সামান্য বৃষ্টিতেই ববিতে জলাবদ্ধতা

মাসুদ রানা, ববি
প্রকাশ : ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৬: ১৮
আমার দেশ গ্রাফিক্স

বর্ষা এলেই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) জলাবদ্ধতা একটা সাধারণ চিত্র । সামান্য বৃষ্টিতেই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক জলমগ্ন হয়ে পড়ে। একাডেমিক ভবনের সামনের সড়কগুলো থেকে শুরু করে মূল ফটকের আশপাশ প্রায় সবখানেই জমে থাকে পানি। ফলে জুতা হাতে কিংবা প্যান্ট গুটিয়ে নোংরা পানির ভেতর দিয়ে হেঁটে ক্লাসে যেতে হয় শিক্ষার্থীদের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বৃষ্টিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন ও প্রশাসনিক ভবনের সামনের এলাকাসহ ক্যাম্পাসের বেশিরভাগ সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। সড়কে পানি উঠে ছোট ছোট পুকুরের মতো সৃষ্টি হয়েছে। ক্যাম্পাসের ভিতরের রাস্তার ওপর থেকে মাছ ধরছে শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি এক শিক্ষার্থী ফেসবুকে মাছ ধরার ছবি শেয়ার করে ব্যাঙ্গ করে লিখেছেন, দেশে প্রথমবারের মতো রাস্তার ওপর মাছ চাষ শুরু করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, প্রতিষ্ঠার ১৫ বছর পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ রাস্তা এখনো লাল ইটের। বিভিন্ন জায়গায় ইট উঠে গিয়ে রাস্তা পরিণত হয়েছে খানা-খন্দে। ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন থেকে পাকা রাস্তার দাবিতে আন্দোলন হলেও কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি। ফলে বর্ষা এলেই ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষার্থীরা।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জুবায়ের হোসেন বলেন, পানির মধ্য দিয়ে জুতা খুলে ক্লাসে যেতে হয়। এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক। কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্র এমন হতে পারে না বলে উল্লেখ করেন তিনি।

জলাবদ্ধতা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী শহিদ আফ্রিদি বলেন, বর্ষাকালে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় ক্লাসে যাওয়ার পথ। হাঁটতে গেলে জুতা আটকে যায়, কখনো পানিতে পা ডুবে যায়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্রুততার সঙ্গে পাকা রাস্তা করার দাবি করেন তিনি।

ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়াছিন ব্যঙ্গ করে বলেন, ক্যাম্পাসে পুকুর-ডোবার অভাব নেই, এখন রাস্তার ওপরও মাছ ধরা যায়। এই লজ্জা আর কতদিন বইব আমরা?”

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ একরের এই ক্যাম্পাসে নেই কোনো কার্যকর ড্রেনেজ ব্যবস্থা। পরিকল্পনা দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. হুমায়ুন কবির জানান, আমাদের এই মুহূর্তে এটি নিয়ে বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই, এটি প্রকৌশল শাখা দেখবে। তবে ‍দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পে ড্রেনেজের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করেছি, তখন এটি বাস্তবায়ন হবে।

অন্যদিকে প্রকৌশল শাখার উপ-প্রকৌশলী মুরশীদ আবেদীন দাবি করেন, আমরা অনেক আগেই পরিকল্পনা দপ্তরে প্রস্তাব জমা দিয়েছি। অর্থায়নের ব্যবস্থা হলেই কাজ শুরু করা সম্ভব।

অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম বলেন, গত অর্থবছরে চেষ্টা করেও কিছু জটিলতার কারণে কাজ করা সম্ভব হয়নি। এ বছর আমরা কাজ শুরু করব। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় এস্টিমেটও তৈরি করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের রাস্তায়ও জলাবদ্ধতা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এই বিষয়ে তিনি জানান, রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে বিভাগের প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি জানিয়েছেন, বৃষ্টির মধ্যে কাজ সম্ভব নয়, বৃষ্টি কমলে কাজ শুরু হবে।

শিক্ষার্থীদের এখন একটাই প্রত্যাশা, যত দ্রুত সম্ভব ক্যাম্পাসে পাকা রাস্তা ও কার্যকর ড্রেনেজ ব্যবস্থা তৈরি করা।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত