কবিতা মঞ্চ থেকে দেয়ালে গেছে জুলাই আন্দোলনে : সলিমুল্লাহ খান

ঢাবি সংবাদদাতা
প্রকাশ : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১: ৫৫
আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২: ০৯

বিশিষ্ট চিন্তক ও গবেষক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, কবিতা হলো পুরোনো পরিচিত কথার নব রূপায়ন ও নব নির্মাণ। আমাদের কবিরা অতীতেও অনেক কবিতা লিখেছেন, এর দীর্ঘ ইতিহাস আছে। তবে সম্প্রতি জুলাই আন্দোলনে আমাদের কবিতা মঞ্চ থেকে দেয়ালে চলে গেছে।

বিজ্ঞাপন

রোববার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হাকিম চত্বরে জাতীয় কবিতা পরিষদের আয়োজনে জাতীয় কবিতা উৎসব ২০২৫-এর শেষ দিনে ‘স্বাধীনতা, সাম্য ও সম্প্রীতি: বাংলাদেশের কবিতা’ শীর্ষক এক সেমিনারে মূল আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, লেখক মঞ্জুরুর রহমান ও কুদরতে খোদা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সোহরাব হাসান।

বক্তব্য প্রদানকালে সলিমুল্লাহ খান বলেন, কবিতাকে একইসাথে নতুন ও চিরস্মরণীয় হতে হবে। জুলাই আন্দোলন প্রমাণ করেছে, যে মানুষই কথা বলে, যে একটি শব্দ ও বাক্য গঠন করে সে-ই কবি। এসময় সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার তাৎপর্য তুলে ধরে তিনি বলেন, সকলে সমান না হলে আমরা 'এক' হবো না। '২৪-এর আন্দোলনের মূল বৈশিষ্ট্যই ছিলো বৈষম্য বিরোধী। এটি সাম্য কথাটির অনুবাদ। কিন্তু, দুটি কথা এক নয়।

জাতীয় কবিতা পরিষদের বিষয়ে এসময় তিনি বলেন, কবিতা পরিষদ যদিও মৃত সংগঠন, এটির স্লোগানটা বেশ জীবিত হয়ে উঠেছে। পুরোনো জিনিস মাঝে মধ্যে জীবিত হয়ে উঠে। কাজী নজরুলের কবিতা যেমন জীবিত হয়ে উঠেছে দেয়ালের মধ্যে।

কবিদের লক্ষ্য হলো কবিতাকে স্লোগানে পরিণত করা এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, সব কবিতার লক্ষ্য হলো স্লোগানে পরিণত হওয়া। সব কবি তাদের কবিতাকে স্লোগানে পরিণত করতে চায়। সবাই একটা বিখ্যাত লাইন লিখতে চায়। যেমন, 'এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়' কবিতার লাইনটি স্লোগানে পরিণত হয়েছে।

প্রতিবাদের ভাষার মধ্যেও কবিতা লুকিয়ে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের স্লোগান ছিল -'উন্নয়ন না গণতন্ত্র'। তারা বলেছিল গণতন্ত্র নয়, উন্নয়ন। এটিকে তারা বিকল্পে পরিণত করেছিল। তারা বলেছিল, শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। ছেলে মেয়েরা জবাব দিয়েছে বিকল্প কে? আমি, তুমি ও আমরা। এই 'আমি, তুমি ও আমরা' নতুন একটি কবিতা হয়ে উঠেছে। যদি 'সেন্স' থাকে তাহলে বুঝতে পারবো, কবিতাটা কোথায়। একটা জবাবের মধ্যে কবিতা রচিত হয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, গোটা দক্ষিণ বিশ্বে তুলনামূলকভাবে বাংলা ভাষা অনেক উন্নত ৷ আমাদের কবিরা যদি অসাধারণ, 'ক্ল্যাসিক' ও কালজয়ী কিছু লেখেন, তবে কেউ কেউ সেখানে উত্তীর্ণ হতে পারেন। সেটা আমাদের ভাষা ও জাতির জন্য অসাধারণ কৃতিত্বের কাজ হবে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত