গেল বছরের মে মাসে মুক্তি পাওয়া অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণের ‘ফাতিমা’ সিনেমাটি দেখা যাচ্ছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বঙ্গতে। বৃহস্পতিবার থেকে সিনেমাটি বঙ্গতে দেখতে পাচ্ছেন দর্শকরা। এটিই ফারিণ অভিনীত প্রথম সিনেমা। যদিও নানা জটিলতায় সিনেমাটি মুক্তি পেতে সময় নিয়েছে ৮ বছর। এর মধ্যে নাটক, ওয়েব সিরিজ ও সিনেমায় অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন এই অভিনেত্রী।

মুক্তির খবর জানিয়ে সিনেমার ট্রেইলার ফেসবুকে পোস্ট করে বঙ্গের পক্ষ থেকে লেখা হয়েছে, ‘আমি যদি তোমার কথা শুনতাম, সব কিছু কি বদলে যেত? ফাতিমার প্রশ্নটা যেন আমাদের সবার। ফাতিমা আসছে ১৭ এপ্রিল, শুধু বঙ্গতে!’

সিনেমার পরিচালক ধ্রুব হাসান জানান, ‘সিনেমাটি গত বছরই ওটিটিতে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল কিন্তু জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সরকার পতনের প্রেক্ষাপটে সেটি হয়নি। দেরিতে হলেও এখন ওটিটির দর্শকরাও সিনেমাটি দেখতে পারবে, সেটি ভালো লাগার।’

তিনি জানান, ফাতিমা এক নারীর সংগ্রামের গল্প। পরিবার ছেড়ে ঢাকা শহরে একটি মেয়ের নতুন করে জীবন শুরু করার সংগ্রাম নিয়ে এগিয়ে গেছে সিনেমার গল্প। একটি ভুল পদক্ষেপে জীবনের সবকিছু যে এলোমেলো হয়ে যেতে পারে সেই সতর্কতাও রয়েছে সিনেমায়। নানা প্রতিবন্ধকতা পার করে ফাতিমা সিনেমাটি নির্মাণে প্রায় আট বছর সময় লেগেছে নির্মাতার। গেল বছরের ২৪ মে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় সিনেমাটি। নির্মাণের শুরুতে সিনেমার নাম ছিল দাহকাল। কিন্তু গল্পের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পরে এর নাম রাখা হয় ফাতিমা। গত বছর ইরানের ৪২তম ফজর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার পায় সিনেমাটি। এ সিনেমা দিয়েই চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেছিলেন নাটকের অভিনয় শিল্পী ফারিণ। সিনেমায় গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন সংগীতশিল্পী পান্থ কানাই, তারিক আনাম খান, ইয়াশ রোহান, শাহেদ আলী সুজন।

নির্মাতা জানান, তিনি এই সিনেমার প্রস্তুতি নেন ২০১৬ থেকে। শুটিং শুরু হয় ২০১৭ সালে। প্রায় ৭০ শতাংশ চিত্রধারণের পর আর্থিক সমস্যায় কাজ আটকে যায়। হুট করেই মাঝপথে নির্মাণ বন্ধ করে দিতে হয়। দাহকাল-এর সেই গল্পটা ছিল কমার্শিয়াল ধাঁচের অ্যাকশন থ্রিলার। ১৯৭১ সালের পরের ঘটনা। সেই গল্পে দুজন মূল চরিত্রের শিল্পী ছিলেন। ফিকশন ছিল। এরপর আর্থিক সংকটের কারণে তাদের সরে আসতে হয়। ধ্রুব বলেন, “তারপর প্রায় এক বছর লাগে গল্পটা নতুন করে লিখতে। দাহকাল গল্পের যে বীরাঙ্গনা চরিত্র ছিল, তার নাম ছিল সুবর্ণা। ওই চরিত্র মাথায় নিয়ে পুরো গল্পটা আমরা আবার নতুন করে লিখি। গল্পের মূল বার্তা পরিবর্তন না করে প্রথম গল্পের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করি। সেখানে দুজন মেয়ের গল্প ছিল। কিন্তু দ্বিতীয়বার যখন পরিবর্তন করা হয় তখন একজনকে রাখতে হয়েছে। তারপর গল্পের সঙ্গে মিল রেখে ফাতিমা নাম রাখা হয়। প্রথম সিনেমার যে ফুটেজটুকু আমাকে বাদ দিতে হয়েছিল সেটার মূল্য হবে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকা। আর ‘ফাতিমা’র কাজ শেষ করি ২০২৩ সালে।”

ক্যারিয়ারের প্রথম সিনেমা করার অনুভূতির কথা জানিয়ে ফারিণ বলেন, ‘২০১৬ সালে যখন এটায় যুক্ত হই, আমার প্রত্যাশা ছিল দাহকাল সিনেমার মাধ্যমে আমার মিডিয়ায় অভিষেক হবে। কিন্তু যখন বন্ধ হয়ে যায় তারপর আমার ক্যারিয়ার পুরোপরি পরিবর্তন হয়ে যায়। আমি সিদ্ধান্ত নিই যে আর সিনেমা করব না। নাটক করব বা অন্য কিছু করব। সিনেমা আর করব না। ২০২৩ সালে এসে আবার সিনেমার শুটিং হয়। দুটি সময়ের শুটিং মিলিয়েই এই সিনেমা।’