ক্যারিয়ারের শুরু থেকে জীবনমুখী গান করেন প্রজন্মের শিল্পী আসিফ আলতাফ। জুলাই অভ্যুত্থানকালে ‘স্টেপ ডাউন হাসিনা’ ও ‘দালালের বন্যা’ গেয়ে তুমুল জনপ্রিয়তা পান এই শিল্পী। তার আগে গেয়েছেন ‘ফ্যাসিবাদী পাগলা ঘোড়া’ ও ‘কাঁটাতার’ শিরোনামের জীবনমুখী গান।
এবার গানে গানে তুলে ধরলেন ভোলাবাসীর প্রাণের দাবি ভোলা-বরিশাল সেতুর প্রয়োজনীয়তা। গানটির শিরোনাম ‘সেতু চাই’। তিনি নিজেই লিখেছেন, সুর করেছেন এবং গেয়েছেন। রোববার গানটি পোস্ট করেছেন আসিফ আলতাফ নামের ফেসবুক আইডি ও পেজে। মুহূর্তে ভোলাবাসী ও দেশের গানের শ্রোতারা গানটি লুফে নিয়েছে।
এমএম হাসান মাদ্রাজী নামে একজন লিখেছেন, ‘গানের ভাষায় সুরে সুরে ভোলাবাসীর যৌক্তিক দাবিগুলো সুন্দরভাবে তুলে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রাণের দ্বীপ জেলা ভোলার কৃতী সন্তান, সাবেক মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন শাহজাহান সাহেবের সুযোগ্য সাহেবজাদা আসিফ আলতাফ ভাইকে।’ সাদিউল আশিক ইমন লিখেছেন, ‘আপনার কোনো আন্দোলনের এখন পর্যন্ত ব্যর্থ হয়নি। আশা করি, এই আন্দোলনে ব্যর্থ হবে না। সাফল্য বয়ে আসুক ভোলাবাসীর জন্য।’ মোহাম্মাদ আরিফ লিখেছেন, ‘এটা নয় শুধু একটা গান, এটা ভোলাবাসীর অধিকার। দাবি উচ্চারিত হোক গানে গানে, সীমাহীন ভালোবাসা, প্রিয় ভাই।’ রনক রায়হান লিখেছেন, ‘এটা নয় শুধু একটা গান, এটা ভোলাবাসীর অধিকার আদায়ে অসামান্য অবদান। ভোলার মানুষ হিসেবে আপনার এই অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। দাবি একটাই—সেতু চাই।’
গানটি নিয়ে আসিফ আলতাফ আমার দেশকে বলেন, ‘২৫ লাখ মানুষের ভোলা আজও বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন। এই দ্বীপজেলায় আছে প্রকৃতির অমূল্য ভান্ডার, বিচ্ছিন্নতার কারণে যার সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পুরো দেশ। তাছাড়া স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও জনজীবন ব্যাহত হচ্ছে বিচ্ছিন্নতার কারণে। ভোলাবাসীর এখন একক দাবি—ভোলা বরিশাল সেতু। আমি যেহেতু মানুষের জন্য গান করি, এবার সেই মানুষের আহাজারি তুলে ধরেছি সুরে সুরে। এটা কেবল একটা গান নয়, আমার সারা জীবনের চাওয়া। আশা করি সরকার দ্রুত ভোলা-বরিশাল সেতু বাস্তবায়নে এগিয়ে আসবে।’
ক্যারিয়ারের প্রথম দিকে ‘জুতো’ ও ‘যন্ত্র’ গান দিয়ে স্বকীয়তা প্রকাশ করেন আসিফ আলতাফ। জীবনমুখী গানের শিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তীর সঙ্গে ‘কাঁটাতার’, ‘লক্ষ্য একই’; এরপর শ্রোতাদের একের পর এক উপহার দেন ন্যান্সির সঙ্গে ‘সুবহি সাদিক’, লগ্নজিতা চক্রবর্তীর সঙ্গে ‘দূরত্ব’ ও ‘প্রেমে পড়ি’। গানগুলো বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতের বাংলা ভাষাভাষী শ্রোতারা পছন্দ করেছেন। তার গাওয়া ‘টাকা’ শিরোনামের গানটি এক কোটির বেশি দর্শক উপভোগ করেছেন। জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে ভারতের চাপিয়ে দেওয়া বন্যা ও এদেশের ভারতীয় দালালদের নিয়ে লেখেন প্রতিবাদী গান ‘দালালের বন্যা’। গানটি তখন কয়েক কোটি দর্শক শুনেছেন। উল্লিখিত গানগুলো ছাড়াও আসিফ আলতাফের ‘আমার পাড়ায়’, ‘ঠিক হাজার বছর পর’, ‘এক কাপ চা’, সুফি ঘরানার গান ‘ফিকির’সহ বেশকিছু গান ভিন্নধর্মী শ্রোতাদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।

