শীত আসছে

ডা. মো. কামরুজ্জামান কামরুল

বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রোগবালাই আবির্ভাব হয়। বাংলাদেশে হেমন্তকালের শেষের দিকে শীতকাল খুব কাছাকাছি চলে আসে। ঋতু পরিবর্তনের এ সময় তাপমাত্রার ওঠানামা ও শুষ্ক বাতাসের কারণে সর্দি-কাশি, জ্বরসহ অন্যান্য রোগব্যাধি দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। শিশুদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ায় এ সময় তাদের অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। তাই পরিবারের সবাইকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, বিশেষ করে শিশুদের জন্য বাড়তি যত্ন নিতে হবে।
শীতকাল অনেকের প্রিয় ঋতু হলেও, শিশুদের জন্য এটি নানা রোগবালাইয়ের মৌসুম। এ সময় আবহাওয়া ঠান্ডা ও শুষ্ক থাকায় শিশুর দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে শ্বাসযন্ত্র, ত্বক এবং পরিপাকতন্ত্রের নানা সমস্যা দেখা দেয়। শীতে শিশুদের সাধারণ রোগবালাই—
সর্দি-কাশি ও ইনফ্লুয়েঞ্জা : ঠান্ডা বাতাস ও ভাইরাস সংক্রমণের কারণে শিশুর নাক বন্ধ, কাশি, জ্বর ও গলাব্যথা হয়।
নিউমোনিয়া ও ব্রংকিওলাইটিস : শীতকালে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ বেড়ে যায়। নবজাতক ও ছোট শিশুদের নিউমোনিয়া বা ব্রংকিওলাইটিস দেখা দেয়, যা জীবনহানিকরও হতে পারে।
অ্যাজমা বা হাঁপানি বৃদ্ধি : ঠান্ডা আবহাওয়া ও ধুলাবালিতে হাঁপানি আক্রান্ত শিশুদের সমস্যা বেড়ে যায়।
ত্বকের শুষ্কতা ও চুলকানি : শীতে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়ায় শিশুর ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়, ফেটে যায় ও চুলকানি হয়।
ডায়রিয়া : অনেক সময় ভাইরাস সংক্রমণের কারণে শীতেও ডায়রিয়া হতে পারে।
টনসিল বা গলাব্যথা : ঠান্ডা পানি, আইসক্রিম বা আবহাওয়ার পরিবর্তনে টনসিল ফুলে যায়, গিলতে ও কথা বলতে কষ্ট হয়।
শীতে শিশুর যত্ন ও করণীয়
উষ্ণ পোশাক পরানো প্রয়োজন। শিশুর শরীর ঢেকে রাখুন—মাথা, কান, হাত ও পা যেন ঠান্ডায় না থাকে। তবে অতিরিক্ত গরম কাপড় পরিয়ে ঘামতে দেবেন না। ঘরের পরিবেশ উষ্ণ রাখবেন। জানালায় ঠান্ডা বাতাস ঢোকা বন্ধ করুন, তবে বাতাস চলাচলের পথ কিছুটা রাখুন যেন বদ্ধ না হয়। পানির পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করুন। শীতে শিশুরা কম পানি খায়, ফলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে। গরম বা কুসুম গরম পানি পান করান।
পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। ভিটামিন-সি-সমৃদ্ধ ফল (কমলা ও পেয়ারা), দুধ, ডিম, সবজি ইত্যাদি দিন। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। ত্বকের যত্ন নিতে হবে।
শিশুর ত্বকে ময়েশ্চারাইজার বা বেবি অয়েল ব্যবহার করুন। সাবান দিয়ে ঘন ঘন গোসল করাবেন না। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার চেষ্টা করুন। শিশুর হাত নিয়মিত ধোয়া, খেলনা পরিষ্কার রাখা ও ভিড় এড়িয়ে চলা উচিত। ভিটামিন-ডি নিশ্চিত করুন। এ সময় সূর্যের আলো কম থাকায় শরীরে ভিটামিন-ডি-এর অভাব দেখা দিতে পারে। তাই সকালবেলা কিছুক্ষণ সূর্যের আলোয় থাকতে শিশুকে উৎসাহিত করা যেতে পারে। ঘুমের সঠিক সময় নিশ্চিত করুন। পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক। তাই শিশুকে যথেষ্ট ঘুমানোর জন্য উৎসাহিত করতে হবে।
টিকা ও চিকিৎসা
ফ্লু-ভাইরাসের টিকা ও নিউমোনিয়া প্রতিরোধক টিকা সময়মতো দিন। কোনো অসুস্থতা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
বাইরে যাত্রা করার সতর্কতা
এ সময় ধুলাবালির সংস্পর্শ এড়ানো উচিত। প্রয়োজনে বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করা এবং পরে হাতে মুখ ধুয়ে ফেলা গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদেরও এ বিষয়ে সচেতন করা প্রয়োজন।
বয়স্কদের যত্নের গুরুত্ব
শুধু শিশুরাই নয়, পরিবারের বয়স্ক সদস্যদের প্রতিও বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন। বয়স্কদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও এ সময় দুর্বল হয়ে পড়ে। তাদের পুষ্টিকর খাবার, সঠিক বিশ্রাম এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা উচিত।
উপসংহার
শীতে শিশুর যত্নে সামান্য সচেতনতা বড় বিপদ এড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে, উষ্ণতা বজায় রেখে এবং পুষ্টিকর খাবার দিয়ে শিশুদের সুস্থ, নিরাপদ ও আনন্দময় শীত উপহার দেওয়া সম্ভব। সর্বোপরি আপনার ও মা-বাবার সচেতনতাই সোনামণির রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, পালমনোলজি বিভাগ, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট

বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রোগবালাই আবির্ভাব হয়। বাংলাদেশে হেমন্তকালের শেষের দিকে শীতকাল খুব কাছাকাছি চলে আসে। ঋতু পরিবর্তনের এ সময় তাপমাত্রার ওঠানামা ও শুষ্ক বাতাসের কারণে সর্দি-কাশি, জ্বরসহ অন্যান্য রোগব্যাধি দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। শিশুদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ায় এ সময় তাদের অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। তাই পরিবারের সবাইকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, বিশেষ করে শিশুদের জন্য বাড়তি যত্ন নিতে হবে।
শীতকাল অনেকের প্রিয় ঋতু হলেও, শিশুদের জন্য এটি নানা রোগবালাইয়ের মৌসুম। এ সময় আবহাওয়া ঠান্ডা ও শুষ্ক থাকায় শিশুর দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে শ্বাসযন্ত্র, ত্বক এবং পরিপাকতন্ত্রের নানা সমস্যা দেখা দেয়। শীতে শিশুদের সাধারণ রোগবালাই—
সর্দি-কাশি ও ইনফ্লুয়েঞ্জা : ঠান্ডা বাতাস ও ভাইরাস সংক্রমণের কারণে শিশুর নাক বন্ধ, কাশি, জ্বর ও গলাব্যথা হয়।
নিউমোনিয়া ও ব্রংকিওলাইটিস : শীতকালে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ বেড়ে যায়। নবজাতক ও ছোট শিশুদের নিউমোনিয়া বা ব্রংকিওলাইটিস দেখা দেয়, যা জীবনহানিকরও হতে পারে।
অ্যাজমা বা হাঁপানি বৃদ্ধি : ঠান্ডা আবহাওয়া ও ধুলাবালিতে হাঁপানি আক্রান্ত শিশুদের সমস্যা বেড়ে যায়।
ত্বকের শুষ্কতা ও চুলকানি : শীতে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়ায় শিশুর ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়, ফেটে যায় ও চুলকানি হয়।
ডায়রিয়া : অনেক সময় ভাইরাস সংক্রমণের কারণে শীতেও ডায়রিয়া হতে পারে।
টনসিল বা গলাব্যথা : ঠান্ডা পানি, আইসক্রিম বা আবহাওয়ার পরিবর্তনে টনসিল ফুলে যায়, গিলতে ও কথা বলতে কষ্ট হয়।
শীতে শিশুর যত্ন ও করণীয়
উষ্ণ পোশাক পরানো প্রয়োজন। শিশুর শরীর ঢেকে রাখুন—মাথা, কান, হাত ও পা যেন ঠান্ডায় না থাকে। তবে অতিরিক্ত গরম কাপড় পরিয়ে ঘামতে দেবেন না। ঘরের পরিবেশ উষ্ণ রাখবেন। জানালায় ঠান্ডা বাতাস ঢোকা বন্ধ করুন, তবে বাতাস চলাচলের পথ কিছুটা রাখুন যেন বদ্ধ না হয়। পানির পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করুন। শীতে শিশুরা কম পানি খায়, ফলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে। গরম বা কুসুম গরম পানি পান করান।
পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। ভিটামিন-সি-সমৃদ্ধ ফল (কমলা ও পেয়ারা), দুধ, ডিম, সবজি ইত্যাদি দিন। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। ত্বকের যত্ন নিতে হবে।
শিশুর ত্বকে ময়েশ্চারাইজার বা বেবি অয়েল ব্যবহার করুন। সাবান দিয়ে ঘন ঘন গোসল করাবেন না। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার চেষ্টা করুন। শিশুর হাত নিয়মিত ধোয়া, খেলনা পরিষ্কার রাখা ও ভিড় এড়িয়ে চলা উচিত। ভিটামিন-ডি নিশ্চিত করুন। এ সময় সূর্যের আলো কম থাকায় শরীরে ভিটামিন-ডি-এর অভাব দেখা দিতে পারে। তাই সকালবেলা কিছুক্ষণ সূর্যের আলোয় থাকতে শিশুকে উৎসাহিত করা যেতে পারে। ঘুমের সঠিক সময় নিশ্চিত করুন। পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক। তাই শিশুকে যথেষ্ট ঘুমানোর জন্য উৎসাহিত করতে হবে।
টিকা ও চিকিৎসা
ফ্লু-ভাইরাসের টিকা ও নিউমোনিয়া প্রতিরোধক টিকা সময়মতো দিন। কোনো অসুস্থতা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
বাইরে যাত্রা করার সতর্কতা
এ সময় ধুলাবালির সংস্পর্শ এড়ানো উচিত। প্রয়োজনে বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করা এবং পরে হাতে মুখ ধুয়ে ফেলা গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদেরও এ বিষয়ে সচেতন করা প্রয়োজন।
বয়স্কদের যত্নের গুরুত্ব
শুধু শিশুরাই নয়, পরিবারের বয়স্ক সদস্যদের প্রতিও বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন। বয়স্কদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও এ সময় দুর্বল হয়ে পড়ে। তাদের পুষ্টিকর খাবার, সঠিক বিশ্রাম এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা উচিত।
উপসংহার
শীতে শিশুর যত্নে সামান্য সচেতনতা বড় বিপদ এড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে, উষ্ণতা বজায় রেখে এবং পুষ্টিকর খাবার দিয়ে শিশুদের সুস্থ, নিরাপদ ও আনন্দময় শীত উপহার দেওয়া সম্ভব। সর্বোপরি আপনার ও মা-বাবার সচেতনতাই সোনামণির রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, পালমনোলজি বিভাগ, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসাইন হত্যাকাণ্ডের পর স্থগিত হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আগামী ২৭ অক্টোবর পালিত হবে। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম।
৫ ঘণ্টা আগে
১৮৪৬ সালের ১৬ অক্টোবর চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী দিন। বোস্টনের ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালে প্রথমবারের মতো এক রোগীর শরীরে ব্যথাহীন অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। দাঁতের চিকিৎসক ডা. উইলিয়াম মর্টন রোগী গিলবার্ট অ্যাবটের মুখে ইথার গ্যাস শ্বাসের মাধ্যমে প্রয়োগ করেন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই রোগী
৫ ঘণ্টা আগে
করোনা ভ্যাকসিনের দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষদের মধ্যে রয়েছে নানা ভুল ধারণা এবং অন্ধবিশ্বাস। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্ক্যাবিসসহ কিছু সংক্রামক চর্মরোগ মহামারির আকার ধারণ করেছে। বেশির ভাগ মানুষ বিশ্বাস করে, করোনা ভ্যাকসিন গ্রহণ করার ফলে তাদের বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ হচ্ছে। আবার
৫ ঘণ্টা আগে
মাসিক হলো নারীর প্রজনন চক্রের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, যেখানে প্রতি মাসে জরায়ু থেকে রক্ত ও টিস্যু নির্গত হয়, যদি ডিম্বাণু পরিপক্ব হওয়ার পরেও গর্ভধারণ না ঘটে। সাধারণত ২১-৩৫ দিনের মধ্যে একবার ঘটে, যা স্বাভাবিক ধরা হয়। এটি নারীর হরমোন (ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং প্রজননক্ষম নারীর
৫ ঘণ্টা আগে