিফ সিদ্দিকী-সাংবাদিক পান্নার জামিন আবেদন নাকচ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯: ৩৬

ঢাকার শাহবাগ থানার সন্ত্রাস বিরোধ আইনের মামলায় সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী ও সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান পান্নার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিব উল্লাস পিয়াস এ আদেশ দেন।

বিজ্ঞাপন

গত ২৮ আগস্ট ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির একটি প্রোগ্রাম থেকে লতিফ সিদ্দিকী, সাংবাদিক পান্নাসহ ১৬ জনকে আটক করা হয়। শুক্রবার শাহবাগ থানার সন্ত্রাস বিরোধ আইনের গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

গতকাল লতিফ সিদ্দিকীর মেডিকেল রিপোর্ট না পাওয়ার কারণে জামিন আবেদন করেও তা প্রত্যাহার করে নেয় আইনজীবী। এদিন আবারও লতিফ সিদ্দিকীর পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ কামরুল হোসেন ও ইফফাত জাহান রনি জামিন চেয়ে আবেদন করেন। সাংবাদিক পান্নার পক্ষে ফারজানা ইয়াসমিন রাখী জামিন আবেদন করেন।

লতিফ সিদ্দিকীর পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ কামরুল হোসেন বলেন,'লতিফ সিদ্দিকী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এটা কারো অজানা না। ঘরোয়া পরিবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, সাংবাদিক, সমাজের বিশিষ্ট লোকদের মব ভায়োলেন্স করে উত্তেজিত হয়ে মারধর করে। তিনি কিন্তু আওয়ামী লীগের আমলেও জেলে ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের কথা বললেই ফ্যাসিস্ট, আওয়ামী বানিয়ে দেন। তাহলে কি মুক্তিযুদ্ধের সব অর্জন আওয়ামী লীগের। অনেক দলে অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছে। ৮৭ বছর বয়সের একজন লোক। তাছাড়া তিনি অসুস্থ। তার জামিনের প্রার্থনা করছি।'

সাংবাদিক পান্নার পক্ষে আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখী বলেন,'এজাহারে সাংবাদিক পান্নার বিরুদ্ধে একটা সিঙ্গেল লাইনও নেই। আলোচনা সভা করার আগে কিন্তু ডিএমপির অনুমতি ছিলো। যারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কনসার্ন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভাবে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করতে সমাজের ভদ্র স্বভাবের মানুষ লাঞ্চিত হলো। যারা লাঞ্চিত করলো তাদের বিরুদ্ধে মামলা মামলা না দিয়ে যারা লাঞ্চিত হলো তাদের বিরুদ্ধে মামলা করলো। তার জামিনের প্রার্থণা করছি।

শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুরের আদেশ দেয়।

প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই জিন্নাত আলী এতথ্য নিশ্চিত করেন।

মামলার বিবরণী অনুযায়ী, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার গভীর ষড়যন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি বন্ধের লক্ষ্যে গত ৫ অগাস্ট "মঞ্চ ৭১" নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। এ সংগঠনের উদ্দেশ্য জাতির অর্জনকে মুছে ফেলার সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে বাংলাদেশের জনগনকে সঙ্গে নিয়ে আত্মত্যাগের প্রস্তুতি নেয়া। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গত ২৮ আগস্ট সকাল ১০ টায় একটি গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সেগুনবাগিচাস্থ সকাল ১১ টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) তে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এর মধ্যেই এক দল ব্যক্তি হট্টগোল করে স্লোগান দিয়ে সভাস্থলে ঢুকে পড়েন। একপর্যায়ে তারা অনুষ্ঠানস্থলের দরজা বন্ধ করে দেন। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া কয়েকজনকে লাঞ্ছিতও করেন। হট্টগোলকারীরা গোলটেবিল আলোচনার ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন এবং আলোচনায় অংশ নেওয়াদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। একপর্যায়ে অতিথিদের অনেককেই বের করে দেওয়া হলেও আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী এবং অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা। পরে পুলিশ এসে ১৬ জনকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগ থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করেন এসআই আমিরুল ইসলাম। পরবর্তীতে এ মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

অপর আসামিরা হলেন-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান (কার্জন), গোলাম মোস্তফা, জাকির হোসেন, মো. তৌছিফুল বারী খাঁন, আমির হোসেন সুমন, মো. শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, আব্দুল্লাহীল কাইউম, কাজী এটিএম আনিসুর রহমান বুলবুল,মো. মহিউল ইসলাম ওরফে বাবু,  মো. আল আমিন, মো. নাজমুল আহসান, সৈয়দ শাহেদ হাসান, দেওয়ান মোহম্মদ আলী এবং মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত