‘রুম খালি কর, নইলে তালা দেবো’, শিক্ষার্থীকে সমন্বয়ক

প্রতিনিধি, কুবি
প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০: ৫৩
আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১: ২৫

‘প্রশাসন কিছু না, আমরা যা সিদ্ধান্ত নেবো, তাই মানতে হবে। তোকে এখন থেকে ৫ মিনিটের সময় বেঁধে দেওয়া হলো, এর মধ্যে ব্যাগ গুছিয়ে হল থেকে বের হয়ে যাবি।’ এসব বলে এক শিক্ষার্থীকে হল ছাড়ার হুমকি দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক এমরান হোসেন। তিনি ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

রোববার এ নিয়ে প্রক্টরিয়াল বডির কাছে তিনজনের নামে লিখিত অভিযোগপত্র জমা দেন ভুক্তভোগী মো. রাহিম। তিনি ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

বিজ্ঞাপন

অভিযুক্ত বাকিরা হলেন- নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. হাসিব হাসান ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শাহ পরাণ রাজু।

অভিযোগপত্রে রাহিম উল্লেখ করেন, তিন মাস ধরে একদল শিক্ষার্থীর মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন তিনি। ১ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টার পর স্লোগান দিতে দিতে তার কক্ষের সামনে এসে দরজায় কড়া নাড়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী। দরজা খোলার পর তারা কক্ষে ঢুকে বলেন ‘১০ মিনিটের মধ্যে রুম খালি কর, নইলে রুম তালা দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিছু না; আমরা যে সিদ্ধান্ত নেব, সেটাই চূড়ান্ত।’

একপর্যায়ে তাকে হুমকি দিয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন ‘রুম না ছাড়লে ছাত্রলীগের মতো কইরা পিটামু, তোকে মারা ওয়ান-টু ব্যাপার।’

অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, ৩১ জানুয়ারি রাত ১২টা ৫০ মিনিটে তাকে ডাইনিং সংলগ্ন সিঁড়ির সামনে ডেকে নিয়ে প্রকাশ্যে হেনস্তা করেন হাসিব ও রাজু । তারা বলেন ‘ফেব্রুয়ারির মধ্যে রুম না ছাড়লে সব জিনিসপত্র ফেলে দেবো। পারলে তোর কোনো বাপ আছে নিয়ে আসিস!’।

রাহিম বলেন, জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় থাকার কারণে টিউশন আমি হারিয়েছি। ফলে আমার থাকার বিকল্প কোনো জায়গা নেই। কিন্তু বারবার হুমকি ও মানসিক নির্যাতনের কারণে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

এছাড়া এমরান ও হাসিবের নেতৃত্বে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রাজু মিয়াজিসহ আরও ২০ শিক্ষার্থীকে হল ছাড়তে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

অভিযুক্ত হাসিব বলেন, ‘হিট অব মোমেন্টে এই কথা বলেছি। ৫ আগস্টের পর যারা হলে উঠবে, তারা সবাই রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করবে। তাই হল থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আন্দোলনের পর ওঠা শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে দেওয়া হবে।’

নজরুল হলের প্রভোস্ট মো. হারুন বলেন ‘শিক্ষার্থীদের এমন আচরণ কাম্য নয়। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা আমার কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেয়নি। এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়ার চেষ্টা করবো। আমার কাছে কোনো লিখিত কিংবা মৌখিক অভিযোগপত্র আসেনি।

সহকারী প্রক্টর মাহমুদুল হাসান রাহাত বলেন, অভিযোগপত্র পেয়েছি। আমরা প্রক্টরিয়াল বডি বসে সিদ্ধান্ত নেবো। একই সঙ্গে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত