ডা. মোহাম্মদ রিফাত জিয়া হোসেন
কোলোরেক্টাল ক্যানসার (Colorectal Cancer) কোলন বা রেকটামের ক্যানসার নামেও পরিচিত। বিশ্বব্যাপী একটি প্রধান স্বাস্থ্যঝুঁকি। বাংলাদেশে এই রোগের প্রকোপ ক্রমেই বাড়ছে, বিশেষ করে জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং খাদ্যাভ্যাসের কারণে। এই নিবন্ধের উদ্দেশ্য হলো কোলোরেক্টাল ক্যানসার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান, এর প্রতিরোধ ও চিকিৎসার উপায় নিয়ে আলোচনা এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
কোলোরেক্টাল ক্যানসার কী
কোলোরেক্টাল ক্যানসার হলো কোলন বা রেকটামের mucous membrane-এ অস্বাভাবিক কোষের বৃদ্ধি। এটি সাধারণত polyps (অস্বাভাবিক টিস্যু বৃদ্ধি) থেকে শুরু হয়। সময়ের সঙ্গে ক্যানসারে রূপান্তরিত হতে পারে। এই ক্যানসার adenocarcinoma ধরনের হয়ে থাকে। World Health Organization (WHO) এবং International Agency for Research on Cancer (IARC) অনুসারে, কোলোরেক্টাল ক্যানসার বিশ্বে তৃতীয় সর্বাধিক সাধারণ ক্যানসার। বাংলাদেশেও এর প্রকোপ বাড়ছে।
এই ক্যানসারের লক্ষণ
প্রাথমিকপর্যায়ে কোলোরেক্টাল ক্যানসারের লক্ষণ প্রকাশ নাও পেতে পারে। তবে সাধারণ লক্ষণগুলো হলো-
১. মলের সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. পেটে ব্যথা বা অস্বস্তি।
৩. মলত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন। যেমন : ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য। এ ছাড়া অব্যক্ত ওজন হ্রাস পাওয়া।
৪. ক্লান্তি বা দুর্বলতা।
ওপরের লক্ষণগুলো দীর্ঘস্থায়ী হলে অবিলম্বে Colonoscopy বা Fecal Occult Blood Test (FOBT) করানো উচিত।
এর ঝুঁকি বাড়ার কারণ
জিনগত কারণ
পারিবারিক ইতিহাস (Family History of Colorectal Cancer) বা Lynch Syndrome এবং Familial Adenomatous Polyposis (FAP)-এর মতো জিনগত রোগ।
জীবনযাত্রা
অতিরিক্ত Red Meat বা Processed Food গ্রহণ, ধূমপান, অ্যালকোহল সেবন এবং Sedentary Lifestyle।
অন্যান্য অবস্থা
Inflammatory Bowel Disease (IBD), যেমন Ulcerative Colitis বা Crohn’s Disease, এবং Ob chiam।
এ ছাড়া The Lancet Oncology জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং কোলোরেক্টাল ক্যানসারের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে।
যেভাবে প্রতিরোধ করা যেতে পারে
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
ফাইবার-সমৃদ্ধ খাবার যেমন : শাকসবজি, ফল, পূর্ণ শস্য ইত্যাদি গ্রহণ এবং Red Meat বা Processed Food খাওয়া কমানো।
নিয়মিত ব্যায়াম
প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট Moderate-Intensity Exercise করা প্রয়োজন।
নিয়মিত স্ক্রিনিং
৫০ বছর বয়সের পর থেকে নিয়মিত Colonoscopy বা FOBT করানো।
ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহার
American Cancer Society (ACS)-এর নির্দেশিকা অনুসারে, নিয়মিত Screening কোলোরেক্টাল
ক্যানসারের মৃত্যুহার ৩০-৫০% কমাতে পারে।
রোগ নির্ণয়
Colonoscopy : কোলন এবং রেকটামের অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা।
Fecal Occult Blood Test (FOBT) : মলে রক্তের উপস্থিতি পরীক্ষা।
CT Colonography : কোলনের ইমেজিং।
Biopsy : সন্দেহজনক টিস্যু সংগ্রহ ও পরীক্ষা।
পরামর্শ : শুধু Gastroenterologist বা Oncologist-এর পরামর্শে এই পরীক্ষাগুলো করানো উচিত।
চিকিৎসার পদ্ধতি
কোলোরেক্টাল ক্যানসারের চিকিৎসা রোগের পর্যায় (Stage) এবং রোগীর স্বাস্থ্যের ওপর নির্ভর করে।
প্রধান চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো হলো-
Surgery : ক্যানসারযুক্ত অংশ অপসারণ (Colectomy বা Polypectomy)।
Chemotherapy : ক্যানসার কোষ ধ্বংসের জন্য ওষুধ ব্যবহার।
৩. Radiation Therapy : উচ্চশক্তির রশ্মি ব্যবহার, বিশেষ করে Rectal Cancer-এর ক্ষেত্রে।
৪. Targeted Therapy : নির্দিষ্ট ক্যানসার কোষ লক্ষ্য করে ওষুধ প্রয়োগ, যেমন : Monoclonal Antibodies.
কোলোরেক্টাল ক্যানসার একটি প্রতিরোধযোগ্য এবং চিকিৎসাযোগ্য রোগ। যদি প্রাথমিকভাবে শনাক্ত এবং সঠিক ব্যবস্থাপনা করা হয়। তাই ভয় না পেয়ে রোগ শনাক্ত ও সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন। যদিও বাংলাদেশের বিদ্যমান স্বাস্থ্য খাতে বেশ কিছু জায়গায় রয়েছে অবহেলা, অব্যবস্থাপনা ও সংকট! তাই ব্যক্তিসচেতনতা আমাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত তাৎপর্য বহন করে। আসুন আমরা সবাই মিলে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং নিয়মিত স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি করি এবং কোলোরেক্টাল ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করি।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক (অনকোলজিস্ট)
ক্যানসার বিভাগ, পিজি হাসপাতাল
কোলোরেক্টাল ক্যানসার (Colorectal Cancer) কোলন বা রেকটামের ক্যানসার নামেও পরিচিত। বিশ্বব্যাপী একটি প্রধান স্বাস্থ্যঝুঁকি। বাংলাদেশে এই রোগের প্রকোপ ক্রমেই বাড়ছে, বিশেষ করে জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং খাদ্যাভ্যাসের কারণে। এই নিবন্ধের উদ্দেশ্য হলো কোলোরেক্টাল ক্যানসার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান, এর প্রতিরোধ ও চিকিৎসার উপায় নিয়ে আলোচনা এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
কোলোরেক্টাল ক্যানসার কী
কোলোরেক্টাল ক্যানসার হলো কোলন বা রেকটামের mucous membrane-এ অস্বাভাবিক কোষের বৃদ্ধি। এটি সাধারণত polyps (অস্বাভাবিক টিস্যু বৃদ্ধি) থেকে শুরু হয়। সময়ের সঙ্গে ক্যানসারে রূপান্তরিত হতে পারে। এই ক্যানসার adenocarcinoma ধরনের হয়ে থাকে। World Health Organization (WHO) এবং International Agency for Research on Cancer (IARC) অনুসারে, কোলোরেক্টাল ক্যানসার বিশ্বে তৃতীয় সর্বাধিক সাধারণ ক্যানসার। বাংলাদেশেও এর প্রকোপ বাড়ছে।
এই ক্যানসারের লক্ষণ
প্রাথমিকপর্যায়ে কোলোরেক্টাল ক্যানসারের লক্ষণ প্রকাশ নাও পেতে পারে। তবে সাধারণ লক্ষণগুলো হলো-
১. মলের সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. পেটে ব্যথা বা অস্বস্তি।
৩. মলত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন। যেমন : ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য। এ ছাড়া অব্যক্ত ওজন হ্রাস পাওয়া।
৪. ক্লান্তি বা দুর্বলতা।
ওপরের লক্ষণগুলো দীর্ঘস্থায়ী হলে অবিলম্বে Colonoscopy বা Fecal Occult Blood Test (FOBT) করানো উচিত।
এর ঝুঁকি বাড়ার কারণ
জিনগত কারণ
পারিবারিক ইতিহাস (Family History of Colorectal Cancer) বা Lynch Syndrome এবং Familial Adenomatous Polyposis (FAP)-এর মতো জিনগত রোগ।
জীবনযাত্রা
অতিরিক্ত Red Meat বা Processed Food গ্রহণ, ধূমপান, অ্যালকোহল সেবন এবং Sedentary Lifestyle।
অন্যান্য অবস্থা
Inflammatory Bowel Disease (IBD), যেমন Ulcerative Colitis বা Crohn’s Disease, এবং Ob chiam।
এ ছাড়া The Lancet Oncology জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং কোলোরেক্টাল ক্যানসারের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে।
যেভাবে প্রতিরোধ করা যেতে পারে
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
ফাইবার-সমৃদ্ধ খাবার যেমন : শাকসবজি, ফল, পূর্ণ শস্য ইত্যাদি গ্রহণ এবং Red Meat বা Processed Food খাওয়া কমানো।
নিয়মিত ব্যায়াম
প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট Moderate-Intensity Exercise করা প্রয়োজন।
নিয়মিত স্ক্রিনিং
৫০ বছর বয়সের পর থেকে নিয়মিত Colonoscopy বা FOBT করানো।
ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহার
American Cancer Society (ACS)-এর নির্দেশিকা অনুসারে, নিয়মিত Screening কোলোরেক্টাল
ক্যানসারের মৃত্যুহার ৩০-৫০% কমাতে পারে।
রোগ নির্ণয়
Colonoscopy : কোলন এবং রেকটামের অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা।
Fecal Occult Blood Test (FOBT) : মলে রক্তের উপস্থিতি পরীক্ষা।
CT Colonography : কোলনের ইমেজিং।
Biopsy : সন্দেহজনক টিস্যু সংগ্রহ ও পরীক্ষা।
পরামর্শ : শুধু Gastroenterologist বা Oncologist-এর পরামর্শে এই পরীক্ষাগুলো করানো উচিত।
চিকিৎসার পদ্ধতি
কোলোরেক্টাল ক্যানসারের চিকিৎসা রোগের পর্যায় (Stage) এবং রোগীর স্বাস্থ্যের ওপর নির্ভর করে।
প্রধান চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো হলো-
Surgery : ক্যানসারযুক্ত অংশ অপসারণ (Colectomy বা Polypectomy)।
Chemotherapy : ক্যানসার কোষ ধ্বংসের জন্য ওষুধ ব্যবহার।
৩. Radiation Therapy : উচ্চশক্তির রশ্মি ব্যবহার, বিশেষ করে Rectal Cancer-এর ক্ষেত্রে।
৪. Targeted Therapy : নির্দিষ্ট ক্যানসার কোষ লক্ষ্য করে ওষুধ প্রয়োগ, যেমন : Monoclonal Antibodies.
কোলোরেক্টাল ক্যানসার একটি প্রতিরোধযোগ্য এবং চিকিৎসাযোগ্য রোগ। যদি প্রাথমিকভাবে শনাক্ত এবং সঠিক ব্যবস্থাপনা করা হয়। তাই ভয় না পেয়ে রোগ শনাক্ত ও সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন। যদিও বাংলাদেশের বিদ্যমান স্বাস্থ্য খাতে বেশ কিছু জায়গায় রয়েছে অবহেলা, অব্যবস্থাপনা ও সংকট! তাই ব্যক্তিসচেতনতা আমাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত তাৎপর্য বহন করে। আসুন আমরা সবাই মিলে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং নিয়মিত স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি করি এবং কোলোরেক্টাল ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করি।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক (অনকোলজিস্ট)
ক্যানসার বিভাগ, পিজি হাসপাতাল
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন বলেছেন, ছাত্রদল নেতা ও পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসাইন হত্যাকাণ্ডে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে—কেউ যেন আইনের ফাঁক দিয়ে কেউ বেরিয়ে না যায়।
২৩ মিনিট আগেঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াদ হাসানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বোরকা ও পর্দাশীল নারীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে। এই মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থা।
১ ঘণ্টা আগেসমাবেশে জোবায়েদের সহপাঠী সজল খান বলেন, “পুলিশ এখনো বর্ষার পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। শুধু বর্ষা ও মাহির নয়, এই ঘটনায় বর্ষার পরিবারও জড়িত। গতকাল আদালতে আমাদের সঙ্গে পুলিশের আচরণ ছিল অমানবিক। আমাদের এক বান্ধবী ভিডিও করতে গেলে তার ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। আমরা পুলিশের এই আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই।”
১ ঘণ্টা আগেসামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ আইনের মামলায় বুয়েটের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়কে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে জামিনের বিষয়ে অধিকতর শুনানির জন্য আগামীকাল বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন বিচার
২ ঘণ্টা আগে