চবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করবে প্রশাসন

প্রতিনিধি, চবি
প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১: ৩৫

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে সংঘর্ষে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সোমবার সন্ধা সাড়ে ৬টায় উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন।

বিজ্ঞাপন

প্রেস ব্রিফিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার, উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, সিন্ডিকেট ও সিনেট সদস্য এস এম ফজলুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, সোমবার সন্ধায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, দুই উপ-উপাচার্য, সকল ডিন, সিন্ডিকেট সদস্যদের উপস্থিতিতে একটি জরুরী মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। এই মিটিংয়ে রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে সংঘর্ষে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করার সিন্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো হলো–

সংঘর্ষে আহত সকল শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যয় প্রশাসন বহন করবে। এর জন্য পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট্য একটি কমিটি করা হয়েছে; শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় একটি মডেল থানা স্থাপনের বিষয়ে সরকারকে অনুরোধ করবে প্রশাসন; বিশ্ববিদ্যালয় রেলক্রসিং এলাকায় একটি পুলিশ বক্স স্থাপনের ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন।

সোমবার সংঘর্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করবে প্রশাসন; সংঘর্ষে ঘটনা পর্যালোচনার জন্য আগামীকাল ২ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) একটি জরুরী সিন্ডিকেট সভা ডাকা হয়েছে; জোবরা এলাকার বাড়িওয়ালাদের সাথে সমন্বয় করার জন্য একটি কমিটি করা হবে;

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত স্ট্রাইকিং ফোর্স প্রত্যাহার না করার অনুরোধ করেছে প্রশাসন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার জন্য একটি হটলাইন স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এর আগে, শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা থেকে গতকাল বেলা ৪টা পর্যন্ত দফায় দফায় শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এতে প্রায় দু’শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।

জানা যায়, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য এ্যাকাডেমিক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য প্রশাসন অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফসহ শিক্ষকেরা দুই পক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দু’পক্ষ।

দু’পক্ষের মধ্যে থেমে থেমে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীদের হাতে ছিল রড, পাইপ, কাঠের লাঠি ও পাথর। স্থানীয়দের হাতে ছিল রামদা, রড ও পাইপ। সংঘর্ষে ২ নম্বর গেট সংলগ্ন এলাকা রণক্ষেত্র হয়ে পড়ে।

সংঘর্ষ একপর্যায়ে গ্রামের অলিগলিতে ছড়িয়ে পড়ে। অনেক শিক্ষার্থী অলিগলিতে আটকে গেলে তাদের মারধর করা হয়। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত অবস্থায় একের পর এক শিক্ষার্থীকে নিয়ে যাওয়া হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল সেন্টারে। একপর্যায়ে গতকাল বেলা ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন।

সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে তিন শিক্ষার্থী নগরের দু’বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে একজনকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত