আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকার লা গ্যালারি, ধানমন্ডিতে চলছে শিল্পী শৈলী শ্রাবন্তীর একক চিত্রকলা প্রদর্শনী ‘এই শহরের হাওয়াবিবি’।
‘হাওয়াবিবি’—এক পৌরাণিক প্রতীকী চরিত্র, যিনি নিঃশব্দে নগর ভূমিতে বিচরণ করেন, সমাজ, সংস্কৃতি ও প্রতীকের মধ্যকার সেই সব শক্তিকে পর্যবেক্ষণ করেন, যা নারীর জীবনের গতিপথ নির্ধারণ করে। শিল্পী শ্রাবন্তীর ৪৫–৪৭টি মিশ্র মাধ্যমে রচিত শিল্পকর্মে প্রাচ্য চিত্রের ঐতিহ্যবাহী কৌশল মিলিত হয়েছে সমসাময়িক উপাদানের সঙ্গে—যেমন জলরঙের ওয়াশ, অ্যাক্রিলিক, কলম, মাটি এবং স্থানীয় উপকরণ। এর মধ্য দিয়ে শিল্পী অনুসন্ধান করেছেন প্রাচীন ও আধুনিক নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা, যা যুগে যুগে নারীর স্বতন্ত্রতাকে আবদ্ধ করে রেখেছে।
নারীজীবনের অভিজ্ঞতায় মিথ, স্মৃতি ও শহুরে জীবন কীভাবে একসূত্রে গাঁথা, তা প্রত্যক্ষ করার জন্য হাওয়াবিবি এক অনন্য দৃষ্টিকোণ হয়ে ওঠে। প্রদর্শনীটি মনে করিয়ে দেয় প্রতিদিনের জীবনে লুকিয়ে থাকা প্রতিরোধের ক্ষুদ্র অথচ শক্তিশালী প্রকাশগুলিকে, যা স্বাধীনতা, স্বকীয়তা ও কণ্ঠের অবিরাম সন্ধানকে প্রতিফলিত করে—এক এমন পৃথিবীতে, যা এখনও পিতৃতান্ত্রিক কাঠামোর প্রভাব বহন করছে।
শিল্পী শৈলী শ্রাবন্তী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে ওরিয়েন্টাল আর্টে বিএফএ ও এমএফএ ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তাঁর শিল্পচর্চায় সমসাময়িক ওরিয়েন্টাল কৌশল ও পৌরাণিক আখ্যানের সমন্বয়ে নারীর বহুমুখী অভিজ্ঞতা প্রতিফলিত হয়েছে। প্রতীকী ও সূক্ষ্ম ভিজ্যুয়াল ভাষার মাধ্যমে তিনি সংগ্রাম, সহনশীলতা ও রূপান্তরকে অন্বেষণ করেন, যেখানে ঐতিহাসিকভাবে নারীর হয়ে বলা কাহিনিগুলো নতুনভাবে উচ্চারিত হয়। তাঁর শিল্পকর্ম নীরবতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এবং সাংস্কৃতিক ইতিহাসে নারীর অবস্থানকে নতুন দৃষ্টিকোণে উপস্থাপন করে।
প্রদর্শনীটি সর্বসাধারণের জন্য খোলা থাকবে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, সোমবার থেকে শনিবার বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।

