স্মরণ
মাহবুবা নার্গিস
মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত ঊনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি ও নাট্যকার। বাংলা ভাষায় সনেট ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক। ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ তার শ্রেষ্ঠ কীর্তি এবং আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অমর মহাকাব্য।
৯টি সর্গে বিভক্ত মেঘনাদবধ কাব্য প্রাচীন সংস্কৃত মহাকাব্য রামায়ণ অবলম্বনে রচিত। এ কাব্য রচনার সময় তিনি সনেট ও অমিত্রাক্ষর ছন্দ তৈরি করেন। তার কাব্যের বিষয় প্রধানত সংস্কৃত কাব্য থেকে সংগৃহীত। পাশ্চাত্য সাহিত্যের আদর্শানুগত সমকালীন ইংরেজি শিক্ষিত বাঙালির উপযোগী করে রূপায়িত। তিনিই প্রথম পাশ্চাত্য সাহিত্যের ভাবাদর্শ বাংলা সাহিত্যে সার্থকভাবে প্রয়োগ করেন। উনিশ শতকে বাংলা সাহিত্যের শৈলীগত ও বিষয়ভাবনাগত যে আড়ষ্টতা ছিল, মধুসূদন অসাধারণ প্রতিভাগুণে তা দূরীভূত করেন।
মধুসূদন দত্ত ছিলেন বহু ভাষাবিদ। বাংলা ছাড়াও কয়েকটি ভাষায় পারদর্শী ছিলেন। শৈশবে গ্রামের টোল থেকে শেখেন ফারসি। এ ছাড়া ইংরেজি, লাতিন, গ্রিক, ফারসি, হিব্রু, তেলেগু, তামিল ইত্যাদি জানতেন।
যৌবনে খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করে তিনি ‘মাইকেল মধুসূদন দত্ত’ নাম গ্রহণ করেন। পাশ্চাত্য সাহিত্যের দুর্নিবার আকর্ষণে তিনি মনোনিবেশ করেন ইংরেজি সাহিত্য রচনায়। মাতৃভাষা বাংলার প্রতি মনোযোগী হন জীবনের দ্বিতীয় পর্বে । এ পর্বে তিনি বাংলায় মহাকাব্য, চতুর্দশপদী কবিতা, নাটক ও প্রহসন ইত্যাদি রচনা করেন।
তার রচিত প্রথম নাটক ‘শর্মিষ্ঠা’। ১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে নাটকটি বেলগাছিয়া নাট্যশালায় অভিনীত হয়। এটিই প্রকৃত অর্থে বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম মৌলিক নাটক। ১৮৬০ সালে তিনি রচনা করেন দুটি প্রহসন- ‘একেই কি বলে সভ্যতা’ ও ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’। গ্রিক পুরাণের কাহিনি অবলম্বনে রচনা করেন পদ্মাবতী নাটক। এ নাটকেই তিনি প্রথম অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করেন।
‘মেঘনাদবধ কাব্য’ ছাড়াও তিনি রচনা করেন ‘তিলোত্তমাসম্ভব’ কাব্য, ‘ব্রজাঙ্গনা’ কাব্য, ‘বীরাঙ্গনা’ কাব্য ‘চতুর্দশপদী কবিতা’ ইত্যাদি। ১৮৭১ সালের শেষভাগে মহাকবি হোমারের ‘ইলিয়ড’ মহাকাব্য অবলম্বনে রচনা করেন ‘হেকটরবধ’।
মধুকবির জন্ম ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি যশোরের কপোতাক্ষ নদ-তীরবর্তী সাগরদাঁড়ি গ্রামে। পিতা রাজনারায়ণ দত্ত, মা জাহ্নবী দেবী। তার পিতা ছিলেন কলকাতার প্রতিষ্ঠিত উকিল।
রেবেকা ম্যাকটিভিস নামে এক ইংরেজ যুবতীকে বিয়ে করেছিলেন মধুসূদন। রেবেকার গর্ভে দুই পুত্র ও দুই কন্যার জন্ম হয়। কিন্তু দাম্পত্যজীবনের আট বছরে বিচ্ছেদ হয় তাদের। অল্পকাল পরে এমিলিয়া সোফিয়া নামে এক ফরাসি তরুণীকে বিয়ে করেন কবি। সোফিয়া ছিলেন মধুসূদনের সারাজীবনের সঙ্গিনী।
মহাকবির শেষজীবন কেটেছে অত্যন্ত দুঃখ-দারিদ্র্যে । ঋণের দায়, অর্থাভাব, চিকিৎসাহীনতা ইত্যাদি কারণে জীবন হয়ে উঠেছিল দুর্বিষহ। স্ত্রীর মৃত্যুর তিন দিন পর ১৮৭৩ সালের ২৯ জুন বাংলার মধুকবি কপর্দকহীন অবস্থায় কলকাতার জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
কলকাতার সার্কুলার রোডে তাকে সমাধিস্থ করা হয়। জীবনের অন্তিম পর্যায়ে জন্মভূমির প্রতি গভীর ভালোবাসার চিহ্ন রেখে গেছেন অবিস্মরণীয় পঙ্ক্তিমালায়। তার সমাধিস্থলে লেখা আছে নিচের কবিতাটি-
‘দাঁড়াও পথিকবর, জন্ম যদি তব
বঙ্গে! তিষ্ঠ ক্ষণকাল! এ সমাধিস্থলে
(জননীর কোলে শিশু লভয়ে যেমতি
বিরাম) মহীর পদে মহা নিদ্রাবৃত
দত্তকুলোদ্ভব কবি শ্রী মধুসূদন!
যশোরে সাগরদাঁড়ি কপোতাক্ষ-তীরে
জন্মভূমি, জন্মদাতা দত্ত মহামতি
রাজনারায়ণ নামে, জননী জাহ্নবী’
মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত ঊনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি ও নাট্যকার। বাংলা ভাষায় সনেট ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক। ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ তার শ্রেষ্ঠ কীর্তি এবং আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অমর মহাকাব্য।
৯টি সর্গে বিভক্ত মেঘনাদবধ কাব্য প্রাচীন সংস্কৃত মহাকাব্য রামায়ণ অবলম্বনে রচিত। এ কাব্য রচনার সময় তিনি সনেট ও অমিত্রাক্ষর ছন্দ তৈরি করেন। তার কাব্যের বিষয় প্রধানত সংস্কৃত কাব্য থেকে সংগৃহীত। পাশ্চাত্য সাহিত্যের আদর্শানুগত সমকালীন ইংরেজি শিক্ষিত বাঙালির উপযোগী করে রূপায়িত। তিনিই প্রথম পাশ্চাত্য সাহিত্যের ভাবাদর্শ বাংলা সাহিত্যে সার্থকভাবে প্রয়োগ করেন। উনিশ শতকে বাংলা সাহিত্যের শৈলীগত ও বিষয়ভাবনাগত যে আড়ষ্টতা ছিল, মধুসূদন অসাধারণ প্রতিভাগুণে তা দূরীভূত করেন।
মধুসূদন দত্ত ছিলেন বহু ভাষাবিদ। বাংলা ছাড়াও কয়েকটি ভাষায় পারদর্শী ছিলেন। শৈশবে গ্রামের টোল থেকে শেখেন ফারসি। এ ছাড়া ইংরেজি, লাতিন, গ্রিক, ফারসি, হিব্রু, তেলেগু, তামিল ইত্যাদি জানতেন।
যৌবনে খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করে তিনি ‘মাইকেল মধুসূদন দত্ত’ নাম গ্রহণ করেন। পাশ্চাত্য সাহিত্যের দুর্নিবার আকর্ষণে তিনি মনোনিবেশ করেন ইংরেজি সাহিত্য রচনায়। মাতৃভাষা বাংলার প্রতি মনোযোগী হন জীবনের দ্বিতীয় পর্বে । এ পর্বে তিনি বাংলায় মহাকাব্য, চতুর্দশপদী কবিতা, নাটক ও প্রহসন ইত্যাদি রচনা করেন।
তার রচিত প্রথম নাটক ‘শর্মিষ্ঠা’। ১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে নাটকটি বেলগাছিয়া নাট্যশালায় অভিনীত হয়। এটিই প্রকৃত অর্থে বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম মৌলিক নাটক। ১৮৬০ সালে তিনি রচনা করেন দুটি প্রহসন- ‘একেই কি বলে সভ্যতা’ ও ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’। গ্রিক পুরাণের কাহিনি অবলম্বনে রচনা করেন পদ্মাবতী নাটক। এ নাটকেই তিনি প্রথম অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করেন।
‘মেঘনাদবধ কাব্য’ ছাড়াও তিনি রচনা করেন ‘তিলোত্তমাসম্ভব’ কাব্য, ‘ব্রজাঙ্গনা’ কাব্য, ‘বীরাঙ্গনা’ কাব্য ‘চতুর্দশপদী কবিতা’ ইত্যাদি। ১৮৭১ সালের শেষভাগে মহাকবি হোমারের ‘ইলিয়ড’ মহাকাব্য অবলম্বনে রচনা করেন ‘হেকটরবধ’।
মধুকবির জন্ম ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি যশোরের কপোতাক্ষ নদ-তীরবর্তী সাগরদাঁড়ি গ্রামে। পিতা রাজনারায়ণ দত্ত, মা জাহ্নবী দেবী। তার পিতা ছিলেন কলকাতার প্রতিষ্ঠিত উকিল।
রেবেকা ম্যাকটিভিস নামে এক ইংরেজ যুবতীকে বিয়ে করেছিলেন মধুসূদন। রেবেকার গর্ভে দুই পুত্র ও দুই কন্যার জন্ম হয়। কিন্তু দাম্পত্যজীবনের আট বছরে বিচ্ছেদ হয় তাদের। অল্পকাল পরে এমিলিয়া সোফিয়া নামে এক ফরাসি তরুণীকে বিয়ে করেন কবি। সোফিয়া ছিলেন মধুসূদনের সারাজীবনের সঙ্গিনী।
মহাকবির শেষজীবন কেটেছে অত্যন্ত দুঃখ-দারিদ্র্যে । ঋণের দায়, অর্থাভাব, চিকিৎসাহীনতা ইত্যাদি কারণে জীবন হয়ে উঠেছিল দুর্বিষহ। স্ত্রীর মৃত্যুর তিন দিন পর ১৮৭৩ সালের ২৯ জুন বাংলার মধুকবি কপর্দকহীন অবস্থায় কলকাতার জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
কলকাতার সার্কুলার রোডে তাকে সমাধিস্থ করা হয়। জীবনের অন্তিম পর্যায়ে জন্মভূমির প্রতি গভীর ভালোবাসার চিহ্ন রেখে গেছেন অবিস্মরণীয় পঙ্ক্তিমালায়। তার সমাধিস্থলে লেখা আছে নিচের কবিতাটি-
‘দাঁড়াও পথিকবর, জন্ম যদি তব
বঙ্গে! তিষ্ঠ ক্ষণকাল! এ সমাধিস্থলে
(জননীর কোলে শিশু লভয়ে যেমতি
বিরাম) মহীর পদে মহা নিদ্রাবৃত
দত্তকুলোদ্ভব কবি শ্রী মধুসূদন!
যশোরে সাগরদাঁড়ি কপোতাক্ষ-তীরে
জন্মভূমি, জন্মদাতা দত্ত মহামতি
রাজনারায়ণ নামে, জননী জাহ্নবী’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন বলেছেন, ছাত্রদল নেতা ও পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসাইন হত্যাকাণ্ডে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে—কেউ যেন আইনের ফাঁক দিয়ে কেউ বেরিয়ে না যায়।
২৭ মিনিট আগেঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াদ হাসানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বোরকা ও পর্দাশীল নারীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে। এই মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থা।
১ ঘণ্টা আগেসমাবেশে জোবায়েদের সহপাঠী সজল খান বলেন, “পুলিশ এখনো বর্ষার পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। শুধু বর্ষা ও মাহির নয়, এই ঘটনায় বর্ষার পরিবারও জড়িত। গতকাল আদালতে আমাদের সঙ্গে পুলিশের আচরণ ছিল অমানবিক। আমাদের এক বান্ধবী ভিডিও করতে গেলে তার ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। আমরা পুলিশের এই আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই।”
১ ঘণ্টা আগেসামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ আইনের মামলায় বুয়েটের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়কে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে জামিনের বিষয়ে অধিকতর শুনানির জন্য আগামীকাল বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন বিচার
২ ঘণ্টা আগে