ডা. মো. আব্দুল হাফিজ শাফী
আমাদের শরীরে ঘাড় বা গলার সামনে নিচের দিকে প্রজাপতি আকৃতির গ্ল্যান্ড বা গ্রন্থির নামই থাইরয়েড। মানুষের বৃদ্ধি, বিকাশ এবং শারীরবৃত্তিক ও বিপাকীয় নানা ক্রিয়া-প্রক্রিয়া সাধন করার জন্য এই গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত থাইরয়েড হরমোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু কোনো কোনো পরিস্থিতিতে থাইরয়েডের সমস্যা এতটাই গুরুতর হয়ে ওঠে যে অপারেশনের প্রয়োজন পড়ে। যখন থাইরয়েড গ্ল্যান্ড ফুলে যায়, তখন গলার সামনে মাঝ বরাবর ঢোক গেলার সঙ্গে গ্ল্যান্ডটিকে ওপর-নিচ ওঠানামা করতে দেখা যায়।
থাইরয়েড গ্রন্থি আকারে বড় হয়ে গলার অগ্রভাগে ফোলাভাব দেখা গেলে একে গলগণ্ড বলে। এর কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো আয়োডিনের অভাব, গ্রেভস ডিজিজ, থাইরয়েডের সংক্রমণ, থাইরয়েডের টিউমার প্রভৃতি। তবে গলগণ্ড থাকার মানেই এই নয়—থাইরয়েড গ্রন্থি খারাপ বা এটি অপারেশন করে কেটে ফেলতে হবে। অনেকেই গলা ফোলা থাকলেই ক্যানসার বা টিউমারের ভয় করেন। সব গলগণ্ডই খারাপ নয়।
গলগণ্ড হলে কী করবেন
গলগণ্ডের লক্ষণ দেখা দিলে নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ সার্জনকে দিয়ে গলা পরীক্ষা করাবেন। প্রয়োজন ও সম্ভাব্য রোগের ধরন অনুযায়ী থাইরয়েড ফাংশন টেস্ট, অর্থাৎ রক্তের টিএসএইচ, ফ্রি-টিফোর, ফ্রি-টিথ্রি হরমোনসহ অন্যান্য পরীক্ষা করাতে হবে। পাশাপাশি থাইরয়েডের আলট্রাসনোগ্রাফি দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। এ ছাড়া শরীরের যে কোনো জায়গায় টিউমারের মতো গলগণ্ডের ক্ষেত্রেও এফএনএসি পরীক্ষা করাতে দেওয়া হয়, যার মাধ্যমে ক্যানসার হয়েছে কি না ধারণা পাওয়া যায়। পুরো কথা হলো, ফাইন নিড্ল অ্যাসপিরেশন সাইটোলজি। অর্থাৎ, কোনো টিউমার থেকে সুচের সাহায্যে রস বের করে পরীক্ষা করা হয়। টিউমারে কোনো ক্যানসার কোষ আছে কি না, তা বোঝার জন্য এফএনএসি টেস্ট করতে হয়।
কখন অপারেশনের প্রয়োজন হয়
রোগীর লক্ষণ, গলগণ্ডের আকার এবং এর কারণের ওপর চিকিৎসার প্রয়োজন ও ধরন নির্ভর করে। আকারে ছোট, চোখে পড়ে না, এমন উপসর্গহীন নিরীহ ধরনের (ক্যানসার নয়) গলগণ্ডের সাধারণত কোনো চিকিৎসার দরকার হয় না। সব গলগণ্ডই বিপজ্জনক নয়, তবে আকার বড় হলে বা উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শে অপারেশন করে নেওয়া উচিত। সাধারণত নিম্নের কারণ বা উপসর্গ পরিলক্ষিত হলে নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ এবং হেড-নেক সার্জনরা বিভিন্ন ধরনের থাইরয়েড সার্জারির পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যেমন—
* অনেক বড় আকারের গলগণ্ড বা থাইরয়েড নডিউল থাকলে গ্ল্যান্ডের পেছনে থাকা শ্বাসনালি, খাদ্যনালি, গলার স্নায়ু বা রক্তনালির ওপর চাপ প্রয়োগ করে। এর ফলে ঘাড়ের সামনে অস্বস্তিকর অনুভূতি হয় এবং মাঝেমধ্যে শ্বাসকষ্ট, খাবার গিলতে অসুবিধা, কণ্ঠস্বর পরিবর্তন বা অন্যান্য সমস্যার সৃষ্টি করে থাকে।
* যদি থাইরয়েড গ্রন্থিতে ক্যানসার ধরা পড়ে, তবে অপারেশনই এর প্রধান চিকিৎসা। ক্যানসারের ধরন ও ব্যাপ্তির ওপর নির্ভর করে আংশিক বা সম্পূর্ণ থাইরয়েড অপসারণের প্রয়োজন হতে পারে।
* থাইরয়েড গ্ল্যান্ড বড় হয়ে (বিনাইন বা নিরীহ টিউমার) যদি আপনার জীবনযাত্রার স্বাভাবিকতাকে ব্যাহত করে।
* যদি রোগী গলগণ্ডকে সৌন্দর্যহানির কারণ বলে মনে করে। বেশি বড় হয়ে দেখতে যদি কুৎসিত বা অসুন্দর লাগে, সেক্ষেত্রে সার্জারির প্রয়োজন হয়।
* রোগী যদি ক্যানসারের ধারণা করে ভীত হয়ে থাকেন, তাহলে চিকিৎসকরা অপারেশনের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
* যখন থাইরয়েড গ্রন্থি অতিরিক্ত হরমোন তৈরি করে (যেমন গ্রেভস রোগ বা টক্সিক নডুলার গলগণ্ড) এবং ওষুধ বা অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতি কার্যকর না হয়, তখন হরমোন লেভেল স্বাভাবিক করে অপারেশন করা একটি বিকল্প হতে পারে।
তাই গলার সামনের দিকে ফোলাভাব দেখা দিলে অথবা গলগণ্ড হয়েছে বলে মনে করলে আতঙ্কিত না হয়ে দ্রুত একজন নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হবেন। অপারেশনের প্রয়োজন হলে আপনার চিকিৎসকের কাছ থেকে অপারেশন সম্পর্কিত সব বিষয় এবং ক্ষেত্রবিশেষে অপারেশন-পরবর্তী করণীয় জেনে নেবেন অবশ্যই। অপারেশনের পর সাধারণত সাত থেকে ১৪ দিনের মধ্যে রোগী স্বাভাবিক কাজে ফিরতে পারবেন।
লেখক : নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ
ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিলেট
আমাদের শরীরে ঘাড় বা গলার সামনে নিচের দিকে প্রজাপতি আকৃতির গ্ল্যান্ড বা গ্রন্থির নামই থাইরয়েড। মানুষের বৃদ্ধি, বিকাশ এবং শারীরবৃত্তিক ও বিপাকীয় নানা ক্রিয়া-প্রক্রিয়া সাধন করার জন্য এই গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত থাইরয়েড হরমোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু কোনো কোনো পরিস্থিতিতে থাইরয়েডের সমস্যা এতটাই গুরুতর হয়ে ওঠে যে অপারেশনের প্রয়োজন পড়ে। যখন থাইরয়েড গ্ল্যান্ড ফুলে যায়, তখন গলার সামনে মাঝ বরাবর ঢোক গেলার সঙ্গে গ্ল্যান্ডটিকে ওপর-নিচ ওঠানামা করতে দেখা যায়।
থাইরয়েড গ্রন্থি আকারে বড় হয়ে গলার অগ্রভাগে ফোলাভাব দেখা গেলে একে গলগণ্ড বলে। এর কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো আয়োডিনের অভাব, গ্রেভস ডিজিজ, থাইরয়েডের সংক্রমণ, থাইরয়েডের টিউমার প্রভৃতি। তবে গলগণ্ড থাকার মানেই এই নয়—থাইরয়েড গ্রন্থি খারাপ বা এটি অপারেশন করে কেটে ফেলতে হবে। অনেকেই গলা ফোলা থাকলেই ক্যানসার বা টিউমারের ভয় করেন। সব গলগণ্ডই খারাপ নয়।
গলগণ্ড হলে কী করবেন
গলগণ্ডের লক্ষণ দেখা দিলে নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ সার্জনকে দিয়ে গলা পরীক্ষা করাবেন। প্রয়োজন ও সম্ভাব্য রোগের ধরন অনুযায়ী থাইরয়েড ফাংশন টেস্ট, অর্থাৎ রক্তের টিএসএইচ, ফ্রি-টিফোর, ফ্রি-টিথ্রি হরমোনসহ অন্যান্য পরীক্ষা করাতে হবে। পাশাপাশি থাইরয়েডের আলট্রাসনোগ্রাফি দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। এ ছাড়া শরীরের যে কোনো জায়গায় টিউমারের মতো গলগণ্ডের ক্ষেত্রেও এফএনএসি পরীক্ষা করাতে দেওয়া হয়, যার মাধ্যমে ক্যানসার হয়েছে কি না ধারণা পাওয়া যায়। পুরো কথা হলো, ফাইন নিড্ল অ্যাসপিরেশন সাইটোলজি। অর্থাৎ, কোনো টিউমার থেকে সুচের সাহায্যে রস বের করে পরীক্ষা করা হয়। টিউমারে কোনো ক্যানসার কোষ আছে কি না, তা বোঝার জন্য এফএনএসি টেস্ট করতে হয়।
কখন অপারেশনের প্রয়োজন হয়
রোগীর লক্ষণ, গলগণ্ডের আকার এবং এর কারণের ওপর চিকিৎসার প্রয়োজন ও ধরন নির্ভর করে। আকারে ছোট, চোখে পড়ে না, এমন উপসর্গহীন নিরীহ ধরনের (ক্যানসার নয়) গলগণ্ডের সাধারণত কোনো চিকিৎসার দরকার হয় না। সব গলগণ্ডই বিপজ্জনক নয়, তবে আকার বড় হলে বা উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শে অপারেশন করে নেওয়া উচিত। সাধারণত নিম্নের কারণ বা উপসর্গ পরিলক্ষিত হলে নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ এবং হেড-নেক সার্জনরা বিভিন্ন ধরনের থাইরয়েড সার্জারির পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যেমন—
* অনেক বড় আকারের গলগণ্ড বা থাইরয়েড নডিউল থাকলে গ্ল্যান্ডের পেছনে থাকা শ্বাসনালি, খাদ্যনালি, গলার স্নায়ু বা রক্তনালির ওপর চাপ প্রয়োগ করে। এর ফলে ঘাড়ের সামনে অস্বস্তিকর অনুভূতি হয় এবং মাঝেমধ্যে শ্বাসকষ্ট, খাবার গিলতে অসুবিধা, কণ্ঠস্বর পরিবর্তন বা অন্যান্য সমস্যার সৃষ্টি করে থাকে।
* যদি থাইরয়েড গ্রন্থিতে ক্যানসার ধরা পড়ে, তবে অপারেশনই এর প্রধান চিকিৎসা। ক্যানসারের ধরন ও ব্যাপ্তির ওপর নির্ভর করে আংশিক বা সম্পূর্ণ থাইরয়েড অপসারণের প্রয়োজন হতে পারে।
* থাইরয়েড গ্ল্যান্ড বড় হয়ে (বিনাইন বা নিরীহ টিউমার) যদি আপনার জীবনযাত্রার স্বাভাবিকতাকে ব্যাহত করে।
* যদি রোগী গলগণ্ডকে সৌন্দর্যহানির কারণ বলে মনে করে। বেশি বড় হয়ে দেখতে যদি কুৎসিত বা অসুন্দর লাগে, সেক্ষেত্রে সার্জারির প্রয়োজন হয়।
* রোগী যদি ক্যানসারের ধারণা করে ভীত হয়ে থাকেন, তাহলে চিকিৎসকরা অপারেশনের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
* যখন থাইরয়েড গ্রন্থি অতিরিক্ত হরমোন তৈরি করে (যেমন গ্রেভস রোগ বা টক্সিক নডুলার গলগণ্ড) এবং ওষুধ বা অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতি কার্যকর না হয়, তখন হরমোন লেভেল স্বাভাবিক করে অপারেশন করা একটি বিকল্প হতে পারে।
তাই গলার সামনের দিকে ফোলাভাব দেখা দিলে অথবা গলগণ্ড হয়েছে বলে মনে করলে আতঙ্কিত না হয়ে দ্রুত একজন নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হবেন। অপারেশনের প্রয়োজন হলে আপনার চিকিৎসকের কাছ থেকে অপারেশন সম্পর্কিত সব বিষয় এবং ক্ষেত্রবিশেষে অপারেশন-পরবর্তী করণীয় জেনে নেবেন অবশ্যই। অপারেশনের পর সাধারণত সাত থেকে ১৪ দিনের মধ্যে রোগী স্বাভাবিক কাজে ফিরতে পারবেন।
লেখক : নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ
ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিলেট
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন বলেছেন, ছাত্রদল নেতা ও পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসাইন হত্যাকাণ্ডে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে—কেউ যেন আইনের ফাঁক দিয়ে কেউ বেরিয়ে না যায়।
২৭ মিনিট আগেঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াদ হাসানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বোরকা ও পর্দাশীল নারীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে। এই মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থা।
১ ঘণ্টা আগেসমাবেশে জোবায়েদের সহপাঠী সজল খান বলেন, “পুলিশ এখনো বর্ষার পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। শুধু বর্ষা ও মাহির নয়, এই ঘটনায় বর্ষার পরিবারও জড়িত। গতকাল আদালতে আমাদের সঙ্গে পুলিশের আচরণ ছিল অমানবিক। আমাদের এক বান্ধবী ভিডিও করতে গেলে তার ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। আমরা পুলিশের এই আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই।”
১ ঘণ্টা আগেসামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ আইনের মামলায় বুয়েটের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়কে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে জামিনের বিষয়ে অধিকতর শুনানির জন্য আগামীকাল বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন বিচার
২ ঘণ্টা আগে