ডাকসু ভোটের যোগফলে গরমিল, পরে সংশোধন

প্রতিনিধি, ঢাবি
প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১: ৩৩
আপডেট : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১: ৩৫

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ফলাফলে ভোটের হিসাবের মধ্যে গরমিল ধরা পড়েছে। নির্বাচনের দুই দিন পর গত শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) হলভিত্তিক ভোটের তালিকা প্রকাশের পর দেখা যায়, ঘোষিত ফলাফলের সঙ্গে প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোটের যোগফল মেলেনি।

বিজ্ঞাপন

এ নিয়ে প্রার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) এই গরমিলকে ‘দীর্ঘ বিরতিহীন কর্মসম্পাদনজনিত মানবীয় অবসাদের কারণে ঘটে যাওয়া সামান্য ভুল’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে।

রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন এক বিজ্ঞপ্তিতে সংশোধিত ফল প্রকাশ করেন। তিনি জানান, ভোটের সংখ্যায় কিছু যোগবিভ্রাট ঘটলেও এর কারণে নির্বাচিত প্রার্থীদের তালিকায় কোনো পরিবর্তন আসেনি।

সংশোধিত ফলাফলে দেখা যায়, অন্তত ১৮ জন প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটে গরমিল ছিল। এর মধ্যে কিছু প্রার্থীর ভোট কম দেখানো হয়েছিল, আবার কারও ভোট বেড়ে গিয়েছিল। ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে বিজয়ী আসিফ আব্দুল্লাহর প্রকৃত ভোট ৯,১০১ হলেও ফলাফলে দেখানো হয়েছিল ৯,০৬১।

ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক মাজহারুল ইসলামের ভোট কম দেখানো হয়েছিল ৫০০। প্রকৃত ভোট ৯,৮৪৪ হলেও প্রকাশিত ফলে ছিল ৯,৩৪৪।

ক্রীড়া সম্পাদক পদে চিম চিম্যা চাকমার ৩,৮৮৮ ভোট ৩,৭৮৮ দেখানো হয়েছিল।

সদস্য পদে সর্বমিত্র চাকমার ভোট ৯,৫৪৮ হলেও ফলাফলে ৮,৯৮৮ দেখানো হয়।

যাদের ভোট বেশি দেখানো হয়েছিল।

ভিপি প্রার্থী রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ ৬টি ভোট পেলেও ফলাফলে দেখানো হয় ৮টি।

এজিএস প্রার্থী আশরেফা খাতুন ৮৯০ ভোট পেলেও ফলাফলে ছিল ৯০০।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ফাতিন ইশরাকের ২,০১১ ভোট ফলাফলে দেখানো হয় ২,০২১।

এমন গরমিল প্রকাশ্যে আসার পর অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে প্রার্থী মোহাম্মদ সাকিব ফেসবুকে লিখেছেন,
হল থেকে প্রাপ্ত ভোটের লিস্ট অনুযায়ী আমার মোট ভোটসংখ্যা ৩,৯৬২; কিন্তু সম্মিলিত ফলাফলে তা দেখানো হয়েছে ৩,৯২২।

একইভাবে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে বিজয়ী সর্বমিত্র চাকমা ফেসবুকে লিখেছেন,
ডাকসুর মতো গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে ভোট গণনায় ভুল কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ ধরনের ভুল পুরো নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার মতো যথেষ্ট।

এদিকে জিএস পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী আরাফাত চৌধুরী নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়ে ফলাফলে অসঙ্গতি, প্রক্সি ভোট, আগে থেকে ভরাট ব্যালট এবং অস্বাভাবিক ভোটার উপস্থিতিসহ নানা অনিয়মের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি ভোটার তালিকা ও ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ার পূর্ণাঙ্গ সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশের দাবি জানান।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তারা জানান, ভোটগ্রহণ থেকে গণনা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ ভিডিওতে ধারণ করা হয়েছে। এতে ব্যালট বাক্স খোলা, ভোটার পরিচয় যাচাই, ভোট প্রদান, ব্যালট স্ক্যানিং ও ফল প্রকাশের পুরো প্রক্রিয়া নথিভুক্ত আছে। প্রশাসনের দাবি, এর মাধ্যমেই সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।

এবারের নির্বাচনে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৪৪ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে ৩৭ জনই ১০০ ভোটের কম পেয়েছেন, আর ২৩ জন পেয়েছেন ১০ ভোটেরও কম। তিনজন প্রার্থী মাত্র ১ ভোট পেয়েছেন।
অন্যদিকে জিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ২৩ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে ১০০ ভোটের কম পেয়েছেন ১০ জন। সর্বনিম্ন ভোট পেয়েছেন নিয়াজ মাখদুম (৬) ও সাইয়াদুল বাশার (৯)।

ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে আইআরআই প্রতিনিধি দলের বৈঠক

শুক্র-শনিবারও চলবে বিমানবন্দরের শুল্কায়ন কার্যক্রম

প্রধান উপদেষ্টার আদেশে জুলাই সনদের আইনি রূপ দিতে হবে

নভেম্বরের মধ্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনা শুরুর দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি

আইআরআই’র সঙ্গে নির্বাচনের প্রক্রিয়া ও ইসির নিরপেক্ষতা নিয়ে আলোচনা এনসিপির

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত