শেষ মুহূর্তে লতিফ সিদ্দিকীর জামিন আবেদন প্রত্যাহার

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০: ৪২
আপডেট : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০: ৪৩

রাজধানীর শাহবাগ থানায় সন্ত্রাস বিরোধ আইনের মামলায় জামিন আবেদন করেও শুনানির ঠিক আগ মুহূর্তে সেটি প্রত্যাহার করেছেন সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী।

বুধবার দুপুরে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সেফাতুল্লাহর আদালতে তার জামিন বিষয়ে শুনানির সময় ঠিক করেন। এরপর শুনানির আগে আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষ পক্ষের আইনজীবীরা আদালতের এজলাসে উপস্থিত হন। শুনানির এক পর্যায়ে এসে লতিফ সিদ্দিকীর জামিন আবেদন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে লতিফ সিদ্দিকীর আইনজীবী তাহমীম মহিমা বাঁধন জানান, লতিফ সিদ্দিকী প্রথমে ওকালতনামায় স্বাক্ষর করতে চাননি। পরে সাংবাদিক জেড আই খান পান্নার ওকালতনামা দেখে তিনি স্বাক্ষর করেন।

জামিন আবেদন প্রত্যাহারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা লতিফ সিদ্দিকীর পক্ষে জামিন আবেদন করি। তিনি একজন বয়স্ক, অসুস্থ মানুষ। তার অসুস্থতার বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে মেডিক্যাল রিপোর্ট দেওয়ার কথা ছিল। সেটা দেখিয়ে জামিনের জন্য শুনানি করার কথা ছিল। কিন্তু শুনানির আগে মেডিক্যাল রিপোর্ট সরবরাহ করতে পারেনি পরিবার। এ জন্য তার জামিনের আবেদন আমরা প্রত্যাহার করে নেই।’

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন বলেন, 'গত শুক্রবার শাহবাগ থানায় সন্ত্রাস বিরোধ আইনে করা মামলায় সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীসহ ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। রাষ্ট্রবিরোধী, সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ড করার কারণেই কিন্তু তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এরা সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ডের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তারা ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে ফেরানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। লতিফ সিদ্দিকী ‘মঞ্চ ৭১’-এর ব্যানারকে পুঁজি করে প্রকৃতপক্ষে দেশকে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে অস্থিতিশীল করতে এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র করেছেন। তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।’

মামলায় অভিযোগ, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার গভীর ষড়যন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি বন্ধের লক্ষ্যে গত ৫ আগস্ট ‘মঞ্চ ৭১’ নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। এ সংগঠনের উদ্দেশ্য জাতির অর্জনকে মুছে ফেলার সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে বাংলাদেশের জনগনকে সঙ্গে নিয়ে আত্মত্যাগের প্রস্তুতি নেয়া। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গত ২৮ আগস্ট সকালে গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সেগুনবাগিচাস্থ সকাল ১১ টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) তে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এর মধ্যেই এক দল ব্যক্তি হট্টগোল করে স্লোগান দিয়ে সভাস্থলে ঢুকে পড়েন। একপর্যায়ে তারা অনুষ্ঠানস্থলের দরজা বন্ধ করে দেন। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া কয়েকজনকে লাঞ্ছিতও করেন। হট্টগোলকারীরা গোলটেবিল আলোচনার ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন এবং আলোচনায় অংশ নেওয়াদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। একপর্যায়ে অতিথিদের অনেককেই বের করে দেওয়া হলেও আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী এবং অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা। পরে পুলিশ এসে ১৬ জনকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগ থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করেন এসআই আমিরুল ইসলাম। পরবর্তীতে এ মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

অপর আসামিরা হলেন-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান (কার্জন), সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্না, কাজী এটিএম আনিসুর রহমান বুলবুল,মো. মহিউল ইসলাম ওরফে বাবু, মো. আল আমিন, মো. নাজমুল আহসান, সৈয়দ শাহেদ হাসান, দেওয়ান মোহম্মদ আলী এবং মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন।

গত শুক্রবার এ মামলায় সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, হাফিজুর রহমান (কার্জন), মো. আব্দুল্লাহ আল আমিনসহ ১৬ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত