ঢাকার কেরানীগঞ্জে হাসনাবাদ হাউজিং এলাকায় একটি মাদরাসা বিল্ডিংয়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় প্রধান আসামি আল আমিনের আশ্রয় দাতা আহসান উল্লাহর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাজুল ইসলাম সোহাগের আদালত এ আদেশ দেন।
এদিন বিকেলে আসামিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক মো. জহুরুল ইসলাম আসামিকে নিজ হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দশ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড আবেদন শুনানিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, প্রধান অভিযুক্ত আসামি আল আমিন ঘটনার পর এ আসামির কাছে আশ্রয় নেন। আল আমিনের সঙ্গে এ আসামির কারাগারে পরিচয় হয়েছে। এ আসামিরা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। প্রধান আসামিকে শনাক্ত ও অন্যান্য আসামিদের বের করার জন্য এবং সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামির দশ দিনের রিমান্ডে নেওয়া একান্ত প্রয়োজন। তবে এদিন আসামি পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিল না।
এ সময় আদালত আসামিকে জিজ্ঞেসা করেন, আপনি কি কিছু বললেন? তখন আসামি বলেন, আমি হকারি করতাম। আমি এ ঘটনার সাথে জড়িত নয়। আমি এর কিছুই জানি না।
এ মামলায় গত ২৮ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার আরও ৬ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এর আগে গত ২৭ ডিসেম্বর ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে কয়েকটি ড্রামভর্তি প্রায় ৪০০ লিটার তরল রাসায়নিক, ৪টি ককটেলসদৃশ বস্তু, একটি ল্যাপটপ ও ২টি মনিটর উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনার পর থেকে মাদ্রাসার পরিচালক ও এ মামলার প্রধান আসামি শেখ আল আমিন পলাতক রয়েছে। মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ২৬ ডিসেম্বর সকাল ১০টা ২৫ মিনিটের এই মাদ্রাসার মধ্যে বিকট শব্দে কক্ষের চারদিকের দেয়ালসমূহ, ছাদের কিছু অংশ ভেঙে বিধ্বস্ত হয়ে আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে এ ঘটনার সংবাদ পেশে সিআইডি ক্রাইম সিন ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক সাইফুর রহমান এবং উপপরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে এন্টি টেররিজম ইউনিটের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, র্যাব, ফায়ার সার্ভিসসহ একাধিক টিম ঘটনাস্থলে হাজির হয় এবং তারা বিস্তর উদ্ধার অভিযান ও আলামত সংগ্রহের কাজ শুরু করে। দীর্ঘ ২ দিনব্যপী উদ্ধার অভিযান শেষে আলামত সংগ্রহকালে দেখা যায় যে, পলাতক আসামি আল আমিনের ভাড়া বাসা ভিতরে বিপুল পরিমাণে বোমা বানানোর সরঞ্জামাদিসহ হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড, এসিটোন, নাইট্রিক এসিড, সাদা রংয়ের পাউডারসহ একাধিক ক্যামিক্যালের জারকিন এবং কালো প্লাস্টিকে মোড়ানো ৯ টি তাজা ককটেল উদ্ধার করেন সিআইডি ক্রাইম সিন ইউনিট। এছাড়াও সেখানে অভিযান চালিয়ে ৪০০ লিটার তরল রাসায়নিক ও বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
ওই ঘটনায় ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের থানার উপপরিদর্শক ইসলাম লিটন সন্ত্রাসী বিরোধী আইনে বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

