ঢাবিতে ‘পচা মাংস’ বিক্রি, দোকানে তালা দেওয়ায় পাল্টা হুমকি

প্রতিনিধি, ঢাবি
প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮: ৩০

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হাকিম চত্বরে পচা মুরগির মাংস দিয়ে হালিম রান্না ও বিক্রির অভিযোগে প্রশাসন এক দোকানে তালা দিয়েছে। তবে এর পরদিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব পরিচালকের দপ্তরের উপ-হিসাব পরিচালক নাজমুন নাহার নয়ন ও দোকানের মালিক সাবেক ছাত্রদল নেত্রী তানজমিন চৌধুরী লিলির বিরুদ্ধে সিকিউরিটি অফিসারকে হেনস্থা ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

গত মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া হল ছাত্র সংসদের ভিপি মাহবুব তালুকদারসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী হাকিম চত্বরের ওই দোকানে হালিম খেতে যান। তারা অভিযোগ করেন, হালিমে পচা মুরগির মাংস ব্যবহার করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা দোকানের ম্যানেজারকে ওই হালিম খেতে বললে তিনিও মুখে নেওয়ার পর তা ফেলে দেন এবং স্বীকার করেন—মাংসটি নষ্ট ছিল।

বিজ্ঞাপন

পরে শিক্ষার্থীরা দোকান ম্যানেজারকে নিয়ে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ দাখিল করেন। প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদের নির্দেশে সিকিউরিটি অফিসার মুনির হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতা যাচাই করেন। দোকানের ম্যানেজারও তখন পচা মাংস ব্যবহারের কথা স্বীকার করেন।

প্রক্টরের নির্দেশনা অনুযায়ী দোকানটি সাময়িকভাবে সিলগালা করে দেয় প্রক্টরিয়াল টিম। তবে দোকানের কর্মচারীরা প্রশাসনের উপস্থিতির আগেই হালিমের পাতিল খালি করে ফেলায় নমুনা সংগ্রহ সম্ভব হয়নি। পরে দোকানের অন্যান্য মাংসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়, যেখানে দেখা যায় দোকানে ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ না করে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মাংস রাখা হচ্ছে।

পরদিন বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনের এস্টেট অফিসে গিয়ে উপ-হিসাব পরিচালক নাজমুন নাহার নয়ন ও দোকান মালিক লিলি দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে হেনস্থা ও হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠে।

এস্টেট অফিসে উপস্থিত কর্মকর্তাদের বর্ণনায় জানা যায়, নয়ন ধমকের সুরে একের পর এক প্রশ্ন করতে থাকেন—“দোকানে তালা দেওয়া হলো কেন? দোকানের কর্মচারীদের বকাঝকা করা হলো কেন?” এসময় লিলি সিকিউরিটি অফিসারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “কবে চাকরিতে জয়েন করেছো? আমাদের ভালো করে চেনো না।”

ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট ম্যানেজার ফাতেমা বিনতে মোস্তফা তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনারা আমার সামনে আমার অফিসারের সঙ্গে এভাবে কথা বলতে পারেন না। কোনো অভিযোগ থাকলে আমার কক্ষে এসে জানাতে হবে।” এ সময় নয়ন ও লিলি এই এস্টেট ম্যানেজারের সঙ্গেও বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন এবং দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।

এদিকে অভিযোগের প্রেক্ষিতে দোকানে প্রশাসনের তালা দেওয়া সত্ত্বেও বুধবার দুপুরে দোকানটির একটি শাটার খুলে গোপনে পার্সেলে খাবার বিক্রি করতে দেখা যায়।

জানতে চাইলে এস্টেট ম্যানেজার ফাতেমা বিনতে মোস্তফা বলেন, “রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এক দপ্তরের কর্মকর্তা আরেক দপ্তরের কর্মকর্তাকে হুমকি-ধমকি দেওয়া দুঃখজনক। দোকান মালিক শিক্ষার্থীদের পচা মাংস খাইয়েছেন, সে কারণে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এখন তদন্ত হবে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখানে কার বান্ধবীর দোকান, সেটি দেখা হবে না।”

সিকিউরিটি অফিসার মুনির হোসেন বলেন, “শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন দোকানটিতে পচা মাংস ব্যবহার করে হালিম রান্না করা হয়েছে। দোকানের ম্যানেজারও আমাদের কাছে সেটি স্বীকার করেছেন। প্রক্টরের নির্দেশেই দোকানটি সিলগালা করা হয়।”

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে উপ-হিসাব পরিচালক নাজমুন নাহার নয়ন বলেন, “এখানে কোনো সিনক্রিয়েট হয়নি। আমি এ ব্যাপারে বেশি কিছু বলতে চাই না।”


একইভাবে দোকান মালিক তানজমিন চৌধুরী লিলি বলেন, “আমি মব কী, সেটাই জানি না। তবে সেখানে গিয়েছিলাম, কথা কাটাকাটি হয়েছে, একটু ঝামেলা হয়েছে।”

জরুরি অবস্থা জারি করলেন পেরুর প্রেসিডেন্ট

এবার ১ টাকায় গরুর মাংস বিতরণের ঘোষণা সেই এমপি প্রার্থীর

অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের বহন করা সেই প্রিজন ভ্যানে কী আছে

অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের নেয়া হয়েছে ক্যান্টনমেন্টের অস্থায়ী কারাগারে

গাজায় স্বাস্থ্য সংকট কয়েক প্রজন্ম থাকবে: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত