আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকার লা গ্যালারিতে চলছে কার্লাস এর দলীয় শিল্পকর্ম প্রদর্শনী ‘ইন কোয়েস্ট অফ পিস’।
প্রদর্শনীতে ৮ জন শিল্পীর প্রায় ৫০ টি চিত্রকর্ম প্রদর্শিত হচ্ছে। ৬ ডিসেম্বর উদ্বোধন হওয়া প্রদর্শনীতে প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিল্পী ও চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-এর প্রাক্তন শিক্ষক, আর্ট বাংলা ফাউন্ডেশন চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনুস। সন্মানিত অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট স্থপতি, শিল্প সংগঠক লুভা নাহিদ চৌধুরী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক।
একইসাথে একই বিদ্যাপীঠে [চারুকলা ইনস্টিটিউট (অধুনা চারুকলা অনুষদ), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়] কাটিয়ে এবং একই বছরে শিক্ষা সমাপন করার ফলে পরস্পরের তাঁরা অন্তরঙ্গ বন্ধু, যারা পরস্পরের শৈল্পিক প্রকাশভঙ্গির সাথেও পরিচিত। যদিও পরবর্তী বছরগুলোতে, জীবন তাঁদেরও গ্রাস করে নিয়েছিলো, কিন্তু বন্ধু-আড্ডার এক সমাবেশেই তারা নিজেদের অমিত সম্ভাবনার কথা ভাবতে শুরু করে। সেই ভাবনার আলোকেই ২০১৬ কালারস-এর প্রথম প্রদর্শনী, পরবর্তীতে যা একটি নিয়মিত সাংবৎসরিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। অনুষ্ঠাতব্য প্রদর্শনী টি ‘কালারস’ এর দ্বাদশ বা ১২ তম প্রদর্শনী। বিগত নয় বছর ধরেই এই সব প্রদর্শনী শুধু দর্শক শিল্পী সংযোগ নয়, একসাথে পথ চলা ও নিজেদের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধির উদযাপনও বটে, একই সাথে নিজেদের শিল্প ভাবনার বিবর্তন এবং চর্চা সম্পর্কে আলোচনারও সুযোগ।
ফারহানা আফরোজ বাপ্পি প্রতিনিয়ত নিরীক্ষায় মগ্ন, বিমূর্ত ধারার এ শিল্পীর কাজ প্রতি প্রদর্শনীতেই নতুনত্ব দেখিয়ে চলেছেন, এবারের প্রদর্শনীর শিল্পর্কমে তিনি চমৎকার জলজ-ঐন্দ্রজালের সৃষ্টি করেছেন, যা তাঁর গভীর আত্নমগ্নতার প্রতিফলন। ফারজানা ইসলাম মিল্কীর গভীর অভিনিবেশ ভার্ষ্কযে, আকারে বড় না হলেও গড়ন কৌশল দক্ষতায় ফারজানার শিল্পকর্ম দৈনিক পত্রিকার ব্যবহারের মধ্য দিয়ে ভার্ষ্কযের অপরিহার্য গুণ মনুমেন্টাল অনুভতি জাগ্রত করে। মনিরা সুলতানা মুক্তার মাধ্যম, সিরামিক বা মৃৎ শিল্প, তাঁর কাজে র্বতমান চমকপ্রদ বিষয় হলো তিনি পোড়ামাটির ফলকের (টেরাকোটা) সাথে একেবারেই অপ্রচলিত রঙের ব্যবহার করে একটি সাহসী পথ রচনা করেছেন। রেবেকা সুলতানা সেই সকল শিল্পীদের একজন যাঁরা একটি বিশেষ র্ফম ও মটিফ পুনঃ পুনঃ ব্যবহার করে দক্ষ উপস্থাপনা-অলংকরণের মাধ্যমে মায়াজাল সৃষ্টি করে নিজের যোগ্যতাকে প্রমাণ করেন।
রেহানা ইয়াসমিন-এর সিরামিক্স বা মৃৎশিল্প ঐতিহ্য অনুসারী, ফলে তা ভার্ষ্কযের শ্রেণি ভুক্ত যেমন, তেমনি তা পোড়া মাটিতে প্রাণের সঞ্চার করে। রিফাত জাহান কান্তার চিত্রকর্ম যেন অবচেতন মনের প্রায় রঙহীন ঘুর্ণাবর্তের পর রঙের বাগান। শায়লা আখতার শায়লা মূলত বির্মূত, আধা-বির্মূত, প্রকাশবাদী বির্মূত র্চচায় মগ্ন এক শিল্পী। যাঁর চিত্রকর্মেও মূল বিষয়ের পশ্চাতপটে গতিশীল তুলির আচর ও পরিমিত উজ্জ্বল রঙের র্দশকদেরও অন্যতর এক নান্দনিক অভিজ্ঞতার ভিতর নিয়ে যায়। শারমিন সিরাজী প্রবাসী হলেও তিনি বাংলার প্রকৃতি অন্তপ্রাণ, আর এ কারণেই জলাশয়ে প্রস্ফুটিত শাপলা ও রক্ত পদ্ম সহ বাংলার সাধারণ ফুল তাঁর চিত্রে বারবার ফিরে আসে।

