প্লট দুর্নীতি মামলা

হাসিনা-রেহানা ও টিউলিপের বিরুদ্ধে বাদীর সাক্ষ্য গ্রহণ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২৫, ১৭: ৩৪

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৩০ কাঠা প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীসহ অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে পৃথক তিন মামলায় প্রথম দিনে সাক্ষ্য দিয়েছেন দুদক কর্মকর্তারা।

বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলমের আদালতে পৃথক তিন মামলায় এ সাক্ষ্য দেন তারা। তবে আসামিদের পক্ষে কোন আইনজীবী না থাকায় তাদের জেরা হয়নি। সাক্ষীরা হলেন দুদকের উপপরিচালক সালাহউদ্দিন, সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া এবং সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান।

বিজ্ঞাপন

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, পৃথক তিন মামলার বাদী দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন, সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া ও এস এম রাশেদুল হাসানকে আদালত হাজি হয়ে সাক্ষ্য প্রদান করেছেন।

তিনি আরো জানান, সাক্ষ্য দিয়ে বাদীরা আদালতকে বলেছেন, ঢাকায় বাড়ি থাকা সত্ত্বেও তা হলফনামায় গোপন করে ক্ষমতার অপব্যবহার মাধ্যমে রাজউকের পূর্বাচলে ৩০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করতেই রাজউকসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা অবৈধভাবে শেখ হাসিনা পরিবারকে এসব প্লট বরাদ্দ দেয়।

এদিন দুপুর ১টা ৫০ মিনিটের দিকে সাক্ষ্য শুরু হয়। একে একে তিনজন সাক্ষ্য দেন। পরে বিকেল পৌনে ৩টায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। এরপর আদালত আগামী ২৮ আগস্ট মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য নতুন দিন ধার্য করেন।

গত ৩১ জুলাই এসব মামলায় চার্জগঠন করে বিচার শুরু আদেশ দেন একই আদালত। চার্জগঠন শুনানির সময়ে আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। পৃথক তিন মামলায় শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীসহ ২৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। অপর তিন মামলায় শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ৪৭ জনকে আসামি করা হয়।

গত ২০ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ ও ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ আদালতে তিনটি করে মোট ছয়টি মামলা বিচারের জন্য পাঠানো হয়।

শেখ পরিবার ছাড়া এসব মামলায় অন্য আসামিরা হলেন, জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লাহ খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদ, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মো. নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য মেজর (ইঞ্জিনিয়ার) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন।

প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে পৃথক ৬ মামলা দায়ের করে দুদক। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও অপর মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকসহ আরো অনেককে আসামি করা হয়। সম্প্রতি সবগুলো মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত