গোলাম রাব্বানীর জিএস নির্বাচিত হওয়া অবৈধ ঘোষণার সুপারিশ

প্রতিনিধি, ঢাবি
প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২: ১১

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) নির্বাচিত হওয়া অবৈধ ঘোষণার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।

জালিয়াতির মাধ্যমে এম.ফিল প্রোগ্রামে ভর্তি হয়ে ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সিন্ডিকেট সভায় তার ভর্তি সাময়িকভাবে বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টি একাডেমিক কাউন্সিলে উপস্থাপিত হলে ভর্তি চূড়ান্তভাবে বাতিল হবে। একইসাথে তার ডাকসুর জিএস পদও বাতিল হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

তদন্ত কমিটির পর্যবেক্ষণ

সিন্ডিকেট সভায় ২০১৯ সালের ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাঠ করা হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়—

ভোটকেন্দ্র দখল, অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের ভোটে অংশগ্রহণে বাধা, কৃত্রিম লাইন সৃষ্টি, ব্যালট পেপারে অবৈধভাবে সিল মারা, ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ একাধিক কারচুপির অভিযোগ প্রাথমিকভাবে সত্য বলে প্রতীয়মান হয়েছে।

সুপারিশে বলা হয়, ক্রিমিনোলজি বিভাগের তিন শিক্ষার্থী—গোলাম রাব্বানী, মেহজাবিন হক ও ফাহমিদা তাসনিম অনি এম.ফিল প্রোগ্রামে বৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে অবৈধভাবে ভর্তি হয়েছেন। আইনের দৃষ্টিতে এই ভর্তি সম্পূর্ণ বাতিলযোগ্য।

বৈধ ছাত্রত্ব না থাকার কারণে গোলাম রাব্বানীর প্রার্থীতা বৈধ ছিল না। ফলে তার জিএস নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি অবৈধ ঘোষণার জোর সুপারিশ করে কমিটি।

গত সিন্ডিকেট সভায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন গ্রহণ করা হয়। সভায় গোলাম রাব্বানীসহ তিনজনের এম.ফিল ভর্তি সাময়িকভাবে বাতিল করা হয়েছে, যা একাডেমিক কাউন্সিলে চূড়ান্ত করা হবে।

এ সংক্রান্ত পরবর্তী পদক্ষেপ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন উপদেষ্টাকে সুপারিশ প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হয়।

জানতে চাইলে উপ উপাচার্য প্রশাসন অধ্যাপক ড সায়মা হক বিদিশা বলেন, সিন্ডিকেট মিটিংয়ে গোলাম রব্বানীর পদ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তদন্ত কমিটি সুপারিশ করেছে। সুপারিশ বাস্তবায়নে পরবর্তী কী কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত সে ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়ট প্রক্রিয়াধীন।

২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে জিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা মো. রাশেদ খাঁন। তিনি তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে গণমাধ্যমকে বলেন— “আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই যে তারা গুরুত্বের সঙ্গে আমার অভিযোগ বিবেচনা করেছে। গোলাম রাব্বানী শিক্ষার্থীদের ভোটে জিএস নির্বাচিত হননি; তৎকালীন প্রশাসন ফলাফল ছিনতাই করে তাকে জিএস ঘোষণা করে। দীর্ঘ সময় পরে হলেও আমি ন্যায়বিচার পেতে যাচ্ছি। এতোটুকুতেই আমার তৃপ্তি যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রমাণ পেয়েছে গোলাম রাব্বানীর জিএস নির্বাচিত হওয়া অবৈধ ছিল।”

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত