মাহফুজকে বোতল নিক্ষেপ: একজনকে জিজ্ঞাসাবাদ

বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৬ মে ২০২৫, ১৯: ২৮

রাজধানীর কাকরাইলে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে পানির বোতল নিক্ষেপের ঘটনায় একজনকে ডিবি কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার অভিভাবকের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে ।

শুক্রবার বিকেলে ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান।

তালেবুর রহমান আমার দেশকে জানান, ‘তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার অভিভাবকের কাছে বিকেল ৬টার দিকে হস্তান্তর করা হয়েছে। ’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে বুধবার (১৪ মে) রাতে কাকরাইল মসজিদের সামনে গিয়েছিলেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। সেখানে কথা বলার এক পর্যায়ে তাকে লক্ষ্য করে একটি প্লাস্টিকের পানির বোতল ছুড়ে মারা হয়।

বোতল ছুড়ে মারার ভিডিওটি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার সময় ভিড়ের মধ্য থেকে এক যুবক বোতল ছুড়ে মারে। ওই যুবকের মাথায় ছিল ক্যাপ। পাশেই ছিলেন পুলিশ সদস্যরা। পুলিশ ওই যুবককে কিছু একটা জিজ্ঞেস করতেও দেখা যায় ভিডিওতে।

যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ ডিবিতে, ক্ষুব্ধ জবি শিক্ষার্থীরা

রাজধানী কাকরাইলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের দিকে পানির বোতল নিক্ষেপের ঘটনায় যুবককে ডিবি (গোয়েন্দা পুলিশ) কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করার ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে নিক্ষেপকারী যুবককে শনাক্ত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম সাদেক বলেন, ‘সামান্য পানির বোতল নিক্ষেপের ঘটনাকে কেন্দ্র করে একজন শিক্ষার্থীকে ডিবি অফিসে জিজ্ঞাসাবাদে নেয়া হয়েছে। অথচ আমাদের শিক্ষক, সাংবাদিক ও সহপাঠীরা আন্দোলনের সময় বারবার হামলার শিকার হয়েছেন, সে বিষয়ে তো কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’

আরেক শিক্ষার্থী তাসনিম নাওরিন বলেন, ‘যিনি বোতল ছুড়েছেন, সেটা যদি ভুলও হয়ে থাকে, তার জন্য এমনভাবে কাউকে তুলে নেয়ার ঘটনা আতঙ্ক সৃষ্টি করে। আমাদের ওপর নির্বিচারে হামলা করার বিচার কার কাছে দিবো?”

চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রবিউল হাসান বলেন, ‘তথ্য উপদেষ্টা সংলাপে এসে কথিত 'আলোচনা' করছিলেন, অথচ আমাদের বক্তব্য না শুনেই বের হয়ে যেতে চান। শিক্ষার্থীদের আবেগের বহিঃপ্রকাশকে এইভাবে দমন করা খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত।’

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রাইসা তাবাসসুম বলেন,‘এই ঘটনায় আমাদের সবাইকে অপরাধী বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। অথচ আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের ন্যায্য দাবি জানিয়ে যাচ্ছিলাম। একজনের কাজের জন্য গোটা আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা ঠিক নয়।’

ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ শামীম হোসেন বলেন,‘ডিবিতে নেয়ার বিষয়টি আমাদের আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা। প্রশাসন যদি এভাবে ভয়ভীতি দেখায়, তাহলে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের জায়গাটা কোথায় থাকবে?’

এমএস

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত