চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

ইসকনের কুশল বরণের জন্য পদোন্নতি বোর্ড বসছে কাল

প্রতিনিধি, চবি
প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ১৫
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ৩৪

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও ইসকন ঘনিষ্ঠ কুশল বরণ চক্রবর্ত্তীকে পদোন্নতি দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও এসবের তোয়াক্কা করে আগামীকাল মঙ্গলবার পদোন্নতি বোর্ড বসাচ্ছে প্রশাসন।

বিজ্ঞাপন

চলতি বছরের ৪ জুলাই কুশল বরণের পদোন্নতিতে প্রথম বোর্ড বসানো হয়। এদিন সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য সাক্ষাৎকারে তাকে ডাকা হয়। তবে তার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি ও দেশবিরোধী নানা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ওঠায় পদোন্নতি বোর্ড বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা। দাবির প্রেক্ষিতে সেদিন পদোন্নতি বোর্ড স্থগিত করে প্রশাসন।

তবে আবারও কুশল বরণের পদোন্নতিতে বোর্ড বসাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় অথবা সাড়ে ১১টার পদোন্নতি বোর্ডের যে কোনো একটিতে তাকে ডাকা হবে তাকে। এ ছাড়া সংস্কৃত বিভাগের প্রভাষক হিমেল কর্মকার ও পবিত্র কুমার হিরাকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি বোর্ড ডাকা হচ্ছে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর তাদের চাকরি অস্থায়ী থেকে স্থায়ী করা হয়। এ দু’জনও ইসকনের ঘনিষ্ঠ বলে জানা গেছে। এ ছাড়া এদের একজনের পদন্নোতির প্রয়োজনীয় শর্ত সমূহ পূরণ হয়নি বলেও জানা গেছে।

কুশলের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছর ২৬ নভেম্বর হেফাজতে ইসলামের কর্মী এনামুল হক চৌধুরী চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে চিন্ময় কৃষ্ণের অনুসারীদের হামলার শিকার হন। এ সময় তিনি কিরিচের কোপে মাথায় গুরুতর জখম হন এবং তার ডান হাত ভেঙে যায়। এ ঘটনায় এনামুল হক চৌধুরী গত বছর ৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিকের আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণকে প্রধান আসামি করে ১৬৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলার আবেদন করেন। এই মামলার ২০তম আসামি কুশল বরণ চক্রবর্ত্তী।

এ ছাড়া গত বছর ২৬ অক্টোবর ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উপর গণহত্যা’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করায় শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন কুশল বরণ চক্রবর্ত্তী। ‘ভারতের প্রেসক্রিপশনে’ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে তার গ্রেপ্তারও দাবি করেন তারা। কুশল বরণ চক্রবর্ত্তীর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি ভারতীয় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর সমর্থক এবং ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা র-এর এজেন্ট।

কুশল বরণ চক্রবর্ত্তী ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের ঘনিষ্ঠদের একজন। গত বছর ২৫ নভেম্বর রাষ্ট্রদোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করা হলে তার মুক্তির দাবিতে সোচ্চার ছিলেন তিনি। এ ছাড়া তার ভারত সরকারের পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস প্রতিমন্ত্রী রামেশ্বর তিলি, সংগঠন মন্ত্রী শ্রী আসিস চৌহান, ত্রিপুরা প্রদেশের উপাধ্যক্ষ শ্রী রাম প্রসাদ পাল এবং ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনা’র অন্যতম দোসর ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমারের সঙ্গে তোলা ছবিও রয়েছে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. হাসান মিয়া আমার দেশ-কে বলেন, ‘আগামীকাল মঙ্গলবার সংস্কৃত বিভাগের দুটি পদোন্নতি বোর্ড রয়েছে।’ কুশল বরণ চক্রবর্ত্তীর নাম ওই পদোন্নতি বোর্ডে রয়েছে কি না—এমন প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেননি হাসান মিয়া।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, ‘এখন আমি মিটিংয়ে আছি, পরে কথা বলব।’ এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত