ডাকসুর ভিপি হতে লড়বেন ৪৮ জন

মাহির কাইয়ুম, ঢাবি
প্রকাশ : ২২ আগস্ট ২০২৫, ০৪: ১৩

অর্ধযুগ পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ৯টি পূর্ণাঙ্গ প্যানেল এবং রেকর্ডসংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। ডাকসুর কেন্দ্রীয় সংসদের ২৮ পদের বিপরীতে ৫০৯ জন এবং ১৮টি হল সংসদের ২৩৪টি পদের বিপরীতে লড়তে এক হাজার ১০৯ জন প্রার্থী আবেদন করেন। প্রাথমিক যাচাই শেষে কেন্দ্রীয় সংসদের প্রাথমিক প্রার্থীর সংখ্যা হয়েছে ৪৬২ এবং হল সংসদে এক হাজার ১০৮ জন। এর মধ্যে সহসভাপতি (ভিপি) পদে প্রার্থী হচ্ছেন ৪৮ জন।

বৃহস্পতিবার রাতে ডাকসু নির্বাচনের চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা জসীম উদ্দীন এসব তথ্য জানান।

বিজ্ঞাপন

এর আগে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, ছাত্র অধিকার পরিষদ, বামপন্থি জোটসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্যানেল ঘোষণা করেছে। রেকর্ড সংখ্যক প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এবারের ডাকসু নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা গ্রহণযোগ্য এবং সুষ্ঠু একটি নির্বাচন উপহার দিতে চায় বলে জানান ডাকসু নির্বাচনের কমিশন প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, এবারের ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে যথাসময়ে হবে বহুল প্রত্যাশিত ডাকসু নির্বাচন।

বিকেলে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ নামে চূড়ান্ত প্যানেল ঘোষণা করেন উমামা ফাতেমা। প্যানেলে ভিপি হিসেবে উমামা নিজে, জিএস হিসেবে সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি আল সাদী ভূঁইয়া এবং এজিএস হিসেবে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জাহেদ আহমেদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন-বিষয়ক সম্পাদক পদে নূমান আহমাদ চৌধুরী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে মমিনুল ইসলাম (বিধান), কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে সুর্মী চাকমা, আন্তর্জাতিকবিষয়ক পদে নাফিজ বাশার (আলিফ), সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে অনিদ হাসান, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে সিয়াম হোসেন ইমন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে সাদিকুজ্জামান সরকার (সাদিক), ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে রাফিজ খান, সমাজসেবা সম্পাদক পদে তানভির সামাদ, ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক পদে রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে ইসরাত জাহান নিঝুম, মানবাধিকার ও আইনবিষয়ক সম্পাদক পদে নুসরাত জাহান নিসু নির্বাচন করবেন।

প্যানেল ঘোষণা করে উমামা বলেন, ডাকসু নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের কাছে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য প্যানেল হতে যাচ্ছে আমাদের ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’। কেননা প্যানেলটি অরাজনৈতিক যোগ্য শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত।

ছাত্রদলের চূড়ান্ত প্যানেল

ছাত্রদলের প্যানেল থেকে ভিপি হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী আবিদুল ইসলাম খান এবং জিএস পদে কবি জসীম উদদীন হল ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের তানভীর বারী হামিমকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। সহকারী সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) হিসেবে বিজয় একাত্তর হল ছাত্রদলের আহ্বায়ক তানভীর আল হাদি মায়েদকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে আরিফুল ইসলাম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে এহসানুল ইসলাম, কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে চেমন ফারিয়া ইসলাম মেঘলা, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে মেহেদী হাসান, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদে আবু হায়াত মোহাম্মদ জুলফিকার জিসান, ক্রীড়া সম্পাদক পদে চিম চিম্যা চাকমা, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে সাইফ উল্লাহ্ (সাইফ), সমাজসেবা সম্পাদক পদে সৈয়দ ইমাম হাসান অনিক, ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক পদে আরকানুল ইসলাম রূপক, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে আনোয়ার হোসাইন এবং মানবাধিকার ও আইন সম্পাদক পদে মো. মেহেদী হাসান মুন্না নির্বাচন করবেন।

আবিদুল ইসলাম খান বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে ছাত্রদলই একমাত্র সংগঠন যারা নিজেদের অভ্যন্তরীণ নেতাকর্মীদের ভোটে প্রার্থী নির্বাচন করেছে। অন্য কোনো সংগঠন এভাবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে প্যানেল ঘোষণা করেনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গণতান্ত্রিক এই প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানাবে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে তারা আমাদের পাশে থাকবে।

তিনি আরো বলেন, আমরা যেই প্যানেল ঘোষণা করেছি সেটা যথেষ্ট অন্তর্ভুক্তিমূলক করার চেষ্টা করেছি। আমরা আদিবাসী, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এবং নারীদের নিয়ে একটা ইনক্লুসিভ প্যানেল দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমরা শিক্ষার্থীদের আবাসন, নিরাপত্তা এবং নিশ্চিন্তে শিক্ষার পরিবেশ তৈরিতে কাজ করব।

ছাত্রশিবিরের প্যানেল ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’

ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল থেকে ভিপি পদে আবু সাদিক কায়েম, জিএস পদে এস এম ফরহাদ, এজিএস পদে মহিউদ্দিন খানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। প্যানেলে দলীয় নেতাকর্মীদের বাইরে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত শিক্ষার্থী, আপ বাংলাদেশ এবং ইনকিলাব মঞ্চের নেতাদের রাখা হয়েছে।

এছাড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ইকবাল হায়দার, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে খান জসিম, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে আসিফ আবদুল্লাহ, সমাজসেবা সম্পাদক পদে শরিফুল ইসলাম মুয়াজ, ক্রীড়া সম্পাদক পদে আরমান হোসাইন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ফাতেমা তাসনিম জুমা, কমন রুম, রিডিং রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে উম্মে সালমা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে নুরুল ইসলাম সাব্বির, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে এম এম আল মিনহাজ, মানবাধিকার ও আইন সম্পাদক পদে সাখাওয়াত জাকারিয়া, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে সাজ্জাদ হোসাইন খান, ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক পদে মাজহারুল ইসলামকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

বাগছাসের প্যানেল ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’

গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ সমর্থিত ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেলে ভিপি হিসেবে লড়বেন বাগছাসের ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের। জিএস পদে নির্বাচন করবেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার।

এই প্যানেল থেকে সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে লড়বেন আশরেফা খাতুন। এছাড়া সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদে নাহিয়ান ফারুক, সমাজসেবা সম্পাদক পদে মহির আলম, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে মো. হাসিবুল ইসলাম, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে মোহাম্মদ সাকিব, ক্রীড়া সম্পাদক পদে আল আমিন সরকার, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক পদে আনিকা তাহসিনা নির্বাচন করবেন।

ছাত্র অধিকার পরিষদের প্যানেল ‘ডাকসু ফর চেঞ্জ’

ছাত্র অধিকার পরিষদের প্যানেল ‘ডাকসু ফর চেঞ্জ’ থেকে ভিপি পদে প্রার্থী হয়েছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা এবং জিএস পদে লড়বেন সাবিনা ইয়াসমিন। এজিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ঢাবি শাখার সদস্য সচিব রাকিবুল ইসলাম।

ঘোষিত প্যানেলে আরো রয়েছেনÑবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে মো. শাকিল খান, সমাজসেবা সম্পাদক পদে আরিফুর রহমান মজুমদার, ক্রীড়া সম্পাদক পদে মুক্তার হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে আশিক হৃদয় আহমেদ, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে রাকিব হোসেন গাজী, মানবাধিকার ও আইনবিষয়ক সম্পাদক পদে ইশতিয়াক আহমেদ এবং গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে সিয়াম ফেরদৌস ইমন।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের ‘সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ’

অপরাজনীতি ও ভয়ের ঊর্ধ্বে উজ্জ্বল সম্ভাবনার ডাকসু—স্লোগানে প্যানেল ঘোষণা করেছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ। সংগঠনটির প্যানেলের নাম ‘সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ’। এই প্যানেল থেকে সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি ইয়াসিন আরাফাতকে ভিপি, কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল খায়রুল আহসান মারজানকে জিএস এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি সাইফ মোহাম্মদ আলাউদ্দিকে এজিএস পদে প্রার্থী করা হয়েছে।

এ প্যানেলে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে আবু বকর সিদ্দিক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে জুয়াইরিয়া আখতার তামান্না, কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে জাকিয়া আক্তার, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে মোহাম্মদ আলী, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ইয়াসিন আরাফাত, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে ইমরান মিয়াকে প্রার্থী করা হয়েছে।

জামাল-মাহিনের ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদ’

স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংসদ-এর আহ্বায়ক জামাল উদ্দীন খালিদ (ভিপি) ও এনসিপি থেকে সাময়িক বহিষ্কৃত যুগ্ম সদস্য সচিব মাহিন সরকারের (জিএস) নেতৃত্বে লড়বে ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেল। এজিএস পদে লড়বেন লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রছাত্রী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ফাতেহা শারমিন এ্যানি।

এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে আশিকুর রহমান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুল্লাহ ইবনে হানিফ আরিয়ান, কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক ফারজানা আক্তার মিতু, আন্তর্জাতিক সম্পাদক ইমরান মিয়া, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক মোহতাসিন বিল্লাহ ইমন নির্বাচন করবেন।

বামপন্থিদের ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’

বিশ্ববিদ্যালয়ে বামপন্থি রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা জোট করে ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ নামে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছে। ঘোষিত প্যানেলে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি। জিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন মেঘমল্লার বসু। এজিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন জাবির আহমেদ জুবেল।

এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক পদে লড়বেন মোজাম্মেল হক। কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে নূজিয়া হাসিন (রাশা), মানবাধিকার ও আইনবিষয়ক সম্পাদক পদে আকাশ আলী, ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক পদে লিটন ত্রিপুরা, সমাজসেবা সম্পাদক পদে আবু মুজাহিদ নির্বাচন করবেন।

তিন বাম ছাত্র সংগঠনের আরেক প্যানেল ‘অপরাজেয় ৭১, অদম্য ২৪’

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন (একাংশ), সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (বাসদ) এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএলের সমন্বয়ে ‘অপরাজেয় ৭১, অদম্য ২৪’ নামে প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষিত প্যানেলে ভিপি পদে লড়বেন যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের শিক্ষার্থী নাইম হাসান হৃদয়। জিএস পদে প্রার্থী হয়েছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এনামুল হাসান অনয়। এছাড়া এজিএস পদে লড়বেন দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী অদিতি ইসলাম।

প্যানেলে মুক্তিযুদ্ধ ও গণআন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক পদে লড়বেন ফাহমিদা আলম, কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়াবিষয়ক সম্পাদক পদে সুর্মী চাকমা, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক পদে শাকিব মাহমুদ, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিকবিষয়ক সম্পাদক পদে আবদুল্লাহ ইবনে হাসান (জামিল), ছাত্র পরিবহনবিষয়ক সম্পাদক পদে মাসফিকুজ্জামান তাইন।

কোন পদে কত প্রার্থী

রাতে ডাকসু নির্বাচনের চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা জসীম উদ্দীন জানান, নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সংসদে প্রাথমিক বৈধ প্রার্থী ৪৬২ জন। ত্রুটিপূর্ণ মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ায় স্থগিত হয়েছে ৪৭ জনের আবেদন। তিনটি পদে নেই কোনো নারী প্রার্থী। হল সংসদে বৈধ প্রার্থী সংখ্যা এক হাজার ১০৮ জন। আবেদন স্থগিত হয়েছে একজনের।

প্রার্থিতার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভিপি পদে ছাত্র প্রার্থী ৪৩ জন, ছাত্রী পাঁচজন; জিএস পদে ছাত্র ১৮ জন, ছাত্রী একজন; এজিএস পদে ছাত্র ২৪ জন, ছাত্রী চারজন; মুক্তিযুদ্ধ ও ছাত্র আন্দোলন সম্পাদক পদে ছাত্র ১৪, ছাত্রী একজন; বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ছাত্র ১০ জন, ছাত্রী একজন; ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক ছাত্র সাতজন, ছাত্রী দুজন; সমাজসেবা সম্পাদক পদে ছাত্র ১৩ জন, ছাত্রী নেই; মানবাধিকার ও আইন সম্পাদক পদে ছাত্র আটজন, ছাত্রী তিনজন; স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে ছাত্র ১২ জন, ছাত্রী তিনজন; ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে ছাত্র ৯ জন, ছাত্রী নেই; ক্রীড়া সম্পাদক পদে ছাত্র ১২ জন, ছাত্রী একজন; গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক ছাত্র সাতজন, ছাত্রী চারজন; কমন রুম, রিডিং রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ছাত্র দুজন, ছাত্রী ৯ জন; আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে ছাত্র ১৫ জন, ছাত্রী নেই; সাহিত্য সম্পাদক ছাত্র ১৭ জন, ছাত্রী দুজন; সদস্যপদে ছাত্র ১৯১ জন, ছাত্রী ২৪ জন।

অর্থাৎ ডাকসু নির্বাচনে বৈধ প্রাথমিক প্রার্থী হিসেবে ছাত্র মোট ৪০২ জন, ছাত্রী ৬০ জন। এছাড়া নির্বাচন কমিশন জানায়, হল সংসদে বৈধ প্রার্থী সংখ্যা এক হাজার ১০৮ জন, স্থগিত হয়েছে একজনের আবেদন।

রিটার্নিং কর্মকর্তারা জানান, ভোটার নম্বর, নাম-পরিচয়ে ত্রুটি, রেজিস্ট্রেশন নম্বরে ভুল, বাবা-মায়ের নামে ভুল-অসংগতি, স্বাক্ষর ভুল ইত্যাদি কারণে প্রার্থিতা স্থগিত করা হয়েছে। প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশন বরাবর আপিল করলে যাচাই-বাছাই করে দেখা হবে। ২৩ আগস্ট পর্যন্ত সুযোগ থাকবে আপিল করার। ২৪ আগস্ট যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।

প্রার্থীদের ওপর বিধিনিষেধ

ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনকালীন সময়ে কোনো প্রার্থী বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক সেবামূলক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না।

প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোনো প্রার্থী স্বপ্রণোদিত হয়ে সেবামূলক কাজ, উপঢৌকন বিতরণ, আপ্যায়ন, অর্থসহায়তা কিংবা অনুরূপ কার্যক্রমে যুক্ত হতে পারবেন না। এসব কর্মকাণ্ডকে সরাসরি নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য করা হবে।

আলাদা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত কেউ হল কিংবা ক্যাম্পাসে প্রচারণা চালাতে পারবেন না। ২৬ আগস্ট থেকে প্রার্থীরা প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। উল্লিখিত সময়ে প্রচারণা চালালে এটি ডাকসু নির্বাচন আচরণবিধি ভঙ্গ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত