Ad T1

যুদ্ধের বিপক্ষে দাঁড়ালেন কবির সুমন-নচিকেতা

বিনোদন রিপোর্টার
প্রকাশ : ০৯ মে ২০২৫, ২২: ৩১

চলমান পাক-ভারত যুদ্ধ নিয়ে ভারতের বিখ্যাত তারকারা উসকানি দিলেও অপারেশন সিঁদুর নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন কোলকাতার দুই গায়ক কবির সুমন ও নচিকেতা চক্রবর্তী। দেশটির গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কবীর সুমন বলেন, আমি যুদ্ধের সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে।

সে যুদ্ধ যেই করুক, যারাই করুক, যেভাবেই করুক, আমি যুদ্ধবিরোধী ব্যক্তি। আমি তো লিখেছিলাম আমার গানে গানে এই যুদ্ধ বন্ধের কথা। সেই গান আজ সব শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের মনে পড়বে।

প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে কবীর সুমন বলেন, এই দেশ যখন ভাগ হয়েছিল আমার অনুমতি নিয়েছিল কেউ? দেশের কোনো মানুষের অনুমতি নিয়েছিল কেউ? দেশের নেতারা কোনো জনগণের অনুমতি নিয়েছিল? আমি উপমহাদেশের নাগরিক! কীসের ভিত্তিতে আমার দেশ ভাগ হয়েছিল?

আমি ১৯৪৯ সালে জন্মেছিলাম। আমি কোথায় জন্মালাম? তখন তো আমার কোনো ব্যক্তিগত পছন্দ ছিল না! আমি তখন থেকেই সব জিনিস সন্দেহের চোখে দেখি। দেশপ্রেম আমার কাছে একটা বুজরুকি। সেখানে মানবপ্রেম নেই। মানুষের জন্য প্রেম নেই, প্রাণীদের জন্য প্রেম নেই।

কবীর সুমন আরো বলেন, একবার ভেবে দেখুন বন্ধু, একটা যুদ্ধ হচ্ছে অস্ত্র চালাচ্ছি আমরা, অথচ কতগুলো প্রাণ হারাচ্ছে যারা এই পৃথিবীর কোনো ক্ষতি করেনি। কতগুলো গাছ বিনা দোষেই পুড়ে মরে যাচ্ছে। আজ অবধি গাছ ধ্বংস নিয়ে কোনো নেতার কোনো মাথাব্যথা নেই। আর যারা দেশপ্রেম দেখাচ্ছেন, তারা পরিবেশের এই সুবিশাল ক্ষতি নিয়ে কোনোরকম তোয়াক্কা করছে না। এই নিয়ে কারো কোনো হেলদোল নেই।

অপারেশন সিঁদুর নিয়েও তিনি ক্ষুব্ধ। এই গায়ক বলেন, সিঁদুর দেখাচ্ছে? কীসের ‘অপারেশন সিঁদুর! আর বেশি বলতে চাই না। আমার মুখ দিয়ে এবার খারাপ খারাপ কথা বেরোবে! আমি ৭৭ বছরের বৃদ্ধ। আমি সম্পূর্ণভাবে এই ‘দেশপ্রেমের’বিরুদ্ধে এবং এই যুদ্ধের বিরুদ্ধে।

যে মতবাদ যুদ্ধ ঘটায় তা নিয়ে ধিক্কার জানিয়ে কবীর সুমন বলেন, যে ধর্মের নামে যুদ্ধ হয় আমি সেই ধর্মকে স্বীকার করি না। সেই ধর্মকে আমি ধিক্কার জানাই। যে মতবাদ যুদ্ধ ঘটায় আমি তাকে ধিক্কার জানাই।

গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন নচিকেতা চক্রবর্তীও। তিনি বলেন, একটাই কারণে আমি যুদ্ধ নিয়ে আতঙ্কিত। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন সাধারণ মানুষ, আপনি-আমি।

স্পষ্টবাদী নচিকেতার দাবি, পৃথিবীতে যত যুদ্ধ হয়েছে, যত হিংসা ছড়িয়েছে সব কটির নেপথ্যে বাণিজ্যিক স্বার্থ রয়েছে। সব যুদ্ধ স্পন্সর করা! আমি প্রমাণ করে দেব। এগুলো যুদ্ধের হিড়িক। এক শ্রেণি এর থেকে লাভবান হচ্ছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের উদাহরণ টেনে এই গায়ক বলেন, মনে রাখবেন, রকফেলারদের তেল প্রস্তুতকারী সংস্থা সেই সময় জার্মানি এবং ইতালি, দুই দেশকেই পেট্রল সরবরাহ করেছিল। এই সরবরাহ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কিছু ঐতিহাসিক মনে করেন, এটি একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছিল। কিছু ঐতিহাসিকের মতে, এটি শুধুই ব্যবসা।

প্রাচীন ইতিহাস থেকেই নচিকেতার উপলব্ধি, যুদ্ধ মানেই মুনাফার খেলা। সেটা কাদের মুনাফা, সেটা বুদ্ধিমানদের সহজেই বুঝে যাওয়ার কথা।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত