দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাইরাস জ্বর ও ডায়রিয়ার প্রকোপ

আমার দেশ ডেস্ক
প্রকাশ : ২৩ আগস্ট ২০২৫, ০৫: ৩০

দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাস জ্বর ও ডায়রিয়ার প্রকোপ। হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন বাড়ছে রোগীদের ভিড়। শয্যা সংকটে অনেক রোগীকে মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। আমার দেশের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর—

বিজ্ঞাপন

বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি জানান, নাটোরের বাগাতিপাড়ায় ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাসজনিত জ্বর ও ডায়রিয়া। হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন সব বয়সি নারী-পুরুষ। একজন আক্রান্ত হলে পরিবারের অন্য সদস্যরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। শুধু জ্বর নয়, আক্রান্তদের মধ্যে শরীর ব্যথা, সর্দি-কাশি, বমি ও শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গও দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি ভুগছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন গড়ে ৬৫০ থেকে ৭০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন। তাদের বেশির ভাগই জ্বর, সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। পাশাপাশি ডেঙ্গু ও সাপে কাটা রোগীরও সন্ধান মিলছে।

হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, সকাল থেকেই বহির্বিভাগে রোগীর দীর্ঘ লাইন। ৫০ শয্যার হাসপাতাল হলেও বাস্তবে শয্যা রয়েছে মাত্র ৩১টি। ফলে শয্যা সংকটে অনেক রোগীকেই মেঝে বা বারান্দায় চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে বেসরকারি ক্লিনিকেও ছুটছেন।

কর্তব্যরত নার্সদের ভাষ্য, প্রতিদিন গড়ে ৬০–৭০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। শিশুদের মধ্যে জ্বর ও ডায়রিয়ার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি।

সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালে আসা সাথী আক্তার বলেন, তিন দিন ধরে শিশুর জ্বর-কাশি। ডাক্তার দেখানোর জন্য লাইনেই দাঁড়িয়ে আছি। অন্যদিকে আফরোজা বেগম জানান, গতকাল রাত থেকে ছেলে জ্বরে ভুগছে, বমি হচ্ছে, পাতলা পায়খানাও হয়েছে। ডাক্তার ভর্তি দিয়েছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. রেজাউল করিম বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তন ও আর্দ্রতার কারণে ভাইরাস জ্বর বাড়ছে। শিশু-বয়স্কদের আলাদা যত্ন নিতে হবে। শরীর শুকনো রাখা, ঘরে আলো-বাতাস চলাচল নিশ্চিত করা, আক্রান্তকে অন্যদের থেকে দূরে রাখা এবং মাস্ক ব্যবহার করা জরুরি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সূচনা মনোহরা জানান, দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো বাগাতিপাড়াতেও ভাইরাসজনিত জ্বর ও ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সময়মতো চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে দ্রুত সেরে ওঠা সম্ভব।

নিকলী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, কিশোরগঞ্জের নিকলীতে ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ছে ভাইরাসজনিত জ্বর। সেই সঙ্গে বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। এতে ছোট-বড় নির্বিশেষে সবাই আক্রান্ত হচ্ছেন। জ্বরের পাশাপাশি শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা, সর্দি-কাশি, বমি ও শ্বাসকষ্টসহ নানা উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় মানুষের ভোগান্তি বেশি হচ্ছে ।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে ৪০০ থেকে ৫৫০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগই ভাইরাসজনিত জ্বর, সর্দি-কাশি ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী।

সরেজমিন নিকলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগের সামনে রোগীদের দীর্ঘ লাইন। শিশুসহ বয়স্ক রোগীদের নিয়ে স্বজনদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। হাসপাতাল ৩১ শয্যাবিশিষ্ট থাকায় অনেক রোগীকেই মেঝে চিকিৎসা নিতে দেখা যায়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. সোহাগ মিয়া বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তন ও আর্দ্রতার কারণে ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগে আসা রোগীদের বেশির ভাগই জ্বর, সর্দি-কাশি, ও ডায়রিয়ায় ভুগছেন বলে তিনি জানান।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত