জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আস-সুন্নাহ প্রকল্পের শিক্ষার্থীরা নীতিমালায় বিশেষ বৃত্তি সংযোজন, অযৌক্তিক শর্ত সংশোধন ও নীতিমালা পুনর্বিন্যাসসহ তিন দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন অবরুদ্ধ করেছেন। পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন।
সোমবার প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে অবস্থান করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো; প্রশাসনে প্রহসন, মানি না মানবো না; বৈষম্যমূলক বৃত্তি, মানি না মানবো না; হল না প্রকল্প, প্রকল্প প্রকল্প ইত্যাদি স্লোগান দেন।
আন্দোলন সম্পর্কে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শফিক ইসলাম হাসিব বলেন, ‘প্রশাসন থেকে যে বৃত্তি দিচ্ছে তা থেকে আমাদের বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আমরা প্রশাসনকে জানিয়ে দিতে চাই, এই বৃত্তি থেকে আমাদের বাদ দেওয়া হলে আমরা তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবো।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী বখতিয়ার ইসলাম বলেন, ‘আমরা ভিসি বরাবর স্মারক লিপি দিয়েছি এবং সেখানে বলে দিয়েছি আমাদের যে ৩ দফা দাবি আছে তা যদি মেনে নেওয়া না হয় তাহলে আমরা সোমবার অর্থাৎ আজকে ভিসি ভবন ব্লকেড কর্মসূচি পালন করবো। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ভিসি ভবন ব্লকেড থাকবে। কারোর ষড়যন্ত্র, কারোর চাপ আমাদেরকে দমিয়ে রাখতে পারবেনা। আমরা এখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবো।’
প্রসঙ্গত, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের মেধাবী প্রকল্পে থাকা শিক্ষার্থীদের সাধারণ শিক্ষার্থীর মতো আবাসন বৃত্তি নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা; আবাসন বৃত্তি প্রয়োজনভিত্তিক করার লক্ষ্যে সিলেকশন মানদণ্ডে আরোপিত ৭০ শতাংশ উপস্থিতি ও সিজিপিএ-নির্ভর শর্ত বাতিল করা; রি-অ্যাডমিশন সংক্রান্ত শর্ত সম্পূর্ণরূপে বাতিল করা।
এর আগে, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের ‘মেধাবী’ প্রকল্প নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্কের প্রেক্ষাপটে সংস্থাটি নিজেদের অরাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করেছে। একই সঙ্গে ‘মেধাবী’ প্রকল্পকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো প্রশাসনিক বা আবাসিক হল হিসেবে বিবেচনা না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। গত শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাব্বির আহমদের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এসব কথা জানিয়ে উপাচার্যের দপ্তরে পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন একটি দাতব্য ও অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান এবং ‘মেধাবী’ প্রকল্পটি তাদের একটি স্বতন্ত্র উদ্যোগ। ২০২৪ সালের ১০ ডিসেম্বর জবির সঙ্গে সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে প্রকল্পটি শুরু হয় এবং বর্তমানে এতে ৬৪৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে, যার ৯০ শতাংশ ফাউন্ডেশন বহন করছে। শিক্ষার্থীদের আবাসন ও একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি ইংরেজি, এআই, আইসিটি ও নেতৃত্ব উন্নয়নসহ বিভিন্ন দক্ষতা প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

