ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের নির্বাচনী প্রার্থী শরীফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন সক্রিয় ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার রাত ১১ টা নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটক সংলগ্ন কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে সমাবেশে পরিণত হয়।
এ সময় তারা নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবার; এক হাদির কারণে, ভয় করিনা মরণে; একশন টু একশন, ডাইরেক্ট একশন; দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা; যেই ভারত খুনি পালে, সেই ভারত ভেঙে দাও; যেই ভারত হাসিনা পালে, সেই ভারত ভেঙে দাও; ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ; তুমি কে আমি কে, হাদি হাদি; রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়; গোলামি না আজাদি, আজাদি আজাদীসহ নানা প্রতিবাদী স্লোগান দেন।
সমাবেশে শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মাসুদ রুমি মিথুন বলেন, ওসমান হাদি কেমন মানুষ ছিলেন সেটা তার মৃত্যুর খবর শোনার পর আপনাদের উপস্থিতিই বলে দিচ্ছে। হাদি ছিলেন একজন দেশ প্রেমিক, ভারতীয় আধিপত্য ও আগ্রাসন বিরোধী অগ্রনায়ক এবং ছিলেন একজন জুলাই যোদ্ধা। তিনি মারা গেছেন তবে তার রক্তের সাথে আমরা বেইমানি করতে পারবো না। দেশ থেকে হাসিনা পালিয়ে গেছে কিন্তু তার প্রেতাত্মারা এখনো রয়ে গেছে। এখন থেকে এই প্রেতাত্মাদের যেখানেই দেখা যাবে গণধোলাই দিতে হবে, পুলিশি হেফাজতে পাঠাতে হবে। হাদি ভাইয়ের রক্ত যেন বৃথা না যায় সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আপনাদের সাথে সর্বক্ষণ রাজপথে থাকবে।
শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ইউসুব আলী বলেন, ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর যে ব্যক্তির ছিলো, যিনি জুলাইকে মন থেকে মানতেন সেই ওসমান হাদিকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা আজ শুধু হাদি ভাইয়ের হত্যার প্রতিবাদ জানাতে আসিনি, আমরা এসেছি এই বাংলাদেশের উপর ভারতীয় আধিপত্যের কবর দিতে। তারা ভেবেছে এক হাদিকে হত্যা করলে তাদের আধিপত্য বাংলাদেশের বুকে বিস্তার করতে পারবে, কিন্তু তারা এটা বোঝেনি এক হাদিকে হত্যা করলে লক্ষ হাদি বাংলাদেশের বুকে জ্বলে উঠবে। তাদের আধিপত্য এই বাংলাদেশে আমরা কখনো বিস্তার করতে দেবো না। আমরা হাদি ভাইয়ের মধ্যে যে সততা, দেশপ্রেম, ইনসাফের স্বপ্ন দেখেছি সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেই ছাড়বো ইনশাল্লাহ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক এস এম সুইট বলেন, ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে যে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর উঠে এসেছিল, সেই হাদি ভাইয়ের হত্যার বিচারের দাবিতেই আজ আমরা এখানে উপস্থিত হয়েছি। হাদি ভাইয়ের হত্যাকাণ্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। হত্যার পর আমরা জানতে পারি, খুনিরা ভারতে পালিয়ে গেছে। কীভাবে তারা সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে পালাতে সক্ষম হলো তা জাতির সামনে স্পষ্ট করতে হবে।
এ ঘটনায় দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ভূমিকা নিয়ে আমরা গুরুতর আশঙ্কায় রয়েছি। কোনো না কোনো গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতাতেই হাদি ভাইয়ের হত্যাকারীরা ভারতে পালিয়ে গেছে বলে আমরা মনে করি। এজন্য অতি দ্রুত দেশের সব গোয়েন্দা সংস্থায় সংস্কার আনা জরুরি।
তিনি আরো বলেন, জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। পাশাপাশি হাসিনাসহ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
এছাড়া ওসমান হাদির হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা না হলে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা।
আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

